নিউজ ডেস্ক: বৈশ্বিক মহামারির কারণে সৃষ্ট মানবিক পরিস্থিতি মোকাবিলার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দায়ভার ও দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
বুধবার (১০ জুন) ইকোসকের ২০২০ সালের মানবিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত সেগমেন্টের আওতায় ‘মানবিক প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যবিষয়ক চ্যালেঞ্জসমূহের ক্রমবর্ধমান জটিলতা নিরসন’ শীর্ষক এক উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা এ আহ্বান জানান।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রাবাব ফাতিমা বলেন, মানবিক পরিস্থিতি মোকাবিলার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নেওয়া কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে দায়ভার ও দায়িত্ব ভাগ করার নীতি সন্নিবেশিত থাকতে হবে। আর এক্ষেত্রে নিয়মিত মানবিক সহায়তার বরাদ্দকরা তহবিল থেকে কোনো কর্তন না করে অতিরিক্ত তহবিল বরাদ্দ দিয়ে বৈশ্বিক মহামারির স্বাস্থ্য সংক্রান্ত এ জরুরি মানবিক প্রয়োজন মেটাতে হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, মানবতা ও মানবাধিকারের প্রতি পূর্ণ প্রতিশ্রুতির স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্ত্যচ্যুত ১.১ মিলিয়ন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পসমূহে কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাসে-স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এবং অস্থায়ী আইসোলেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠাসহ বাংলাদেশ সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা এ সভায় উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে খাদ্য, পুষ্টি, পানীয় জল ও স্যানিটেশনের মতো নিয়মিত মানবিক কর্মসূচিসমূহ বিঘ্নহীনভাবে অব্যাহত রাখা হয়েছে। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বিশেষ এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ফলে রোহিঙ্গাদের মধ্যে এর সংক্রমণ সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে, যা দেশের মূল জনগোষ্ঠীর সংক্রমণের হারের চেয়ে কম। এছাড়া কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলা এবং এর পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ জাতীয়ভাবে যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তাতে রোহিঙ্গাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ইকোসকের সহ-সভাপতি মরক্কো উচ্চ পর্যায়ের এ সভায় সভাপতিত্ব করে। জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণ ও মানবিক বিষয়াবলীর সমন্বয়কারী, আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক লোকক ছিলেন আলোচনা পর্বটির মডারেটর।
আলোচনা পর্ব শুরুর আগে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এসভায় ভাষণ দেন। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির মতো পরিস্থিতি যে কোনো মানবিক সঙ্কটকেই বাড়িয়ে তুলতে পারে; আর তাই, শরণার্থীসহ এ ধরনের মানবিক পরিস্থিতিতে নিপতিত সবাইকে জাতিসংঘের মানবিক সাড়াদান সংক্রান্ত বৈশ্বিক পরিকল্পনায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।