নিজস্ব প্রতিবেদক
দুই ভাইয়ের ছবি ও আলাউদ্দিন আহাম্মেদ চৌধুরী নাসিমের নামে ১৯শে মার্চ-২০২৫ ইং বুধবার বিকালে বৈষম্য বিরোধী জনতার ব্যানারে লাগানো হয়েছে। পোস্টারে লিখা আছে,” এরা গণশত্রু, এদের ধরিয়ে দিন, এরা গণহত্যাকারী, দুর্নীতিবাজ, দেশ ধ্বংসকারী, লুটপাটকারী, টেন্ডারবাজ, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, নিয়োগ বাণিজ্য-বদলি বাণিজ্যকারী, এরা চোরাকারবারী, মাদক ব্যবসায়ী এরা নারী পিপাসু, এরা ভূমিদস্যু, দেশদ্রোহী, এরা রাজাকারের বংশধর, এরা অপরাজনীতির হোতা, এদের প্রতিহত করুন ধরিয়ে দিন, সৌজন্যে: বৈষম্য বিরোধী জনতা।
উল্লেখ্য, আলাউদ্দীন নাসিমের পৈত্রিক বাড়ি পরশুরাম পৌরসভার উত্তর গুথুমা গ্রামে। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রটোকল অফিসার ছিলেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ফেনী-১ আসনে আ’ লীগের মনোনয়ন নিয়ে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। তার ছোট ভাই জালাল উদ্দীন পাপ্পু দীর্ঘদিন ধরে এনসিসি ব্যাংকে চাকুরি করে বর্তমানে অবসরে আছেন। তিনি ফেনী জেলা আ’লীগের সদস্য ছিলেন। নাসিমের নাম বিক্রি করে নিয়োগ-বদলির তদবির, সীমান্তে চোরাচালান, মাদকসহ যাবতীয় অপকর্মে কমিশন নিতেন পাপ্পু।
নিজাম উদ্দীন সাজেল আলাউদ্দীন নাসিমের চাচাতো ভাই। নাসিমের দাপটে সাজেল পর পর তিন চারবার পরশুরাম পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়। একসময় এলাকায় পাগলা সাজেল নামে পরিচিত সাজেল মেয়র নির্বাচিত হয়ে দু’হাতে টাকা কামাতে থাকে। সময়মতো পৌর কার্যালয়ে না গিয়ে বাড়িতেই অফিস করতো সাজেল। মাদক, চোরাচালান, গরু পাচার, শালিস বাণিজ্য ও পৌরস-ভার অর্থ লুটে সিদ্ধহস্ত ছিল সে। দিনভর মাতাল হয়ে নারী নিয়ে ঘরেই পড়ে থাকতো সাজেল। নাসিম, পাপ্পু ও সাজেলেই জিম্মি ছিল ফেনীর উত্তরাঞ্চল। এ এলাকার মানুষ তাদের সিদ্ধান্তের বাইরে কোন কাজ করতে পারতো না। এলাকার উঠতি বয়সী যুবকদের নিয়ে তারা গড়ে তুলেছিল ভয়ংকর ক্যাডার বাহিনী। ফলে মানুষ তাদের কাছে জিম্মি ছিল। তাই সুযোগ পেয়ে এসব অপকর্মের নায়কদের ধরিয়ে দিতে ব্যানার টানান বৈষম্য বিরোধী জনতা। তবে কে বা কারা ব্যানারটি ঝুলিয়েছে তা কেউ বলতে পারেন নি। ফেনীর প্রবীণ এক রাজনীতিবিদ জানান, এ ধরনের ব্যানার টানানোটা, আসলে জনরোষের বহিঃপ্রকাশ। ক্ষমতায় থাকতে রাজনীতিবিদ বা জনপ্রতিনিধি নিজেদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সচেতন থাকে না। তাই ক্ষমতা চলে গেলে ভুক্তভোগি হতে হয়।