প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০২৬ সালের মধ্যে চূড়ান্তভাবে এলডিসি থেকে উত্তরণের মাধ্যমে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার জন্য বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকা প্রয়োজন। আমরা যদি আবার ক্ষমতায় না আসি তাহলে কে তা বাস্তবায়ন করতে পারবে? আওয়ামী লীগ ছাড়া এমন কেউ নেই, যারা দেশের জন্য স্বার্থহীন কাজ করবে।
রোববার জাতীয় সংসদে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশবাসী আওয়ামী লীগকে বারবার ভোট দিয়ে ক্ষমতায় নিয়ে এসেছে বলে আওয়ামী লীগ দেশের সেবা করতে পেরেছে, বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে এসেছে। আওয়ামী লীগ দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সক্ষম হয়েছে। আজ বেকারত্বের হার মাত্র ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ কখনো পিছিয়ে থাকবে না, বরং অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাঙালি জাতি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। জাতির পিতা আমাদের এই দেশ দিয়েছেন। এখন আমাদের লক্ষ্য দেশকে সমৃদ্ধ করা। আজ আমরা অনেক দূর এগিয়েছি এবং এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কারো ওপর নির্ভরশীল হতে চাই না, আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে চাই। আওয়ামী লীগের লক্ষ্য দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা এবং বিজয়ী জাতি হিসেবে এগিয়ে যাওয়া। এ কারণেই আমরা শত প্রতিবন্ধকতা-সমালোচনা অতিক্রম করে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি। কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না হলে বাংলাদেশ উন্নয়নের যাত্রায় আরো এগিয়ে যেতে পারতো।
সরকার প্রধান বলেন, অনেকেই বাজেট নিয়ে সমালোচনা করেছেন। তারা দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ বাজেটকে উচ্চাভিলাষী বা বাস্তবায়নের অযোগ্য বলে অভিহিত করেছেন। তাদের এই নেতিবাচক মনোভাব দেশের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। এই সমালোচকরা কখনো দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাননি, সেখানকার উন্নয়ন দেখেননি। শহর-গ্রামে দারিদ্র্য অনেক কমেছে, জনগণের মাঝে অতীতের মতো স্থায়ী কোনো দুর্ভোগ নেই। গত সাড়ে ১৪ বছর ধরে দেশে স্থিতিশীলতা বজায় থাকায় জনগণ ব্যাপক অগ্রগতি দেখতে পেরেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে কঠিন সময়ের মধ্যেও সরকার রেকর্ড ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট দিতে সক্ষম হয়েছে। সরকার প্রতি বছর বাজেট ঘাটতি ৫ থেকে সাড়ে ৫ শতাংশের মধ্যে রাখে। এবারও ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যেই রাখা হয়েছে। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। বাজেটে সাড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করাও সম্ভব।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই সার্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করা যাবে। এছাড়া জরুরি সময়ে সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতনের ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা হিসেবে প্রদান করবো।
এ সময় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং রাষ্ট্রীয় নানা খাতে সরকারের সাফল্য বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।