প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে কর্মস্থল ছাড়তে শুরু করেছে রাজধানীবাসী। সুবিধা অনুযায়ী বাস-ট্রেন-লঞ্চে যে যার গন্তব্যে যাচ্ছে। তবে কোথাও বাড়তি চাপ নেই। রেলস্টেশনে স্বস্তি রয়েছে, বাসে যাত্রীর চাপ ছিল স্বাভাবিক। লঞ্চেও এখনো ভিড় বাড়েনি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদে ঘরে ফেরার মূল চাপ শুরু হবে সোমবার থেকে। এ দিনই বেশিরভাগ অফিসের শেষ কর্মদিবস। মঙ্গলবার থেকে ঈদের ছুটি শুরু হবে। তাই বিকেল থেকেই ঢাকা ফাঁকা হতে শুরু করবে।
ট্রেনের যাত্রা স্বস্তির হচ্ছে
সব আসনের টিকিট অনলাইনে বিক্রি এবং স্টেশনগুলোর প্রবেশমুখে বিনা টিকিটে ঢুকতে না পারার কড়াকড়ির কারণে ট্রেনে টিকিট ছাড়া যাত্রীর চাপ এখনো তৈরি হয়নি। বেশির ভাগ ট্রেনই নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে। গতকাল আন্তনগর, লোকাল ও দুটি ঈদ স্পেশাল মিলে ৫৪ জোড়া ট্রেন কমলাপুর থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে।
গতকাল ঈদ যাত্রার দ্বিতীয় দিনে ৫০ হাজার মানুষ ট্রেনযোগে ঢাকা ছেড়েছে। এবারও ঈদ যাত্রায় আসনবিহীন বা স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি হচ্ছে মোট আসনের ২৫ শতাংশ। ঢাকা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, বিমানবন্দর ও জয়দেবপুর স্টেশন থেকে এসব টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। তবে যাত্রার দিন আসনবিহীন টিকিট স্টেশনের কাউন্টার থেকে কেনা যাবে। এবার ঈদযাত্রায় ঢাকা থেকে আন্তনগর ট্রেনে প্রতিদিন প্রায় ২৯ হাজার আসনের টিকিট বিক্রি হয়েছে।
কমলাপুর রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ সারওয়ার বলেন, যাত্রীরা যেন নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদ যাত্রা করতে পারে, এটাই আমাদের লক্ষ্য। সেজন্য তিন স্তরের চেকিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিনা টিকিটে কেউ স্টেশনে ঢুকতে পারছে না। সব ট্রেন সময়মতো ছেড়ে যাচ্ছে।
বাসে যাত্রীর চাপ স্বাভাবিক
ঢাকার গাবতলী, মহাখালী, ফুলবাড়িয়া ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে যাত্রীর আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে বাসে উপচে পড়া যাত্রীর ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি। বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের অধীন চলা বাসগুলোর গত ১৩ জুন থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছে। তবে টিকিটের সবচেয়ে বেশি চাহিদা মঙ্গলবার রাতের
বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শুভংকর ঘোষ রাকেশ বলেন, বাসে যাত্রীর চাপ এখনো স্বাভাবিক। তাই বলে যাত্রী কম সেটিও বলা যাবে না। সোমবার থেকে যাত্রীর চাপ বাড়বে।
ভিড় নেই লঞ্চে
ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন সদরঘাট থেকে দেশের ৪১টি নৌপথের ১৮০টি ছোট-বড় লঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তবে গত ঈদের মতো এবারের ঈদেও লঞ্চের পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক। ঈদ এলে সদরঘাটে যাত্রীর ভিড়ের যে চেনা ছবি, সেটি এখনো হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মঙ্গলবার থেকে লঞ্চে যাত্রী পাওয়া যাবে।
লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান জানান, ৫০-৬০টি লঞ্চ ঘাটে নিয়মিত থাকছে। আশানুরূপ যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। আগে কেবিন দিতে না পেরে মোবাইল বন্ধ রাখতে হতো। আর এবার এখন পর্যন্ত ২০ শতাংশ কেবিনও বুক হয়নি। মঙ্গলবার থেকে সদরঘাটে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীর চাপ বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি।