নিজস্ব প্রতিবেদক : উত্তরা আজমপুর এলাকার জামির আলী মার্কেট দখল করতে মিথ্যা রাজনৈতিক মামলা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভূমিদস্যু গোলাম ফারুক সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, রাজধানী উত্তরার জনৈক মোঃ জামির আলী তার পিতার নিকট হইতে প্রাপ্ত ৯৫৪ নং দাগের ২৫.৫৮ শতাংশ জমি দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত ভোগদখল করে আসছে। পিতার ওয়ারিস হিসেবে প্রাপ্ত জমিনে তিনি ফসলের আবাদ করতে থাকেন। পরবর্তীতে উক্ত জমিতে তিনি ৩৩ টি দোকান ঘর নির্মাণ করিয়া জামির আলী মার্কেট নাম দিয়ে ভোগ দখল করতে থাকেন। জানা যায়, ঐ সময় থেকে তিনি মার্কেটের পানি বিল, বিদ্যুৎ বিল ও নিয়মিত হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করে আসছেন। বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মায়া চৌধুরীর ছেলে সন্ত্রাসী দিপু চৌধুরী রাজউক কল্যাণ সমিতির নামে উক্ত জমিটি কয়েকবার দখল নেওয়ার চেষ্টা করেন। এঘটনার পর তৎকালীন সময় জামির আলী ঢাকার যুগ্ম-জেলা জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন যাহার নং ৩২১/২০০১।
বিজ্ঞ আদালত বিচার বিশ্লেষণ ও শুনানী শেষে বাদির পক্ষে জমির উপর স্থিতিবস্থার আদেশ দেন।সরেজমিনে দেখা যায়, বাদী উল্লেখিত জামির আলী মার্কেট যথারীতি ভোগ দখলরত থাকিয়া টিন সেড মার্কেট তৈরী করে ভাড়া দিয়ে আসছেন।
কোটা সংস্কার দাবিতে
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর তার কয়েকজন দোসর জামির আলী ও তার মেয়ে রাবেয়া সনি এবং মেয়ের জামাই আল আমিনকে মিথ্যা সাজানো রাজনৈতিক মামলায় ফাঁসিয়ে তাদেরই জামির আলী মার্কেট দখলের হীন চেষ্টায় মেতে উঠছে।
জানা যায়, একটি কুচক্রী মহল জয়নাল আবেদীন নামক এক ব্যাক্তিকে দিয়ে গত ০৬/১১/২০২৪ইং তারিখ বিজ্ঞ মেট্রোপলিট ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঢাকায় ২৫৭ জনকে আসামী করে সিআর মামলা করে যাহার নং ৩৬/২০২৪। সেই মামলার এজাহারে উল্লেখ ছিলো জয়নাল আবেদীনের ছেলে মোঃ শরীফ হোসেনকে জুলাই ২৪ তারিখ গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
বিজ্ঞ আদালত অভিযোগ পর্যালোচনা করে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ ঢাকাকে গত ০৫/০৮/২০২৪ইং তারিখে হত্যার ঘটনায় তার থানায় ইতি পূর্বে নিয়মিত কোন মামলা রুজু হয়েছে কিনা এবং ভিকটিম উক্ত থানা এলাকায় ঘটনার স্বীকার হয়েছেন কিনা এবং অত্র মামলার ভিকটিম এর বিষয়ে কোন মামলা দায়ের হয়েছে কিনা অথবা অত্র মামলার ঘটনার বিষয়ে কোন তদন্ত চলমান আছে কিনা তৎ বিষয়ে ব্যাখ্যা সহ বিস্তারিত প্রতিবেদন এবং উক্ত বিষয়ে কোন মামলা দায়ের হলে তার কপি সহ ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন।
পরবর্তীতে পুলিশ তদন্তে বের হয়ে আসে ভিকটিম মোঃ শরীফ হোসেন কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎ পিষ্ট হয়ে মারা যায়।
পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার আগেই জয়নাল আবেদীন অনুশোচনায় ভেঙে পরেন। তাৎক্ষণিক তিনি ঐ মামলাটি প্রত্যাহার করতে আদালতে ছুটে যান।
