আন্তজাতিক ডেস্কঃদীর্ঘ ছয় মাস পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির (আপ) নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল আবগারি (মদ) নীতি মামলায় জামিন পেলেন। শুক্রবার সকালে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার ডিভিশন বেঞ্চ তার জামিনের রায় দেন। গত ৫ সেপ্টেম্বর শুনানি শেষে রায় স্থগিত রাখা হয়েছিলো।
দুই বিচারপতি পৃথকভাবে তাদের রায় দিলেও জামিনে মুক্তির বিষয়ে দুজনেই একমত হন। তবে জামিনে মুক্তি মিললেও দিল্লির উপরাজ্যপাল ভি কে সাকসেনার অনুমতি ছাড়া সচিবালয় বা মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে যেতে পারবেন না কেজরি। সরকারি ফাইলে সই করতে পারবেন না, মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না, এবং কোনো সাক্ষীর সঙ্গে কথাও বলতে পারবেন না।
জামিনের শর্তের ফলে কেজরিওয়ালকে আগে যে জামিন দেওয়া হয়েছিল, সেটাই বহাল রাখা হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে সুপ্রিম কোর্ট কেজরিওয়ালকে প্রচার করার জন্য জামিন দিয়েছিল।
তবে জামিনের এই শর্ত নিয়ে দুই বিচারপতির মধ্যে মতপার্থক্য ছিল। বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেছেন, তিনি আগের শর্ত এক্ষেত্রেও বহাল রাখতে চান।
কিন্তু বিচারপতি ভুয়ান বলেছেন, কেজরিওয়ালকে সচিবালয়ে যেতে মানা করা এবং ফাইলে সই করা নিয়ে যে সব শর্ত দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে আমার সিরিয়াস রিজার্ভেশন আছে। তবে আমি এই মুহূর্তে এর থেকে বেশি কিছু বলছি না।
যেহেতু দুই বিচারপতি কেজরিওয়ালকে জামিন দেওয়া নিয়ে একমত হয়েছেন, তাই তিনি জামিন পাচ্ছেন।
ইডির করা মামলায় কেজরিওয়াল জামিন পাওয়ার পর সিবিআই যেভাবে তড়িঘড়ি করে কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করে তা নিয়ে দুই বিচারপতি একমত হতে পারেননি।
বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেছেন, সিবিআই পদ্ধতিগত দিক থেকে কোনো বেআইনি কাজ করেনি।
কিন্তু বিচারপতি ভুয়ান বলেছেন, সিবিআই ২০২৩ সালের মার্চে কেজরিওয়ালকে জেরা করলো, কিন্তু তাকে গ্রেপ্তার করলো না। যখন ইডি তাকে গ্রেপ্তার করলো এবং তার ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হলো, তখন তারা কেজরিওয়ালকে তড়িঘড়ি করে গ্রেপ্তার দেখালো। ২২ মাস তারা কেজরিওয়ালকে হেফাজতে নিতে চায়নি। ইডির মামলায় জামিনের পর তারা সক্রিয় হয়ে উঠলো।
তিনি বলেছেন, সিবিআই যে কেজরিওয়ালকে দেরিতে গ্রেপ্তার করেছে তা অন্যায্য। যে কারণ দেখিয়ে সিবিআই তাকে গ্রেপ্তার করেছে, তার ন্যায্যতা তারা প্রমাণ করতে পারেনি। তারা এ নিয়ে জবাব এড়িয়ে গেছে।
বিচারপতি ভুয়ান সিবিআইয়ের প্রবল সমালোচনা করেছেন। তাদের কাজ নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি আবার সিবিআই প্রসঙ্গে ‘খাঁচায় বন্দি তোতাপাখি’র প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি বলেছেন, তাদের এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি জানিয়েছেন, এই ধারণার গুরুত্ব আছে। সিবিআইকে দেখাতে হবে, তারা খাঁচাবন্দি তোতা নয়। সিবিআইয়ের উচিত যাবতীয় সন্দেহের উপরে ওঠা।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে