আকস্মিক জ্বালানি তেলের উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে উৎপাদক দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস। এতে করে বিশ্ব অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কা আরও তীব্র হলো। পাশাপাশি ওপেক প্লাসের এই ঘোষণা ওয়াশিংটনের তীব্র বিরক্তির উৎপাদন করেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ ও বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ওপেক প্লাস রোববার (২ এপ্রিল) নতুন করে উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। নতুন ঘোষণা অনুসারে আগের চেয়ে প্রতিদিন ১১ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল কম জ্বালানি তেল উৎপাদন করা হবে।
ওপেক প্লাসের ঘোষণার পরপরই বিশ্ব বাজারে ব্রেন্টের দাম ব্যারেল প্রতি ৬ ডলার বেড়ে ৮৫ দশমিক ৫৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ক্রডের দাম ৫ দশমিক ২২ ডলার বেড়ে ৮০ দশমিক ৮৯ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
রোববার সৌদি আরব এবং রাশিয়াসহ জোটের অন্যান্য দেশগুলোর মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পর উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়। ধারণ করা হচ্ছিল বৈঠকে প্রতিদিন ২০ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল কম উৎপাদন করা হবে। তবে সেটি না করে প্রতিদিন ১১ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়। এই অবস্থা চলবে ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ।
ওপেক প্লাসের এই ঘোষণার ফলে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০ ডলার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিনিয়োগ ফার্ম পিকারিং এনার্জি পার্টনারস। একই সঙ্গে গোল্ডম্যান স্যাকস ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, ব্রেন্টের দাম চলতি বছরে ব্যারেল প্রতি ৯৪ ডলার হবে এবং ২০২৪ সালে তা ১০০ ডলারে দাঁড়াবে।
এদিকে ওপেক প্লাসের এ আকস্মিক ঘোষণার পরপরই বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কা আরও বেড়ে গেল। বিশেষ করে এশিয়ার দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্র এই ঘোষণার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে। এ বিষয়ে বাজার বিশেষজ্ঞ ড্যানিয়েল হেইনস বলেছেন, ‘এই উদ্যোগ বাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটি বড় অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে।’
সিঙ্গাপুরভিত্তিক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান বান্দা ইনসাইটসের প্রধান বন্দনা হরি বলেন, ‘ওপেক প্লাসের এ উদ্যোগ চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিশ্ব বাজারকে ঘাটতির মুখে ঠেলে দেবে। অথচ আগে, এ প্রান্তিকে উদ্বৃত্ত থাকার কথা ছিল।’ বন্দনা হরি এ সময় নতুন করে মন্দার আশঙ্কার কথাও ব্যক্ত করেন।