সিটিজেন প্রতিবেদক: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার কোনও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভোট বিলম্বিত না করে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অঙ্গীকার করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। আওয়ামী লীগ সম্পর্কে প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘দলটিকে নিষিদ্ধ করার কোনও পরিকল্পনা অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। তবে দলটির নেতৃত্বের মধ্যে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দেশের আদালতে বিচার করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ড. কমফোর্ট ইরো নেতৃত্বাধীন ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
জাতিসংঘ ফ্যাক্ট ফাউন্ডিং মিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আওয়ামী লীগ নেতাদের হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়টিও উড়িয়ে দেননি অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান। তিনি বলেন, ‘এটাও আলোচনা রয়েছে।’
এসময় কোনো দাবির মুখে ভোট পেছানোর বিষয়টিও নাকচ করে দেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি জানান, নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পাশাপাশি নির্বাচনের জন্য দুটো সময়সীমার কথাও তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি আশ্বস্ত করেন, এই সময়সীমায় কোনো পরিবর্তন আসবে না।
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো ন্যূনতম সংস্কার চায় তাহলে এ বছরের ডিসেম্বরেই নির্বাচন হবে। আর যদি বড় আকারে সংস্কার চায় তাহলে নির্বাচন হতে পারে পরবর্তী বছরের জুনের মধ্যে। নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন আমাদের নেই। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। এর মাধ্যমে জুলাই চার্টার তৈরি করা হবে যা পরবর্তীতে সরকারকে বিভিন্ন নীতিগ্রহণ করতে সহায়তা করবে।
বৈঠকে আইসিজি কর্মকর্তারা রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতা আতাউল্লাহকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় সরকারের প্রশংসা করেন। তারা জানান, এটি রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে শান্তি এবং স্থিতিশীলতার প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকারেরই লক্ষণ।
একই সঙ্গে মিয়ানমারের রাখাইনের নিয়ন্ত্রণে থাকা আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির বিষয়েও জোর দেন আইসিজি কর্মকর্তারা।
ড. কমফোর্ট আশ্বস্ত করেন, বাংলাদেশ এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে লক্ষ্য করে ছড়ানো ভুয়া তথ্যের বিরুদ্ধে পাশে থাকবেন।
এ সময় অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়তে চায়, যদিও বেশিরভাগ ভুয়া তথ্য দেশটির গণমাধ্যম থেকেই আসছে।