ক্রীড়া ডেস্কঃ সিরিজটাকে বাংলাদেশ নিয়েছিল বিশ্বকাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে। কিন্তু প্রতিপক্ষ যুক্তরাষ্ট্র অপেক্ষায় ছিল চমক দেখানোর। মার্কিন মুলুকে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর আগে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়টি পেয়েছে স্বাগতিকরা। হিউস্টনে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে তারা। র্যাঙ্কিংয়ে ১০ ধাপ পিছিয়ে থাকা দলটির খেলোয়াড়দের এমন জয়ের উদযাপন অবশ্য ছিল সাদামাটা।
বাংলাদেশের দেয়া ১৫৪ রানের লক্ষ্য ৩ বল আগেই তাড়া করে জেতে য্ক্তুরাষ্ট্র। হারমিত সিংহের ১৩ বলে ৩৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস আর কোরি অ্যান্ডারসনের দায়িত্বশীল ২৫ বলে ৩৪ রানের ইনিংসে জয় পায় বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ।
শেষ ওভারে ৯ রানের দরকার ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। সাকিব আল হাসান, রিশাদ হোসেনের ওভার থাকলেও বোলিংয়ে আনা হয় অকেশনাল স্পিনার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। প্রথম ৩ বল থেকেই তুলে নেন প্রয়োজনীয় রান। প্রথম বলে ছয় হাঁকান অ্যান্ডারসন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট প্রথম দেখাতেই বাংলাদেশকে হারিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই ঘাটতি চোখে পড়েছে। পাওয়ার প্লে;র ব্যাটিংয়েও এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। বাংলাদেশ ২ উইকেটে তোলে ৩৭ রান, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ১ উইকেট হারিয়ে জমা করে ৪৩ রান। আর শেষের ঝড়ো ব্যাটিংয়েও বাংলাদেশকে পেছনে ফেলে তারা। মোস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে ৪১ রান খরচায় দুটি উইকেট নেন। রিশাদ ২ ওভারে ১৬ রানে নেন এক উইকেট।
৩১ রানে একটি উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম। সাকিব ৩ ওভারে মাত্র ১৬ রান দেন। তবে কোনো উইকেট পাননি।
টি-টুয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের বড় দুশ্চিন্তার নাম ব্যাটিং। মোটাদাগে বললে টপঅর্ডার আর পাওয়ার প্লে। যুক্তরাষ্ট্রের বোলারদের সামনেও দেখা মেলে পুরনো দুর্দশার চিত্র। ৪ ওভারে বিনা উইকেটে ৩৪ রান তুলে ফেলার পরও পাওয়ার প্লে’তে আসে মোটে ৩৭ রান।
চার বলের ব্যবধানে লিটন দাস ও সৌম্য সরকারের সাজঘরে ফেরার পর ১১.২ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর হয়ে যায় ৬৮/৪। বিপর্যয় থেকে তাওহিদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাংলাদেশকে টেনে তোলেন। সিরিজের প্রথম টি-টুয়েন্টিতে এনে দেন ১৫৩ রানের পুঁজি।
টেক্সাসের হিউস্টনের প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্স মাঠে স্থানীয় সময় সকালের আবহাওয়া ছিল মেঘলা। বোলিংয়ের জন্য অনুকূল কন্ডিশনে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠান যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেল। সৌম্য-লিটন ওপেনিংয়ে ভালো সূচনা এনে দিয়ে ফেরার পর ১২ ওভার পর্যন্ত ধুঁকতে হয় বাংলাদেশকে।
এটি দুই দলেরই মুখোমুখি হওয়া প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। শুরুটা দেখেশুনেই করেন সৌম্য-লিটন। ২ ওভারে ১১ রান তোলা বাংলাদেশ পরের দুই ওভারে ২৩ রান যোগ করেন। পঞ্চম ওভারের জাসদিপ সিংহের তৃতীয় ডেলিভারিটি নিচু হয়ে এসে প্যাডে লাগে লিটনের। ডানহাতি পেসারের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন বাংলাদেশ ওপেনার। ১৫ বলে একটি করে চার-ছয়ে করেন ১৪ রান। পরের ওভারের প্রথম বলে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য। অফস্পিনার স্টিভেন টেইলরকে ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে সীমানা দড়ির কাছে ধরা পড়েন। ১৩ বলে তিন বাউন্ডারিতে ২০ রান করেন সৌম্য।
তিনে নামা বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত নিজেকে ২২ গজে মানিয়ে নিতে পারেননি। ১১ বলে ৩ রান করে ফেরেন সাজঘরে। হতাশ করেছেন অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান। ১২ বলে ৬ রান করে ফেরেন। ৩৪ রানের মধ্যে চার উইকেট হারানো দলকে পথ দেখান হৃদয়-মাহমুদউল্লাহ। ৪৪ বলে ৬৭ রানের জুটি গড়েন।
বিশ্বকাপ স্কোয়াডের খেলোয়াড়দের নিয়েই গড়া হয় একাদশ। র্যাঙ্কিংয়ে ১০ ধাপ পিছিয়ে থাকা দলের বিপক্ষে পূর্ণশক্তি নিয়েই নামে বাংলাদেশ। তারপরও ব্যাটিংটা টি-টুয়েন্টিসুলভ হয়নি বাংলাদেশের।
৪৭ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলে শেষ বলে আউট হন হৃদয়। ৪টি চার ও ২টি ছয়ের মার ছিল তার ইনিংসে। ২২ বলে দুটি চার একটি ছয়ে ৩১ রান করেন সাইলেন্ট কিলার মাহমুদউল্লাহ। ৫ বলে দুটি চারে ৯ রানে অপরাজিত থাকেন জাকের আলী।