নিজস্ব প্রতিবেদক:
গরমে অসুস্থতার জন্য দুদকের কাছে অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য না দিয়ে সময়ের আবেদন করেছেন বাংলা টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ সামাদুল হক। তার পাশাপাশি ওই টিভির পরিচালক রিফাতুজ্জামান, শান্তনু ও মনিরুল ইসলামও একই কায়দা অনুসরণ করেছেন। তাদের একজনের স্ত্রী, একজনের মা এবং একজনের বাবা অসুস্থ তাই দুদকে হাজির না হয়ে সময়ের আবেদন করেছেন।
একযোগে বাংলা টিভির চারজনের অভিনব কায়দায় সময়ের আবেদন দেখে বিস্মিত দুদকও। সংস্থার একজন পদস্থ কর্মকর্তা এইদিন এইসময়কে বলেন, মানুষের অযুহাত থাকতে পারে। সেজন্য চারজনই কারো না কারো অসুস্থতার অযুহাত দেখিয়ে হাজির না হওয়াটা রহস্যময়। তিনি বলেন, অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা অত্যন্ত দায়িত্বশীল। তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বেশ কয়েকদিন। ৭ জুন তিনি বাংলা টিভির এমডিসহ পাঁচজনের বক্তব্য নেওয়ার জন্য আগেই নোটিশ করেছিলেন।সে অনুযায়ী অনুসন্ধানকারী দায়িত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে অফিস করেন।
তিনি বলেন, আমরা তাদের সময়ের আবেদনগুলো দেখেছি। হাস্যকর কথাবার্তাও আছে তাতে। তেমন বাংলা টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ সামাদুল হক বলেছেন, তিনি গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই দুই মাস সময় দরকার।
পরিচালক মীর নূর উস শামস শান্তনুর মা গ্রামের বাড়িতে অসুস্থ। তার সেবা করতে তিনি বাড়ি যাবেন। তাই দুদকে হাজির না হয়ে দুই মাসের সময় চেয়েছেন।
পরিচালক মনিরুল ইসলাম তিন মাসের সময় চেয়ে বলেছেন, তার স্ত্রী অসুস্থ। সে কারণে দুদকে হাজির হতে পারেননি। তিনিও তিন মাসের সময় চেয়েছেন।আরেক পরিচালক কেএম রিফাতুজ্জামান বলেছেন তার বাবা কেএম আক্তারুজ্জামান সিঙ্গাপুরে চোখ দেখাতে গিয়েছেন। তাই তিনি দুদকে হাজির হতে পারছেন না। তিন মাসের সময় দরকার।
দুদকের ওই সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, এরা যে একজোট এবং সিন্ডিকেট করে সময়ের আবেদন করেছেন তা স্পষ্ট হয়েছে।
মূলত, বাংলা টিভিকে এরা নিজেদের অবৈধ সম্পদ রক্ষার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে সব কিছু বেরিয়ে আসবে তাই তারা তালবাহানা করছেন।
জানা যায়,অর্থ পাচার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বাংলা টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ সামাদুল হকসহ প্রতিষ্ঠানটির অপর চার পরিচালককে গত সপ্তাহে তলব করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) । গত রোববার দুদকের পক্ষে এ সংক্রান্ত নোটিশ জারি করা হয়। দুদকের উপ পরিচালক সেলিনা আখতার মনি স্বাক্ষরিত নোটিশে উল্লেখ করা হয়, বাংলা টিভির শেয়ার হস্তান্তরের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাত ও অর্থ পাচারের সুষ্ঠূ অনুসন্ধান ও তদন্তের স্বার্থে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ সামাদুল হক, চেয়ারম্যান কে এম আখতারুজ্জামান, পরিচালক মীর নুর উস শামস শান্তনু ও কে এম রিফাতুজ্জামানের বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা প্রয়োজন। এজন্য তাদের ৭ জুন, দুদকের প্রধান কাযালয়ে হাজির হতে বলা হয়।
আজ ( ৭ জুন) তাদের কেউই দুদকের তলবে হাজির না হয়ে সময়ের আবেদন করেন। তাদের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগও রয়েছে। এনবিআর সূত্রে জানা যায়, তাদের মোটা অংকের কর ফাঁকি ও মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ চলছে ।