সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি। গত বছর অনেকটা ঘরোয়াভাবে জন্মাষ্টমীর আয়োজন করা হলেও এবার থাকছে সমাবেশ, শোভাযাত্রাসহ মন্দির প্রাঙ্গণে ভক্তদের আমন্ত্রণ।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে অশুভ শক্তিকে দমন করে সত্য ও সুন্দরের প্রতিষ্ঠায় ধরাধামে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। তার আবির্ভাব বিশ্বের ইতিহাসে এক নতুন যুগের সূচনা করে। নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষকে রক্ষায় তিনি পরিত্রাতার ভূমিকা পালন করেন, অন্ধকার সরিয়ে পৃথিবীকে আলোয় উদ্ভাসিত করেন।
তাদের আরো বিশ্বাস, পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। দুষ্টের দমন করতে এভাবেই যুগে যুগে ভগবান মানুষের মধ্যে নেমে আসেন এবং সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠা করেন।
এদিকে শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন পরোপকারী, প্রেমিক, রাজনীতিক ও সমাজ সংস্কারক। সমাজ থেকে অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন ও হানাহানি দূর করে মানুষে মানুষে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের মূল দর্শন। যেখানেই অন্যায়-অবিচার এ ধরাধামকে গ্রাস করেছে সেখানেই শ্রীকৃষ্ণ আবির্ভূত হয়েছেন আপন মহিমায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন ও সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের লক্ষ্য। তিনি আজীবন শান্তি, মানবপ্রেম ও ন্যায়ের পতাকা সমুন্নত রেখেছেন। শ্রীকৃষ্ণ তার জীবনাচরণ এবং কর্মের মধ্য দিয়ে মানুষের আরাধনা করেছেন।
এদেশে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষ যুগ যুগ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি- ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আওয়ামী লীগ সরকার দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা বাঙালির হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সোহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করবে।
জন্মাষ্টমী ঘিরে রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন মন্দিরে পূজা-অর্চনা, তারকব্রহ্ম হরিনাম সংকীর্তন ও তারকব্রহ্ম নামযজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছে। সকাল থেকেই মন্দিরে মন্দিরে ষোড়শ উপচারে পূজা শেষ করে প্রসাদ বিতরণ ও ধর্মীয় আলোচনা অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।