প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্পর্ক গড়ে তোলার পর বিয়ে না করায় প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন প্রেমিকা। দ্রুত সময়ে বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করবেন বলেও হুমকি দেন তিনি। এদিকে প্রেমিকার অবস্থানের খবর পেয়ে প্রেমিক এবং তার পরিবারের লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব লোকেরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত প্রেমিক একই গ্রামের শাহ আলম তালুকদারের ছেলে মাহবুব তালুকদার।
জানা যায়, প্রায় সাত বছর আগে ঘাটাইল উপজেলার আনেহলা ইউনিয়নের এক তরুণীর সঙ্গে মাহবুব তালুকদারের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক থাকায় একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও হয়। এরই মধ্যে ঐ তরুণী প্রেমিক মাহাবুবকে বহুবার তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। এতে মাহাবুব কোনোভাবেই রাজি না হওয়ায় বিয়ের দাবিতে গত মঙ্গলবার সকাল থেকে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন ভুক্তভোগী তরুণী।
প্রেমিক মাহবুবের বাড়িতে গিয়ে উঠলে তার পরিবারের লোকজন রাতে প্রচণ্ড ঝড় বৃষ্টির মধ্যে ঐ তরুণীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। বর্তমানে মেয়েটি লোকেরপাড়া ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বারের বাড়িতে রয়েছেন।
ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, আমার সঙ্গে মাহবুবের প্রায় সাত বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক। দুনিয়াতে আমার আপন বলতে কেউ নেই। ছোট বেলায় বাবা মারা যাওয়ার পর অনেক দুঃখ কষ্টে বড় হয়েছি। মা মানুষের বাড়িতে কাজ করে আমাকে পড়ালেখা করিয়েছেন। আমার এখন কি উপায় হবে। আমাকে কে বিয়ে করবে।
তিনি আরো বলেন, মাহবুবের চাচার কাছে কয়েকবার আমাদের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কের বিষয়টি জানিয়েছি। একইসঙ্গে তাকে বিয়ের কথা বলেছি। কিন্তু তাতে তিনি কর্ণপাত করেননি। বিয়ের প্রস্তাব গ্রহণ না করায় বিয়ের দাবিতে বাধ্য হয়ে অবস্থান করছি।
এ বিষয়ে সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার কহিনুর বেগম বলেন, আমি এ বিষয়ে অবগত ছিলাম না। ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিলন এবং স্থানীয় মসজিদের ইমাম আব্দুল বারী সাহেবের সুপারিশে মেয়েটিকে আমার হেফাজতে রেখেছি।
লোকেরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহিদুল হক মিলন বলেন, বিষয়টি গতকাল (মঙ্গলবার) শুনেছি। শুনার পর স্থানীয় ইউপি সদস্য (২নং ওয়ার্ড) মিলন মেম্বারের মাধ্যমে সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার কহিনুর বেগমকে সঙ্গে নিয়ে বিষয়টি সমাধান করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছিলাম। তারা সমাধান করার চেষ্টা করেছেন। পরে তারা ব্যর্থ হয়ে আমাকে জানিয়েছেন- ছেলের (প্রেমিক) পক্ষ থেকে সমাধান করার বিষয়ে আগ্রহী নয়। আমি বিষয়টি ঘাটাইল থানা ওসিকে অবগত করেছি। মেয়ের পক্ষের লোকজন আমার কাছে এসেছিলেন। তাদেরকে থানায় অভিযোগ দিতে বলেছি।