ক্রীড়া ডেস্কঃ নোভাক জোকোভিচের শট বাইরে যেতেই সেন্টার কোর্টের ঘাসের পিচে শুয়ে পড়লেন কার্লোস আলকারাজ। দুই হাত দিয়ে ঢেকে রাখলেন নিজের মুখ। এ যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না তাঁর! তবে মুহূর্তেই উঠে দাঁড়ালেন। অপর প্রান্ত থেকে এগিয়ে এসে ২০ বছর বয়সী আলকারাজকে প্রথমবার উইম্বলডন জয়ের জন্য অভিনন্দন জানাতে ভুললেন না ২৩ গ্র্যান্ড স্লাম জেতা জোকোভিচ।
চার ঘণ্টা ৪২ মিনিটের স্নায়ুযুদ্ধের লড়াই জিতে আলকারাজ ছুটে গেলেন গ্যালারিতে। দর্শকদের অভিবাদনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে কোচিং স্টাফ ও পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আনন্দে মাতলেন। নোভাক জোকোভিচকে ১-৬, ৭-৬ (৮-৬), ৬-১, ৩-৬, ৬-৪ গেমে হারিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছেন আলকারাজ। গত বছর ইউএস ওপেন জিতে প্রথম গ্র্যান্ড স্লামের স্বাদ পেয়েছিলেন স্প্যানিশ এই তারকা।
আর ৩৪ ম্যাচ পর সেন্টার কোর্টে হারের স্বাদ পেলেন জোকোভিচ। সর্বশেষ ২০১৩ সালের ফাইনালে অ্যান্ডি মারের কাছে হেরেছিলেন ৩৬ বছর বয়সী সার্বিয়ান এই তারকা। আলকারাজের কাছে এই হারে আটবার উইম্বলডন জেতা রজার ফেদেরারের রেকর্ডে ভাগ বসানো হলো না তাঁর। সেই সঙ্গে ছোঁয়া হলো না সর্বোচ্চ ২৪ গ্র্যান্ড স্লামের কীর্তি গড়া মার্গারেট কোর্টকে।
তবে ফাইনালের শুরুটা দুর্দান্ত করেছিলেন জোকোভিচ। প্রথম সেটে আলকারাজকে স্রেফ উড়িয়ে দেন তিনি। জেতেন ৬-১ গেমে। কে-ই বা জানত এমন অবিশ্বাস্য শুরুর পরও শিরোপা হাতছাড়া হয়ে যাবে! কিন্তু দ্বিতীয় সেটেই প্রবল বিক্রমে ঘুরে দাঁড়ালেন আলকারাজ। কেন তাঁকে রাফায়েল নাদালের উত্তরসূরি বলা হয় তার প্রমাণ রাখেন এই সেটে।
৮৫ মিনিট ধরে চলা এই সেট নিষ্পত্তি হয় টাইব্রেকারে। শেষ পর্যন্ত ৭-৬ গেমে জিতে ফাইনাল জমিয়ে তোলেন তিনি। তৃতীয় সেটে তারুণ্যের ঝাঁজ দেখান ২০ বছর বয়সী এই স্প্যানিশ। ৬-১ গেমে জিতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। তবে চতুর্থ সেটে আবারও জোকোভিচের আধিপত্য। ঘাসের কোর্টে এই সার্বিয়ান কতটা বিধ্বংসী সেই রূপ দেখালেন আরেকবার। সার্ভ, রিটার্ন, ভলিতে আলকারাজকে তেমন লড়াই করতে দিলেন না। ৬-৩ গেমে জিতে ম্যাচ নিয়ে যান পঞ্চম সেটে। কিন্তু সেখানে আর পারলেন না জোকোভিচ। এক পর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে র্যাকেটও ভাঙলেন। আর অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও জয়ের ক্ষুধার প্রতিফলন দেখিয়ে পঞ্চম সেট জিতে আলকারাজ জানান দিলেন, টেনিসের ভবিষ্যৎ রাজা হতেই এসেছেন তিনি।