নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানার চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মামলায় ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদ’ নামের একটি ভুঁইফোড় সংগঠনের সভাপতি দাবি করা মনির খান ওরফে দর্জি মনিরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ সোমবার (৯ আগস্ট) রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ সময় আসামিপক্ষ তার আইনজীবী জামিন আবেদন করে। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সাইদুজ্জামান শরিফ জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত ৪ আগস্ট তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার ১০ দিনের রিমান্ড নিতে আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ৩ আগস্ট চাঁদাবাজি ও প্রতারণার অভিযোগে ইসমাইল হোসেন নামে এক ব্যক্তি কামরাঙ্গীরচর থানার মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, একটি ছোট দর্জির দোকানের চাকরি করতেন মনির। হঠাৎ করে নিজেকে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার বন্ধু হন। একেক সময় একেক রাজনৈতিক পদবি, বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের এমডি হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেন।
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীসহ বিভিন্ন মন্ত্রী-এমপির সঙ্গে নিজের ছবি এডিট করে বসিয়ে নিজেকে বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দাবি করেন। তিনি ও তার সহযোগীরা ঢাকা মহানগরী এবং বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কমিটি দেয়ার নাম করে অনেকের কাছ থেকে টাকা নেন।
মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘গত ৩০ জুলাই দুপুর আড়াইটার দিকে কামরাঙ্গীরচর থানার মাদবরবাজার ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে মনির তার সংগঠনের পদ প্রদান ও বড় বড় নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক করিয়ে দেয়ার নাম করে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তিনি ডিজিটাল জালিয়াতির মাধ্যমে ছবি এডিট করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে নিজের ছবি বসিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই ছবি প্রচার করে সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে আসছেন।
এভাবে নিজেকে বড় মাপের নেতা হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করতেন। মনির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজেকে ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে প্রচার করে এলাকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সৃষ্টি করেন। ফলে সাধারণ জনগণের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।