আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ গাজার দক্ষিণের রাফা নগরীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে বেশ কয়েকটি ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক। সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা একথা জানিয়েছে। রাফার আশ্রয় শিবিরগুলোতেও ইসরায়েলের বিমান হামলা চলছে। সর্বশেষ হামলায় নিহত হয়েছে ২১ জন।
রাফায় ইসরায়েলের অভিযান শুরুর পর থেকে মঙ্গলবার এসব ট্যাঙ্ক প্রথম নগরীর প্রাণকেন্দ্রের আল-আওদা মোড় দখলে নিল। মিশরের সীমান্ত থেকে এই জায়গাটি প্রায় ৫০০ মিটার দূরে। সেখানে তুমুল গোলা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।
হামাস পরিচালিত ফিলিস্তিনি চিকিৎসা কর্মকর্তাদের মতে, নিহত ২১ জনের মধ্যে অন্তত ১২ জন নারী। কিন্তু একজন ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত, আমরা এই ঘটনা সম্পর্কে অবগত নই।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, রাফার কেন্দ্রে আল-আওদা মসজিদের কাছে মেশিনগানসহ ট্যাংক এবং সাঁজোয়া যান দেখা গেছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তাদের বাহিনী রাফাহ এলাকায় অভিযান চলাচ্ছে। তবে শহরের কেন্দ্রে অগ্রসর হওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘গত কয়েক ঘণ্টায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আল-মাওয়াসিতে কোনো মানবিক এলাকায় হামলা চালায়নি।’
ইসরায়েল গত তিন সপ্তাহ ধরে রাফায় আক্রমণ চালাচ্ছে।
বিষয়টি আন্তর্জাতিক ক্ষোভে পরিণত হয়েছে। আশ্রয়শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলার পর বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছে।
গত রবিবারও রাফাহ শহরের পশ্চিমে একটি আশ্রয়শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় আগুন ধরে যায়। এতে কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত হয়েছে। অনেকে আগুনে ঝলসে গেছে।
তবে ইসরায়েলের ভাষ্য, তারা শুধু ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের কমান্ডারদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। সাধারণ মানুষদের হত্যার কোনো অভিপ্রায় তাদের নেই।
গাজার জরুরি পরিষেবাগুলো বলেছে, চারটি ট্যাংকের শেল আল-মাওয়াসিতে একটি আশ্রয়শিবিরে আঘাত হেনেছে। এটি একটি উপকূলীয় অঞ্চল এবং ইসরায়েল রাফাহ থেকে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবারের হামলাটি ইসরায়েলি বাহিনী একটি মানবিক অঞ্চলে চালিয়েছে। যেখান থেকে রাফায় অভিযান শুরুর সময় বেসামরিক নাগরিকদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল ইসরায়েল। বাসিন্দারা বলেছেন, আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডাব্লিউএ) মঙ্গলবার জানিয়েছে, প্রায় এক মিলিয়ন মানুষ যুদ্ধে বারবার বাস্তুচ্যুত হচ্ছে।
রয়টার্সের এক ভিডিওতে দেখা গেছে, পরিবারগুলো রাফার রাস্তা দিয়ে তাদের জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছে এবং তাদের ক্লান্ত শিশুরা তাদের পেছনে পেছনে হাঁটছে।