গত ০৩/১২/২০২৪ ইং তারিখ সিআর মামলা ৩৬/২০২৪ আদেশের হলফনামান্তে প্রত্যাহার নথি আদালতে পেশ করেন। বাদির জবানবন্দির পরিপ্রেক্ষিতে গত ০৩/১২/২০২৪ মামলা প্রত্যাহারের আবেদন মঞ্জুর করে আদালত ০৪/১২/২০২৪ ইং তারিখ মামলাটি নথিজাত করার আদেশ দেন।
মার্কেট দখলের উদ্দেশ্য মিথ্যা মামলার বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমান বলেন,মামলার ডকেট পেয়ে আমরা তদন্ত শুরু করি। তদন্তের এক পর্যায় দেখা যায় মামলার বাদি যাদের নামে আদালতে মামলা করেছেন তাদের কারো নামই বদলে পারেননি। তারা বাদির কথাবার্তায় গড়মিল খুজে পায়। তিনি মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেন এস আই ফরিদুজ্জামানকে। ফরিদুজ্জামান মামলাটি তদন্ত করতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কেঁচো খুড়তে সাপ বের করে নিয়ে আসেন। তিনি সেখানে গিয়ে জানতে পারেন ২৪শে জুলাই আব্দুল্লাহপুর পুলিশ বক্সের সামনে অথবা আশপাশে কোন ধরনের গোলাগুলি হয়নি এবং ঐ এলাকায় কেউ গুলিবিদ্ধ হয় নি।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায় গুলিবিদ্ধ ভিকটিম শরীফ হোসেনকে টঙ্গী ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টঙ্গী ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে হাসপাতালের ম্যানেজার ও আশপাশের লোকজনের কাছে জানতে পারেন জয়নাল আবেদীনের ছেলে শরীফ হোসেন গাজীপুর মহানগর টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকায় বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছেন।
সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার শাহাবুদ্দিন আহমেদ ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার হাসপাতালের রেজিস্টার খাতা দেখে জানান ২৪/০৭/২০২৪ ইংতারিখে বাদীর ছেলে শরিফ হোসেন এবং তার সহকর্মী সীমান্তকে টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকার খাঁ পাড়া থেকে বৈদ্যুতিক পৃষ্ট হওয়ায় হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান দুই জনই বিদ্যুৎ পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন খাঁ পাড়া এলাকায় ডিসিস্ট মৃত্যুর বিষয় অনুসন্ধান করার চেষ্টা করে। এ সময় তিনি বিভিন্ন লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে জানতে পারেন গত ২৪/৭/২০২৪ ইং তারিখ টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন খাঁ পাড়াস্থ ইমাম আবু হানিফা (রহ.) মসজিদ মাদ্রাসা কমপ্লেক্সের চতুর্থ তলার নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎ পিস্ট হয়ে দুজন ব্যক্তি মৃত্যু বরণ করেন।
পরবর্তীতে তিনি সঙ্গীও ফোর্সসহ উক্ত মাদ্রাসায় গিয়ে সেখানকার মসজিদের ইমাম ইকবাল মাসুদ (৫৫)পিতা মৃত শেখ বেলায়েত হোসেন ও মসজিদ কমিটির সভাপতি হাজী অহিদুর রহমান (৬৫) সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খাঁর সাথে কথা বলে জানতে পারেন নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে রাজমিস্ত্রি সহকারি মোঃ শরিফ হোসেন পিতা জয়নাল আবেদীন ও মোঃ আব্দুস সালাম পিতা আবু তালেব দুই জনই গত ২৪/০৭/২০২৪ ইং তারিখ বিদ্যুৎ দূর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়। পরবর্তীতে মসজিদের ইমাম ইকবাল হোসেন মাসুমসহ অন্যান্যরা মিলে শরীফ হোসেন ও সীমান্তকে নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ টঙ্গী গাজীপুরে নিয়া গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন
