পুরো ক্রিকেটবিশ্বকে চমকে দিয়ে হুট করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন তামিম ইকবাল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ চলমান থাকাবস্থায় বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সংবাদ সম্মেলন ডেকে অবসরের সিদ্ধান্তের কথা জানান বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম এই নক্ষত্র।
হুট করেই তামিমের অবসরে বিস্মিত হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। বিশ্বকাপের মাত্র তিন মাস আগে তারকা এই ক্রিকেটারের বিদায়কে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে অভিহিত করেছে খোদ ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। তামিমের বিদায়টা মানতে পারছেন না তার সাবেক-বর্তমান সতীর্থরাও।
বর্তমান সতীর্থদের মধ্যে অনেকেই আক্ষেপ নিয়ে তামিমকে বিদায় জানিয়েছেন। মাশরাফী, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহরা জানিয়েছেন ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য শুভকামনার বার্তা। প্রায় সবাই তামিমকে বিদায়ী বার্তা জানিয়েছেন অবসরের দিনেই। ব্যতিক্রমী শুধু একজন, তিনি সাকিব আল হাসান।
অবসরের দিন দলের অন্য সবাই যখন তামিমের বিদায়ে বেশ শোকার্ত, তখন তার দীর্ঘদিনের সতীর্থ এবং বন্ধু সাকিব ছিলেন একেবারেই নিশ্চুপ। তামিমের আকস্মিক বিদায়ে সাকিবের অবদান নিয়ে কিছুটা গুঞ্জন তো ছিলই। টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের এমন আচরণ সে গুঞ্জনে কিছুটা ঘি-ও ঢেলেছে। তবে সেসবকে পাশে ফেলে অবশেষে তামিমের বিদায়ের এক দিন পর সদ্য সাবেক সতীর্থকে বিদায়ী বার্তা দিয়েছেন সাকিব।
নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তামিমের সঙ্গে ছবি আপলোড করে সতীর্থকে বিদায় জানিয়েছেন সাকিব। সঙ্গে জানিয়েছেন ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য শুভকামনাও। তামিমের অসংখ্য অর্জনের জন্য সতীর্থ হিসেবে কতটা গর্বিত তিনি, সেটাও পোস্টে উল্লেখ করেছেন সাকিব।
২০০৩ সালে অনূর্ধ্ব-১৫ জাতীয় দল থেকে তামিম-সাকিবের বন্ধুত্ব। এরপর প্রায় ২০ বছর ধরে একসঙ্গেই খেলেছেন তারা। মাঝে বিভিন্ন সময় তাদের সম্পর্কে ওঠাপড়ার সংবাদ এলেও মাঠের ক্রিকেটে তার আঁচ পাওয়া যায়নি একটুও। এসব স্মৃতিচারণা এবং পরস্পরের বন্ধুত্বের কথাও বিদায়ী বার্তায় টেনে এনেছেন সাকিব।
ফেসবুক পোস্টে সাকিব লিখেছেন, ‘২০০৩ সালে অনূর্ধ্ব-১৫ জাতীয় দলের হয়ে আমাদের একসঙ্গে প্রথম পথচলা এবং গত ২০ বছর ধরে আমরা আমাদের স্বপ্ন এবং লক্ষ্যগুলো ভাগ করে নিয়ে একটি দৃঢ় বন্ধন এবং বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছি। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা অনেক ত্যাগস্বীকার করেছি। এই পথে তোমার আবেগ এবং আগ্রাসন আরও অনেককে অনুপ্রাণিত করতে সহায়তা করেছে।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘তোমার রান এবং রেকর্ডগুলোই তোমার হয়ে কথা বলছে। একজন খেলোয়াড় হিসেবে তুমি যা কিছু অর্জন করেছ তার জন্য সতীর্থ হিসেবে আমি অত্যন্ত গর্বিত। একসঙ্গে মাঠে না নামাটা খুবই অদ্ভুত লাগবে। কিন্তু যখন আমরা প্রতিটি লড়াইয়ে পা রাখব তোমার আগুন নিজের ভেতরে নিয়ে। নতুন জীবনে ছক্কা হাঁকাতে থাকো এবং প্রিয়জনের সঙ্গে নতুন মুহূর্তগুলি উপভোগ করে যাও।’