নারায়ণগঞ্জে কোর্ট হাজতে মোহাম্মদ জালাল মিয়া (৬৫) নামে জামিনপ্রাপ্ত এক আসামির মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন পাওয়ার পরপরই এ ঘটনা ঘটে।
মৃত জালাল মিয়া নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার গোপালদী পৌরসভার রামচন্দ্রী এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশের দাবি, আসামি জালাল মিয়া একটি সিআর মামলা জামিন পাওয়ার পরে কোর্ট হাজতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
জালাল মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ নয়ন অভিযোগ করে বলেন, আমাদের পাশের বাড়ির প্রভাবশালী তাঁত ব্যবসায়ী হাজী ওমর আলী জমিজমা নিয়ে বাবার নামে একটি প্রতারণা মামলা করেন। গত ২৯ মার্চ সেই মামলার হাজিরা ছিলো। তবে বাবাকে ওমর আলী বাসা থেকে বের হলে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়াতে বাবা সেদিন হাজিরা দিতে কোর্টে আসেননি। তাই সেদিন রাতেই আমার বাবার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা বের হলে আড়াইহাজার থানার এসআই আবু তাহের বাবাকে বাসা থেকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার বাবাকে কোর্টে আনা হয়। যে মামলায় বাবাকে কোর্টে আনা হয়েছে সেটাতে বাবার জামিনও হয়েছে। কিন্তু বাবা আর বাসায় আমাদের সঙ্গে যেতে পারবে না। কারণ জামিনের পর তিনি কোর্ট হাজতেই মারা যান।
নয়ন বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টায় বাবাকে কোর্টে আনা হয়। কিন্তু তখনো কোর্ট বসেনি। তাই বিকেলে কোর্টের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত থেকে আমরা জামিন পাই। বাবা তখনো কোর্ট হাজতে। এ সময় এক পুলিশ এসে বলে আপনার বাবা অসুস্থ। তখন আমরা গিয়ে দেখি বাবা অজ্ঞানের মতো হয়ে আছে। কিন্তু তখন আমরা দ্রুত বাবাকে হাজত থেকে বের করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা পুলিশকে বললেও কোর্ট পুলিশ সেখানে দেরি করেছে। তাই আমার বাবা কোর্ট হাজতেই মারা যান। পরে আমরা যখন বাবাকে খানপুর হাসপাতালে আনি তখন ডাক্তার বলেছেন হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
জানতে চাইলে কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, কোর্টে সেই আসামির মৃত্যু হয়নি। সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে যান। পরে হাসপাতালে নিলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
তবে খানপুর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অমিত চন্দ্র বলেন, রোগীকে হাসপাতালের আনার আগেই তিনি মারা যান। এর বেশি কিছু বলতে পারছি না।
আড়াইহাজার থানার ওসি ইমদাদুল ইসলাম বলেন, তিনি সিআর মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছিলেন। তাই ৩০ মার্চ সকালে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। সেখানে তিনি জামিন পেয়েছেন এবং জামিন নামা জমা দেওয়ার পর তিনি অসুস্থ হয়ে যান। পরে তার ছেলে তাকে হাসপাতালে নিলে সেখানে তিনি মারা যান।