আদালত প্রতিবেদকঃ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভের মুখে আওয়ামীপন্থী ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রধান বিচারপতি তাদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। দুর্নীতি ও হাসিনা সরকারের দোসর হিসেবে কাজ করার অভিযোগ ছিল তাদের বিরুদ্ধে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক বিচারপতি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বিতর্কের সম্মুখীন হাইকোর্টের ১২ জন বিচারপতিকে চায়ের দাওয়াত দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। এ উপলক্ষে প্রধান বিচারপতির আজকের দিনের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের দপ্তরে একে একে প্রবেশ করছেন ডাক পাওয়া বিচারপতিরা। সবশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত চারজন বিচারপতি প্রধান বিচারপতির চায়ের দাওয়াতে এসেছেন। তারা হলেন বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান, বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান, বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামান ও বিচারপতি শাহেদ মো. নুরউদ্দিন।
জানা গেছে, আমন্ত্রণ পাওয়া ১২ বিচারপতির বিরুদ্ধে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর হিসেবে কাজ করা ছাড়াও বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তাদের পদত্যাগ দাবি করে আসছে বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ আইনজীবীরা।
সবশেষ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেসবুক পেইজে এই বিচারকদের পদত্যাগের দাবিতে হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দেন। ওই পোস্টে তিনি লিখেন, ‘আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট বিচারকদের পদত্যাগের দাবিতে আগামীকাল (বুধবার) সকাল ১১টায় হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচি।’
সে অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট বিচারকদের পদত্যাগের দাবিতে হাইকোর্ট ঘেরাও করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থান নেন। তাদের ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই,’ ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ,’ ‘স্বৈরাচারের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান,’ ‘ঘেরাও ঘেরাও ঘেরাও হবে, হাইকোর্ট ঘেরাও হবে,’ ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ,’ ‘দিল্লী না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা,’ ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম,’ ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’ ইত্যাদি স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ।
কর্মসূচি থেকে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, সারা দেশ থেকেই আওয়ামী লীগের আইনজীবীদেরও অপসারণ করতে হবে। এ ছাড়া ছাত্রলীগকেও নিষিদ্ধ করতে হবে।