সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৫:০৪ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

বিয়ে করা আর বিয়ে দেয়াও দায়িত্ব বেমালুম ভুলে বসে আছেন

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৯
  • ২৯৩ বার পঠিত

ডেস্ক : প্রিয় পাঠক আসুন, কমপক্ষে একজনের বিয়ের জন্য চেষ্টা করি। আল্লাহ বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যারা আইয়ামা (বিবাহহীন) তাদের বিয়ে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎ, তাদেরও… (২৪:৩২)।

সূরা নুরে আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন যে পুরুষের স্ত্রী নেই অথবা যে নারীর স্বামী নেই তারা অবিবাহিত; বিপত্নীক, বিধবা, তালাকপ্রাপ্তা যাই হোক না কেন, তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করতে। আল্লাহর আদেশ এখানে কত সুস্পষ্ট। যে সাথীহারা, তার জন্য বৈধ সাথীর ব্যবস্থা করতে আল্লাহ হুকুম দিয়েছেন। আমাদের দেশের ক’জন অভিভাবক এ আদেশ সম্পর্কে খোঁজ রাখেন?

অনেক পিতা এবং পিতার অবর্তমানে চাচা, বড় ভাই এ দায়িত্ব পালনে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ। এ জন্যই অভিভাবকদের এ পবিত্র কর্তব্যের কথা মনে করিয়ে দিতে চাই, যেটার কথা তারা বেমালুম ভুলে বসে আছেন।

কিছুদিন আগে একজন মহিলা তার এক আত্মীয়ার বায়োডাটা দিলেন। বললেন, ওই বিধবার কম বয়সে বিয়ে হয়েছিল। এখন বয়স ৪০। তিনি নতুন করে জীবন শুরু করতে চান। সন্তানদের আপত্তি নেই। অভিভাবক হিসেবে বড় ভাইয়ের ফোন নম্বর দিলেন যেহেতু ওই বিধবার মা-বাবা মারা গেছেন।

আমরা যখন বড় ভাইকে ফোন করলাম, তিনি জানালেন বোনের বিয়েতে তিনি আগ্রহী নন। পরিবারের অন্য কোনো সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বললেন। আরেকজন পরিচিত মহিলা যার বয়স ৩৭-৩৮, এখনও অবিবাহিতা। তার বড় দুই ভাইয়ের কাছে একাধিকবার বায়োডাটা চাওয়ার পরও তারা সেটা দিলেন না। বাবা বেঁচে থাকতে থাকতেই মেয়ের বিয়ে দিয়ে না গেলে, পরে দেখা যায়, ভাইরা এ দায়িত্ব পালনে আগ্রহ করেন না। বাংলাদেশের এ রকম বহু ঘটনা আছে। এসব মেয়ে লজ্জায় নিজে থেকে কাউকে বলতে পারে না বিয়ের কথা। মনে মনে স্বপ্ন দেখে নিজের সংসারের কিন্তু ভাইরা তো উদাসীন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কাছে কেউ যদি বিয়ের পয়গাম নিয়ে আসে, তবে তার চরিত্র পছন্দনীয় হলে অবশ্যই বিয়ে দিয়ে দাও। এমন না করলে দেশে প্রচুর অনর্থ দেখা দেবে (তিরমিজি)।

অথচ আমাদের দেশে দেখা যায়, ছেলে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়কারী, শুদ্ধ কোরআন তিলাওয়াত করে, শিক্ষিত, রোজগার করে অথচ ঢাকায় ফ্ল্যাট নেই বা দেশের বাড়িতে তাদের পাকা বাড়ি নেই, এসব অজুহাতে সেই ছেলের বিয়ের প্রস্তাবকে ফিরিয়ে দেয়া হয়।

এভাবে হয়তো বাবা, বড় ভাইরা বিয়ের খরচকে এড়িয়ে যান। তা ছাড়া বাংলাদেশে যৌতুক সমস্যা ভয়াবহ। ছেলে পক্ষ বিয়ের আগে অগ্রিম যৌতুক নিয়ে সেখান থেকে দেনমোহর পরিশোধ করে। আবার প্রতি রোজা আর ঈদের সময় ফলের মৌসুমে চাপ দিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা ও নানা রকম জিনিস আদায় করে নেয়। এ অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে অনেক পরিবার আর মেয়ের বিয়ে না দিয়ে তাকে বিনা পয়সার কাজের লোক হিসেবে ঘরে রেখে বান্দি বানাচ্ছে।

অনেক বাবা, ভাই বিধবা, তালাকপ্রাপ্তা মেয়ে-বোনের জন্য খরচ করতে অপছন্দ করেন। অথচ হাদিসে এসেছে, যারা বিধবা নারীর ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয়, তারা যেন আল্লাহর পথে জিহাদকারী এবং নিরলস নামাজি ও সদা রোজা পালনকারী (বুখারি ও মুসলিম)।

যে ব্যক্তি দুইজন বা তিনজন কন্যার ভরণপোষণ করে কিংবা দুটি বোন বা তিনটি বোনের ভরণপোষণ করে এবং এ অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বা তারা তার থেকে আলাদা হয়, তাহলে আমি ও সে এভাবে জান্নাতে থাকব। এ কথা বলে শাহাদাত ও মধ্যমাকে একত্র করলেন (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস ৪৪৮)।

আবু দাউদের রেলওয়েতে আছে অর্থাৎ সে যদি তাদের শিক্ষাদান করে, তাদের প্রতি অনুগ্রহ করে এবং তাদের পাত্রস্থ করে, তাহলে সে জান্নাতের হকদার হবে (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৫১৪৭)।

আশা করি, কোনো মুসলিম বাবা, ভাই আর মেয়ে আর বোনকে বোঝা মনে করবেন না। ইনশাআল্লাহ, এরাই আপনার জান্নাতে যাওয়ার কারণ হবে। আজকাল অনলাইনে ফ্রি ঘটকালি সাইট আছে। আপনার বিধবা, তালাকপ্রাপ্তা, অবিবাহিতা বোন, মেয়ের বায়োডাটা আজই পাঠিয়ে দিন তাদের কাছে। অনেক দেরি করেছেন, তওবা করে এখনই তাদের বিয়ের জন্য চেষ্টা করা শুরু করুন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com