প্রেমিকা নিয়ে পালিয়ে সুখের সংসার করতে চেয়েছিলেন ১৯ বছরের তরুণ লাজিম। সে কারণে টাকার জন্য মামাতো বোন ফাতেহা আক্তারকে (৭) অপহরণ করেন তিনি। কিন্তু মুক্তিপণ না পেয়ে তাকে হত্যার পর মরদেহ ডোবায় ফেলে দেন। শিশু ফাতেহাকে হত্যা করে মামার বুক খালি করেন লাজিম।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট স্বাগত সোম্যের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মো. লাজিম ও তার সহযোগী আলাউদ্দিন (২১) এসব কথা জানিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃত মো. লাজিম বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দরিয়াদৌলত গ্রামের রাজ্জাক মিয়ার ছেলে ও আলাউদ্দিন শুঁটকি কান্দি গ্রামের মমিন মিয়ার ছেলে।
এর আগে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর উপজেলার দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের শুঁটকি কান্দি গ্রামের প্রবাসী বাছেদ মিয়ার মেয়ে ফাতেহা আক্তার নিখোঁজ হয়। পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য জায়গায় খোঁজ করেও তার সন্ধান পাচ্ছিলেন না। এরইমধ্যে শিশুটির পরিবারে মোবাইলে কল দিয়ে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। তবে পরিবার মুক্তিপণ না দিয়ে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় জানায়।
প্রযুক্তির সহায়তায় নিখোঁজ ফাতেহার ফুফাতো ভাই লাজিম ও তার সহযোগী আলাউদ্দিনকে পুলিশ আটক করে। তাদের দু’জনের মোবাইলে শিশুটিকে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবি সংক্রান্ত চ্যাটিং পাওয়া যায়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে শিশুটিকে হত্যার পর ডোবার পানিতে লুকিয়ে রাখার কথা জানান। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাদের দেখানো ডোবা থেকে শিশু ফাতেহার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ওসি মো. নূরে আলম বলেন, শিশু ফাতেহাকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় তার মা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। গ্রেফতার হওয়া ফাতেহার ফুফাতো ভাই ও তার সহযোগী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আদালতে স্বীকারোক্তিতে লাজিম জানান, তার সঙ্গে একজনের প্রেমের সম্পর্ক আছে। বিষয়টি নিয়ে টানাপড়েন চলছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি প্রেমিকাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। এজন্য তার টাকার প্রয়োজন ছিল। তাই তিনি এবং আলাউদ্দিন মামাতো বোন ফাতেহাকে অপহরণ করেন। অপহরণের পর ফাতেহার পরিবারের কাছে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। সেই টাকায় লাজিম তার প্রেমিকা নিয়ে পালিয়ে দোকান দিয়ে সুখে-শান্তিতে সংসার করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সেই টাকা পাওয়া যাবে না বুঝতে পেরে শিশু ফাতেহাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন লাজিম ও তার সহযোগী আলাউদ্দিন। পরে ফাতেহার মরদেহ একটি ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়।