রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে আলোচিত সন্ত্রাসী হামলা মামলায় হাইকোর্টে ৭ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন এবং আপিলের ওপর রায় আজ সোমবার।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে মামলাটির শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ওঠে। এরপর গত ৩, ১৫, ১৭ ও ১৮ মে কয়েক দফায় মামলার শুনানি হয়। পরে বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য ঐ বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন প্রধান বিচারপতি।
এ মামলার রায় সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, হলি আর্টিজানে হামলা মামলায় দীর্ঘ শুনানি হয়েছে। আশা করি, আসামিদের বিচারিক আদালত যে রায় দিয়েছেন তা বহাল থাকবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির (আত্মঘাতী) সদস্যরা। তাদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় ৫ জঙ্গি।
ঐ ঘটনায় গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত হয়ে শুরু হয় বিচার। মামলার ৮ আসামির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করা হয়। টানা ১ বছর মামলার বিচার শেষে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালত তার রায়ে ৭ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং একজনকে খালাস দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- হামলার মূল সমন্বয়ক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র্যাশ, ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামি মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানকে খালাস দেওয়া হয়।
বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ডাদেশ রায়ের পর নিয়ম অনুসারে ২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স ও খালাস চেয়ে করা আসামিদের জেল আপিল শুনানির জন্য মামলার নথিপত্র বিচারিক আদালত থেকে হাইকোর্টে পাঠানো হয়। বিচারিক আদালতের এসব নথির মধ্যে মামলার এজাহার, জব্দতালিকা, চার্জশিট, সাক্ষীদের সাক্ষ্য ও রায়সহ ২ হাজার ৩০৭ পৃষ্ঠার নথিপত্র হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় জমা করা হয়।
এরপর বিচারিক আদালত থেকে আসা মামলাটির সব নথি একত্র করে আপিল শুনানির জন্য উত্থাপনের জন্য পেপারবুক তৈরি শেষে মামলাটি শুনানিতে ওঠে।