জানা যায়, জামির আলী মার্কেট অবৈধ ভাবে দখল করার চেষ্টা, দোকান ঘর ভাংচুর,সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে ডিভিআর নিয়ে যাওয়া, ক্যাশ বাক্স থেকে নগদ টাকা লুট ও জামির আলীর মেয়ে রাবেয়া সনিকে মেরে রক্তাক্ত জখম করার ঘটনায় গত ১৮/১২/২০২২ ইং তারিখ বিবাদী১/ গোলাম ফারুক পিতা,মৃত- নুরুল আমিন,২/মোঃ সোহেল,৩/ মোঃ শাহাব উদ্দিন, ৪/ শাওন ৫/ আব্দুল মান্নান ৬/ আব্দুল্লাহ আল মামুন সহ অজ্ঞাত ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা দায়ের করেন। যাহার নং -২৯।
এ ছাড়াও গত ০৬/০৮/২০২৪ইং তারিখ বিকাল ২.২০ মিনিটের সময় উত্তরা আজমপুর এলাকার জামির আলী মার্কেটের মেইন গেইটের তালা কেটে মার্কেট দখল করার হীন চেষ্টা করলে বিবাদী ১/ ইউসুফ নবী ওরফে মান্নান পিতা আব্দুল কাদির,২/ গোলাম ফারুক,৩/ আবুল হোসেন মুকুল, ৪/রানা সাগর,৫/সাহাববুদ্দিন,৬/কাউসার,৭/এখলাছ,৮/মহিউদ্দিন ৯/পিচ্চি মাসুদ ১০/ জাহিদুলসহ অজ্ঞাত ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে রাবেয়া সানি পিতা জামির আলী বিজ্ঞ আদালতে একটি সিআর মামলা দায়ের করেন, যাহার নং-১২২০।
থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, মামলাটি তদন্ত চলমান।
মামলা সুত্রে জানা যায় বিবাদীগণ গত
০৬/ ০৮/২০২৪ ইং তারিখ জামির আলী মার্কেটের মেইন গেইটের তালা কেটে মার্কেটে প্রবেশ করে অফিস রুমে ঢুকে ড্রয়ার ভেঙে ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। এছাড়াও তারা গোডাউনের তালা ভেঙে ৪২ ইঞ্চির ৪টি টিভি, ২ টনের ৪টি এসি চুরি করে নিয়ে যায়, যার মুল্য ৪,০০০০০ (চার লাখ টাকা)।তারা ভবনের সিকিউরিটি গার্ড জামাল উদ্দিনকে মেরে অফিস থেকে বের করে দিয়ে বাদীনির হিজাব, ওড়না খুলে নিতে চাইলে বাদীনির সম্ভ্রম রক্ষার্থে বাধা দিলে তারা বাদীনির চুলের মুঠি ধরে টানা-হেঁচড়া করে লাঞ্ছিত করে।
এ সব বিষয়ে আরো জানা যায়, জনৈক মোঃ গোলাম ফারুক ঢাকা মহাসড়কের জমি বন্ধক রেখে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি টাকা লোপাট করার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক লিঃ প্রিন্সিপাল ব্রাঞ্চ মতিঝিল শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট কামাল উদ্দিন ফেরদৌস আদালতে সিআর মামলা করেন, যাহার নং ১০০৭/২০১২।
তারিখ ২৫/০৪/২০১২।
এ ছাড়াও মেসার্স গ্রীন ভ্যালী অটোমোবাইলসের মালিক গোলাম ফারুক জালিয়াতির নিপুণ ছক কষে ১৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় গত ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২২ ইং দূর্নীতি দমন কমিশন (দূদক) সহকারী পরিচালক আজিজুল হক, গোলাম ফারুক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
জাল জালিয়াতির মাধ্যমে
