মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৭ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি আরও বাড়াতে হবে: দয়াল কুমার বড়ুয়া

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৬২ বার পঠিত

বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সম্পদ ও প্রযুক্তিতে এখনো একটি পিছিয়ে পড়া দেশ। গত অর্ধশতাব্দীতে হতদরিদ্র অবস্থা থেকে বাংলাদেশ মধ্যআয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। এ উত্থান গর্বের হলেও স্বীকার করতে হবে উন্নত দেশগুলোর চেয়ে আমরা এখনো ঢের পিছিয়ে। তারপরও উন্নত দেশগুলোতে যেখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপুলসংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ঘটছে, সেখানে বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো, বন্যা, জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে একসময় লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটলেও এখন ক্ষয়ক্ষতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।
দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে দ্রুত ত্রাণ পৌঁছে দিতে ৬৪ জেলায় ৬৬টি ত্রাণ গুদাম নির্মাণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে দুর্গত এলাকার মানুষকে উদ্ধার করতে ৬০টি মাল্টিপারপাস রেসকিউ বোট তৈরি করা হয়েছে। এ বোটগুলোয় প্রতিবন্ধীরাও সহজে উঠতে পারবে। প্রতি বছর দুর্যোগে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা দুর্যোগ সহনশীল দেশে পরিণত হতে এগিয়ে যাচ্ছি। ভূমিকম্প ও বজ্রপাত ছাড়া অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা ভালো অবস্থানে পৌঁছেছি। ভূমিকম্প ও বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। ভূমিকম্পে ক্ষতি কমাতে গত বছর বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) বাস্তবায়ন করেছে। এ কোড মেনেই নির্মাণ করতে হবে ভবন। কোড মেনে ভবন নির্মাণ হলে সেটা ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প সহনশীল হবে। একই সঙ্গে সব ভবন পরীক্ষা করা হবে। দুর্বল অবকাঠামো নিয়ে যেসব ভবন নির্মাণ হয়ে গেছে, সেগুলোকে রেট্রোফিটিং করে ভূমিকম্প সহনশীল করা হবে। ভূমিকম্পের ক্ষতি কমাতে জাপানের মতো অবকাঠামো নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাসের মতো দুর্যোগ মোকাবিলায় ইতোমধ্যে যে অগ্রগতি ঘটেছে তা স্বস্তিদায়ক। ভূমিকম্প ও বজ্রপাতের মতো দুর্র্যোগ মোকাবিলায়ও একই ধরনের সক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে। যা এখন করণীয় কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশ দুর্যোগপ্রবণ দেশ। এক্ষেত্রে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা থাকলেও ভূমিকম্প মোকাবিলায় সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। রাজধানী ঢাকায় বড় কোনো ভূমিকম্প আঘাত হানলে প্রাণহানিসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তাই ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগ মোকাবিলায় আরও কার্যকর ও বিজ্ঞানভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রয়োজন।

ভৌগোলিক বিবেচনায় বাংলাদেশের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনসহ অন্যান্য কারণে চ্যালেঞ্জ বাড়ছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ ঝুঁকিতে আছে। শহরের মানুষের জন্যও রয়েছে ঝুঁকি। কারণ দুর্যোগের মধ্যে ভূমিকম্পের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। ভূমিকম্পের ঝুঁকি কমাতে অবশ্যই বিল্ডিং কোড অনুসরণ করা দরকার। বিল্ডিং কোড অনুসরণ করে অবকাঠামো তৈরি করা হলে এটি শুধু মানুষের জীবনই রক্ষা করবে না, বাংলাদেশের অর্থনীতিকেও সুরক্ষা দেবে। ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম নগরীও অধিকতর ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, দুর্যোগ মোকাবিলার অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আগামী দিনে কীভাবে সফলতার সঙ্গে ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগ মোকাবিলা করা যায়, সে বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশে বিভিন্ন দুর্যোগ আসছে, সরকারও নিরলসভাবে কাজ করছে। বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সামগ্রিক দুর্যোগ মোকাবিলার বিষয়ে কতটুকু গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা বিবেচনার বিশেষ দাবি রাখে। পাশাপাশি দুর্যোগঝুঁকি মোকাবিলায় আমরা কীভাবে এখানে বিমার ধারণাকে ব্যবহার করতে পারি, তা ভেবে দেখা দরকার। বর্তমানে বাংলাদেশে ৮১টি বিমা কোম্পানি রয়েছে। আমরা যদি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিমা কোম্পানিকে সম্পৃক্ত করতে পারি, তাহলে অবশ্যই ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব। আমার পরামর্শ হলো সরকারের সহায়তার জন্য আমাদের বিমা খাতকে ব্যবহার করতে হবে। এটি দুর্যোগ-পরবর্তী কার্যক্রমে আমাদের অনেক সহায়তা করবে। দুর্যোগে আমাদের বিশালসংখ্যক লোকজনের ভোগান্তি হয়। এই ভোগান্তি কমাতে বিমা খাতের গুরুত্ব বিশাল। এতে দুর্যোগ মোকাবিলার পাশাপাশি বিমা খাতেরও বিকাশ হবে। তাদের ব্যবসায়িক কাজে সহায়তা করবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com