আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের ওপর নানা ধরণের চাপ প্রয়োগ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এই বাড়তি চাপ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারে আর চীন এই সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করবে বলে মনে করে ভারত। এমন উদ্বেগের কথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অবগত করেছে দেশটি।
সোমবার (২৮ আগস্ট) হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনকে নিয়ে দেশটির ওপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে বাংলাদেশে কট্টরপন্থীরা আরও শক্তিশালী হতে পারে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করছে ভারত।
নয়াদিল্লি বিশ্বাস করে ,অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ইস্যুতে মার্কিন চাপ বাংলাদেশকে চীনের কাছাকাছি নিয়ে যাবে যা আঞ্চলিক রাজনীতিকে প্রভাবিত করবে।
যদিও ভারত স্পষ্ট করে বলেছে, তারাও বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। কিন্তু মার্কিন প্রশাসনের এ বিষয়ে খুব বেশি চাপ উগ্রবাদ ও মৌলবাদী শক্তিকে উৎসাহিত করবে বলে ধারণা ভারতের।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও এর কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ২০২৩ সালের মে মাসে বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছে।
এই অবস্থার মধ্যে গত ২৩ আগস্ট জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৈঠকে শেখ হাসিনাকে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেছেন, নির্বাচনে বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরোধিতায় বাংলাদেশকে সমর্থন করে চীন। এছাড়াও একে অপরকে সমর্থনের জন্য ঢাকার সঙ্গে কাজ করবে বেইজিং।
এছাড়াও চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রিডআউটে শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধার ওপর নির্ভরশীল এবং দুটি দেশই একে অন্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপকে সমর্থন করে না।’
আর শি জিনপিংয়ের এই বক্তব্য ভারতের উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে। নয়াদিল্লি মনে করছে, শির এই বক্তব্য প্রমাণ করছে, শেখ হাসিনা সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের লাগাতার চাপ প্রয়োগের নীতির কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে চীন।
এছাড়া ভারত বিশ্বাস করে, জামায়াতে ইসলামী শক্তিশালী হলে উগ্রপন্থী শক্তি উৎসাহিত হবে। আর এর প্রভাব বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর ওপরও পড়বে।