প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগ ও আন্দোলনের ফলেই রাষ্ট্রভাষা বাংলা পেয়েছি। জীবন জীবিকার প্রয়োজনে মানুষকে অনেক ভাষা শিখতে হয়। কিন্তু মাতৃভাষাকে লালন ও চর্চা করা একটি জাতির মূল কর্তব্য।
বুধবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
সঠিক ইতিহাস জানার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল। পঁচাত্তরের পর এমন সময় এসেছিল, আমরা যে বিজয়ী জাতি তাই ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, মাতৃভাষায় শিক্ষা নিতে পারলে তা অনেক সহজ হয়। কর্মক্ষেত্রের প্রয়োজনে অনেক ভাষা শেখা দরকার। শিক্ষার মাধ্যমটা মাতৃভাষায় হওয়া উচিত, তার সঙ্গে শিশুদের আরও দু-তিনটি ভাষা শেখানোর দরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, কিছু মানুষ হঠাৎ টাকা-পয়সার মালিক হয়ে গেছেন। তারা মনে করেন ছেলেমেয়েরা ইংরেজিতে কথা বললেই দক্ষ ও স্মার্ট হওয়া যায়। ৬ হাজার বিদেশি শব্দ রয়েছে, যেটা সহজে গ্রহণ করা যায়। কিন্তু স্মার্ট হতে হলে শুধুমাত্র একটা ভাষা শিখতে হবে এবং সে ভাষায় কথা বলতে হবে আমি সেটা বিশ্বাস করি না। নিজের ভাষা শিখে অন্যের ভাষাও শেখা যায়।
সরকার প্রধান বলেন, স্মার্ট হতে গেলে ইংরেজিতেই কথা বলতে হবে তা নয়। আমি একমাত্র বাংলা ভাষাটাই ভালো জানি। ইংরেজি তেমন ভালো পারি না। শুধু খেয়াল রাখি অন্যরা আমার ভাষা বুঝতে পারে কি না।
এর আগে, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মুজিব শতবর্ষ ভাষা জাদুঘর ও ভাষা লিখনরীতি আর্কাইভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রকাশিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি দেশের৬টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষায় ভাষান্তরের প্রকাশনা ও বহুভাষী পকেট অভিধানের মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি। একই অনুষ্ঠানে চলতি বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভাষা অলিম্পিয়াডের বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মহাপরিচালক প্রফেসর ড. হাকিম আরিফ প্রমুখ।