নিজস্ব প্রতিবেদকঃ যুবলীগের সাবেক নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি বাতিল চাওয়া দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের আবেদনের শুনানি আগামী ১ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট।
আবেদনটিতে এক দফা শুনানির পর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রবিবার এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। সম্রাটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলার আসামি সম্রাট চিকিৎসা করাতে আদালতের অনুমতি নিয়ে গত ১৫ জুলাই ভারতে গেছেন। আগামী ২৫ জুলাই তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে বলে উচ্চ আদালতকে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে আবেদনটি অকার্যকর হয়ে পড়েছে কি না জানতে চাইলে দুদকের আইনজীবী বলেন, ‘না, আবেদনটি অকার্যকর হবে না। কারণ আমরা পর্যবেক্ষণ চাইব।
আদালতকে এটা বলেছি। আদালত আবেদনটি স্ট্যান্ডওভার রেখেছেন। দেখা যাক কী হয়।’
গত ১ জুন এ মামলায় ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম।
আদালত পাসপোর্টটিও তার জিম্মায় দেন। তবে আদালত শর্ত দেন, পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার পর চিকিৎসার জন্য সম্রাট এক মাস বিদেশে অবস্থান করতে পারবেন। তিনি তার পাসপোর্ট সর্বোচ্চ দুই মাস নিজের জিম্মায় রাখতে পারবেন। পরে তাকে তার পাসপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে।
এই আদেশ বাতিল চেয়ে সম্প্রতি উচ্চ আদালতে আবেদন করে দুদক; যা আজ শুনানিতে ওঠে।
গত বছরের ২২ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান এ মামলায় সম্রাটকে জামিন দেন। জামিনের ক্ষেত্রে সম্রাটকে কয়েকটি শর্ত দেওয়া হয়। শর্তের মধ্যে ছিল- তার পাসপোর্ট আদালতে জমা রাখতে হবে; আদালতের অনুমতি ছাড়া বিদেশে যেতে পারবেন না। এরপর জামিনে কারামুক্ত হয়ে গত বছরের ২৬ আগস্ট দুপুরে হাসপাতাল ছাড়েন ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট।
দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের নামে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
অভিযোগপত্রে তার বিরুদ্ধে ২২২ কোটি ৮৮ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৩ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া অভিযোগপত্রে ২১৯ কোটি ৪৮ লাখ ৫৮ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগও আনে দুদক। অভিযোগপত্রে বলা হয়, এ টাকা তিনি পাচার করেছেন। গত বছরের ২২ মার্চ অভিযোগপত্র আমলে নেন আদালত।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাট ও তার সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তখন র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, গ্রেপ্তারের সময় সম্রাট ও আরমান মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। তাদের কাছে বিদেশি মদ ছিল। এ কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।
গ্রেপ্তারের পর সম্রাট ও আরমানকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আনা হয়। পরে সম্রাটকে নিয়ে তার কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালায় র্যাব। সেখানে বন্য প্রাণীর চামড়া, মাদক ও অস্ত্র পাওয়ার কথা বলা হয়। বন্য প্রাণীর চামড়া রাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালত সম্রাটকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।