নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আগামী সেপ্টেম্বরে চালু হচ্ছে দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (উড়াল সড়ক) কাওলা – বনানী – ফার্মগেইট অংশ।গত শনিবার হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন কাওলা এলাকায় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করতে এসে এমনটি জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এসময় তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্রী শেখ হাসিনা আগামী সেপ্টেম্বরে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এয়ারপোর্ট – বনানী – ফার্মগেইট অংশ উদ্বোধন করবেন। রাজধানীর যানজট কমাতে বর্তমান সরকার বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ সব প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম একটি প্রকল্প হচ্ছে নগরের এক নতুন দিগন্ত রেখা স্বপ্নের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে।
এ প্রকল্পের অবস্থান হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর -কুড়িল-বনানী-মহাখালী- ফার্মগেইট-তেজগাঁও মগবাজার -কমলাপুর -সায়দাবাদ – যাত্রাবাড়ী-ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়ক( কুতুবখালী)।
নতুন উদ্যোমে শুরু হওয়া বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম অংশে রয়েছে ৭ (সাত) কিলোমিটার এবং ফার্মগেট পর্যন্ত রয়েছে ৬.৫০ কিলোমিটার উড়াল সড়ক।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পি পি পি প্রকল্পের পরিচালক এ এইচ এম শাখাওয়াত আকতার বলেন এ প্রকল্পের প্রথম অংশের কাজ ৯৭.৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে দ্বিতীয় ধাপের ফার্মগেইট পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন হবে।
উত্তরায় বসবাসরত স্থানীয়রা জানান, ঢাকা বিমানবন্দর থেকে বনানী ও ফার্মগেইট পর্যন্ত এ প্রকল্প চালু হলে এ সড়কে যানজট অনেকাংশে কমে যাবে এবং ভ্রমনে মানুষের মূল্যবান সময় ও বাঁচবে।
এ প্রকল্পের প্রথম ধাপের বনানী স্টেশন পর্যন্ত টোল প্লাজা, ল্যাম্পপোস্ট ও অন্যান্য আনুশংগিক কাজ প্রায় শেষ।
প্রকল্প পরিচালক আরো বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পি পি পি প্রকল্পের প্রথমধাপ হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা হতে কুড়িল হয়ে বনানী রেল স্টেশন পর্যন্ত ৯৭.৫০ শতাংশ কাজ শেষ।
এ প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপ মহাখালী -তেজগাঁও মগবাজার ও ফার্মগেট অংশের কাজ চলমান রয়েছে।
বিমানবন্দর এলাকার স্থানীয় একাধিক পরিবহন চালক জানান, কোন ধরনের ট্রাফিক সিগনাল ছাড়াই দ্রুতগতিতে চলা উড়াল সড়কের যানবাহন নির্বিঘ্নে চলাচলের কারণে বদলে যাবে যানজট মুক্ত ঢাকা ময়মনসিংহ বিমানবন্দর ও উত্তরা মডেল টাউন মহাসড়কের দৃশ্যপট।
এ বিষয়ে উত্তরা ট্রাফিক বিভাগের ডিসি নাবিদ কামাল শৈবাল বলেন, হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর- কুড়িল হয়ে বনানী প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা বিমানবন্দর মহাসড়কের যানজট কমে যাবে। জনদূর্ভোগ কমবে, এ ছাড়াও হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগত হাজার হাজার লোকসহ যাত্রীদের ভ্রমণ আরামদায়ক হবে। সময় বাঁচবে এবং খরচ ও হ্রাস পাবে।
জানা যায়, ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কম্পানী চায়না শন্দন ইন্টারন্যাশনাল, সিনো হাইড্রো কর্পোরেশন এ প্রকল্পে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। কর্তৃপক্ষ জানান,টোলপ্লাজা স্থাপন করে তারা তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ আদায় করবেন।
১লা জানুয়ারি ২০২০ এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে এবং এটি ৩০ জুন ২০২৪ সালে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। রাজধানীর যানজট নিরসনে সরকার কর্তৃক গৃহীত সবচেয়ে বড় প্রকল্প – ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। ঢাকা শহরের উত্তর দক্ষিণ অংশের সংযোগ উড়ালসড়ক এটির দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। এ প্রকল্পে উঠা নামার জন্য মোট ২৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ৩১ টি র্যাম্প রয়েছে। র্যাম্প এবং উড়ালসড়কের সংযোগ সড়কসহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে মোট দৈর্ঘ্য হবে ৪৬.৭৩ কিলোমিটার এবং ব্যায় হবে ১২২ বিলিয়ন টাকা।
সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
গত শবিবার ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন কাওলা এলাকায় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ পরিদর্শনের সময় ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কম্পানী চায়না শন্দন ইন্টারন্যাশনাল এবং সিনো হাইড্রো কর্পোরেশন লিমিটেডের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।