মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে সাত উইকেটে ১৯৪ রান সংগ্রহ করেছিল বরিশাল। বড় রান তাড়া করতে নেমে ছয় বল বাকি থাকতে জয় নিশ্চিত করে সিলেট। বিপিএল ইতিহাসে এটি রান তাড়া করে তৃতীয় সর্বোচ্চ জয়ের রেকর্ড।
রান তাড়ায় অবশ্য শুরুতেই ধাক্কা খায় সিলেট। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই গা ছাড়া ভাবের ফলে রান আউট হন কলিন আকারম্যান। তবে এরপর ১০১ রানের বিরাট জুটি গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয়।
ব্যক্তিগত ৪৮ রানে রান আউট হন শান্ত। তিনি না পারলেও ঠিকই ফিফটি তুলে নেন হৃদয়। বগুড়ার এই ব্যাটার ৫৫ রানে ফিরলে ম্যাচ কিছুটা বরিশালের দিকে হেলে পড়ে।
কিন্তু সেখান থেকে পাল্টা আক্রমণে হিসাবনিকাশ পাল্টে দেন মুশফিকুর রহিম ও জাকির হাসান। এই দুজন একেরপর এক বল বাউন্ডারির বাইরে পাঠাতে থাকেন। ইনিংসের ১৬ তম ওভারে এবাদত ১৯ রান দিলে ম্যাচ সিলেটের আয়ত্ত্বে চলে আসে।
এদিকে পরের ওভারে এসে মার ৪ রান দেন খালেদ। ফলে ম্যাচের পাল্লা আবার দুই দলের দিকে ঝুঁকে পড়ে। এ সময় ৩ ওভারে সিলেটের প্রয়োজন দাঁড়ায় ২৭ রান। ১৮তম ওভারের প্রতম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে সমীকরণ ১৭ বলে ২১ রানে নিয়ে আসেন জাকির।
কিন্তু পরের বলেই জাকির আউট হলে আরেকবার নাটকীয়তার জন্ম হয়। শেষ দুই ওভারে ১৯ রান প্রয়োজন থাকলেও খালেদ আহমেদের করা পেনাল্টিমেট ওভারটিতে ২০ রান নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন মুশফিকুর রহিম ও থিসারা পেরেরা।
মুশফিক ২৩ ও পেরেরা ২০ রানে অপরাজিত থাকেন। এর আগে জাকির খেলেন ১৮ বলে ৪৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। বরিশালের হয়ে করিম জানাত ও ডি সিলভা একটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বরিশালের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। সাকিব আল হাসানের জায়গায় আজকের ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি। অন্যদিকে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার বদলে আজ সিলেটকে নেতৃত্ব দেন মুশফিকুর রহিম।
দলের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নেমে শুরু থেকেই ঝড় তোলেন দুই ওপেনার চতুরঙ্গ ডি সিলভা ও আনামুল হক বিজয়। দুজনের ব্যাটের ঝড়ে পাওয়ার প্লে-তে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৪ রান তোলে বরিশাল।
অষ্টম ওভারে এসে কিছুটা হাফ ছেড়ে বাঁচে সিলেট। এ সময় ২৯ রান করা বিজয়কে কলিন আকারম্যানের তালুবন্দী করেন মাশরাফী। পরের ওভারে আরেক ওপেনার ডি সিলভা আউট হন। ইমাদ ওয়াসিমের বলে মুশফিকের গ্লাভসে ধরা পড়ার আগে ৩৬ রান করেন তিনি।
তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি ইফতিখার আহমেদ। মাত্র ১৩ রান করেন তিনি। এছাড়া সাজঘরে ফেরার আগে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৯ ও হায়দার আলী ৩ রান করেন।
সবাইকে ছাপিয়ে একাই মিরপুরের বাইশ গজে ঝড় তোলেন সাকিব। ২৬ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূরণ করেন তিনি। শেষ ওভারে মাশরাফীর বলে আমিরের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে ৩২ বলে ৬৮ রানের অসাধারণ ইনিংস উপহার দেন এই অলরাউন্ডার।
সিলেটের হয়ে মাশরাফী তিনটি এবং ইমাদ ওয়াসিম, রেজাউর রহমান রাজা ও থিসারা পেরেরা একটি করে উইকেট শিকার করেন।