নিজস্ব প্রতিবেদক, সিটিজেন নিউজ: হটলাইন চালু করতে ৫০ লাখ টাকা বাজেট চাওয়ার সময় আউটসোর্সিংয়ের বিষয়টি মনে ছিল না বলে হাইকোর্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ বিভাগ) শামীম আল মামুন। পরে আদালত তাকে ক্ষমা করে দেন।
বিষয়টি সিটিজেন নিউজকে নিশ্চিত করেন ভোক্তা অধিকারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান কচি।
তিনি বলেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ বিভাগ) শামীম আল মামুন হাইকোর্টের কাছে ক্ষমা চাওয়ায় তাকে আদালত তাকে ক্ষমা করেছেন। পরে তিন মাসের মধ্যে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে হটলাইন চালুর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে হটলাইন চালু করতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ছাড়াই দ্রুত অর্থ বরাদ্ধ দিতে অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
৫২ পণ্য নিয়ে করা রিটের শুনানিতে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ব্যারিস্টার মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম ও ভোক্তা অধিকারের পক্ষে ছিলেন কামরুজ্জামান কচি। বিএসটিআইয়ের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সরকার এম আর হাসান। হটলাইন চালুর বিষয়ে অগ্রগতি জানাতে ১৫ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।
আদালত শুনানির শুরুতে কল সেন্টার বিশেষজ্ঞ রাফসানজানি সামির কাছে হটলাইন চালুর খরচের বিষয়ে জানতে চান। সামি আদালতকে বলেন, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে হটলাইন চালু করতে মাসে সর্বসাকুল্যে পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে।
এ পর্যায়ে ৫০ লাখ টাকা বাজেট চাওয়ার বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) শামীম আল মামুন বলেন, আমরা স্বাধীন কল সেন্টার স্থাপন করে হটলাইন চালু করতে চেয়েছি। এটা করতে খরচ বেশি লাগে।
তখন আদালত পরিচালককে বলেন, আপনারা পাঁচজন মানুষ মিটিংয়ে বসলেন। অথচ আউটসোর্সিংয়ের বিষয়টি মাথায় এলো না। এটা কেমন কথা। এ সময় শামীম আল মামুন আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরে আদালত তাকে ক্ষমা করে উপরোক্ত আদেশ দেন।
এর আগে গত ২০ আগস্ট ভোক্তাদের জরুরি অভিযোগ শুনতে হটলাইন চালু করতে ৫০ লাখ টাকা বাজেট চাওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে শামীম আল মামুনকে তলব করেন হাইকোর্ট। ওই দিন আদালতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পক্ষে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন আইনজীবী কামরুজ্জামান কচি।
তিনি বলেন, হটলাইন চালু করতে ৫০ লাখ টাকার বাজেট চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সে টাকা এখনও পাওয়া যায়নি।
তখন আদালত উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, হটলাইন চালু করতে এত টাকা লাগবে? তাহলে তো এর ব্যাখ্যা জানা দরকার। তখন আদালত সংস্থাটির পরিচালককে তলব করেন।
গত ১৬ জুন ভোক্তাদের খাদ্যপণ্য ও বিভিন্ন সেবা নিয়ে অভিযোগ শুনতে এবং অভিযোগ অনুসারে ব্যবস্থা নিতে দুই মাসের মধ্যে একটি হটলাইন চালু করতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে নির্দেশ দেন আদালত। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া নামীদামি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের নিম্নমানের (সাব-স্ট্যান্ডার্ড) পণ্য বাজার থেকে সরাতে করা এক রিটের শুনানিতে এ আদেশ দেয়া হয়।