হাফসা উত্তরা: ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সকল ষড়যন্ত্র,বাধা-প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার মাধ্যমে দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তরের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ আনোয়ার হোসেন।
তিনি গতকাল বিকালে রাজধানীর উত্তরার ১১ নং সেক্টর পার্কে উত্তরা পশ্চিম থানা ইসলামী আন্দোলন আয়োজিত বদর যুদ্ধের গুরুত্ব ও তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলন উত্তরা পশ্চিম থানা সভাপতি আলাউদ্দিন সাবেরীর সভাপতিত্ব করেন।
থানা সেক্রেটারি মাওলানা জিয়াউর রহমান এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠান পরিচালিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তরের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি ফরিদুল ইসলাম।
আরও উপস্থিত ছিলেন,বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি উত্তরা পশ্চিম থানার সাবে ছদর ও দলিপাড়া ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি আবু জাফর আলম,জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ উত্তরা পশ্চিমর সভাপতি মুফতি মফিজুর রহমান, যুব আন্দোলনের সভাপতি, রেজাউল করিম, শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি শরিফুল ইসলাম, ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি এইচ এম আলমগীর হোসেনসহ থানা ও ওয়ার্ডের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলবৃন্দ।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে মুফতি ফরিদুল ইসলাম বলেন, ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের দ্বিতীয় হিজরীর ১৭ রমজান বদর প্রান্তরে সংঘটিত হয়েছিলো ঐতিহাসিক বদরযুদ্ধ। এ যুদ্ধের মাধ্যমে ইসলাম প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পেয়েছিলো। বিশ্ব দরবারে মুসলিমরা উদীয়মান ও অপ্রতিরোধ্য সামরিক শক্তিতে পরিণত হয়েছিলো। আর পবিত্র কালামে হাকীমে এ যুদ্ধকে সত্য-মিথ্যার মধ্যে পার্থক্যকারী যুদ্ধ বলে অভিহিত করা হয়েছে। ইসলামের বিরুদ্ধবাদী কাফিরদের বিশাল সামরিক শক্তির মোকাবিলায় ইমানদার বান্দাদের ছোট একটি দলের শসস্ত্র সংগ্রাম ছিল এটি। এ যুদ্ধে মানুষের ধারণাপ্রসূত সবরকমের চিন্তা ও উপলব্ধির বাইরে গিয়ে আল্লাহতায়ালা অস্ত্রশস্ত্রহীন ইমানদারদের অতিক্ষুদ্র দলটিকে বিজয় দান করেছিলেন। মূলত, রাসূল (সা.)-এর নেতৃত্বে মুসলমানদের দৃঢ় ঈমানী প্রত্যয় ও আল্লাহর প্রত্যক্ষ সাহায্য এ অসম যুদ্ধে মুসলমানরা বিজয়ী হয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কালামে পাকের সূরা আল ইমরানের ১২৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আর বদরের যুদ্ধে আল্লাহ অবশ্যই তোমাদেরকে সাহায্য করেছিলেন অথচ তোমরা হীনবল ছিলে। কাজেই তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পার’। তাই ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের কোন বাধা-প্রতিবন্ধকতায় ভীত-সন্ত্রস্ত হলে চলবে না বরং ঈমানের আলোকিত হয়ে সকল প্রকার অশুভ, স্বৈরাচারি ও ফ্যাসীবাদী শক্তির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ তৌহিদে বিশ্বাসীদের জন্য প্রেরণার উৎস হয়ে রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি জয়-পরাজয় বৈষয়িক শক্তি- সামর্থের ওপর নির্ভর করে না বরং তা আল্লাহর হাতে। এ বিশ্বাস ও চেতনা লালন করে পৃথিবীর যে প্রান্তে যখনই মুসলমানরা অসত্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন তারা সংখ্যায় বা সম্পদে কম হলেও আল্লাহ তাদের বিজয় দান করেছেন। যা বাস্তব প্রমাণ ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লব। পতিত স্বৈরাচার ও ফ্যাসীবাদী অপশক্তি সেদিন দলীয় পশুশক্তি, রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার ও আধিপত্যবাদী শক্তির সহযোগীতায়ও ছাত্র-জনতার বিজয় রুখতে পারেনি। তাই আগস্ট বিপ্লবের চেতনায় দেশকে অপশাসন- দুঃশাসন মুক্ত করে এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে সকলকে দলমত নির্বিশেষে এক প্লাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্যথায় পতিতরা মাথাচাঁরা দিতে পারে বলে হুশিয়ার করেন তিনি।