উত্তরা আজমপুর অংশে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সরকারি জমি বন্ধক রেখে বেসরকারি সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার ঘটনা অনুসন্ধান করতে ঐ সময় দুদুককে ৩ মাসের সময় বেঁধে দিলেন হাই কোট। একই সাথে মহাসড়কের জমি ভুয়া বন্ধকে ঋণ নেওয়া দূর্নীতির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের নিস্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে রুল জারি করেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর,বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইটনিটসহ (বিএফআইইউ) সংশ্লিষ্ট বিবাদীদেরকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সিআইডি) মোঃ এহসান উদ্দিন চৌধুরী (পিপিএম)ডেমরা ইউনিট, ঢাকা মেট্রো- দক্ষিণ প্রতারক গোলাম ফারুক, পিতা মৃত-নুরুল আমিন ২/খন্দকার মেহমুদ আলম ওরফে নাদিম পিতা,কে এম সামছুল আলম, ৩/বুলবুল ইসলাম পিতা বশিউর রহমান ৪/মোস্তফা কামাল(৩৬)পিতা মৃত আব্দুস ছামাদ গংদের বিরুদ্ধে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকে ভুয়া ও জাল দলিল উপস্থাপন করিয়া এবং জাল ডিড অব মর্গেজ এবং জেনারেল পাওয়ার অব এর্টনী প্রদান করিয়া এসআই বিএল ব্যাংক লিমিটেড দিলকুশা বা/এ এলাকা হইতে ১৫ কোটি টাকা কম্পোজিট ঋণ মঞ্জুর এবং মন্জুরকৃত ঋণের টাকা হতে গত ০৭/১২/২০১১ ইং তারিখ পর্যন্ত ১০ কোটি ২ লক্ষ টাকা উত্তোলন পূর্বক আত্মসাৎ করে মর্মে উপরোক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে পেনাল কোড এর ৪৬৭ /৪৬৮ /৪৬৯/ ৪৭১/ ৪১৯/ ৪২০/৪০৬ /১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
জানা যায়, এই প্রতারক গোলাম ফারুক গত ১৫/৮/২০১৫ ইং তারিখ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনের সুপারিশ নিয়ে
উত্তরা মডেল টাউন এলাকায় ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে একটি ট্রমা সেন্টার,নার্সিং ইনস্টিটিউশানসহ অত্যাধুনিক হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ নির্মাণের জন্য ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক সংলগ্ন ৭৩ ও ৭৫ নম্বর প্লট জমি বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রী গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এর নিকট আবেদন করেন।
এ বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব ভার পান রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক শাখা-এস্টেট-২ এর কানুনগো আলী আহম্মেদ মিয়া। তিনি সরেজমিনে গিয়ে কয়েকবার তদন্ত করে একটা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, ৭৩,৭৫নং প্লটের পূর্ব পাশের অস্থায়ী বাস কাউন্টার যাহার তফসিল মৌজা ফায়দাবাদ সিএস ও এস এ দাগ নং ৯৫৪ এর মালিক দাবি করে মোঃ জামির আলী পিতা মৃত আঃ রাজ্জাক রাজউকের বিরুদ্ধে ২০০১ সালে আদালতে মামলা করে আসছে যাহা এখনো চলমান।
এ বিষয়ে আরো জানা যায়,গত ১২/০৪/২০২২ ইং তারিখ মোঃ জামির আলী বাদী হয়ে মোঃ
গোলাম ফারুক ও তার ৩ সহযোগী মোহাম্মদ আবুল হোসেন মুকুল, শাহেদা আক্তার শিপা ও ফিরোজ আল মামুনের বিরুদ্ধে প্রতারণার আশ্রয় নিয়া আসামিগণ পরস্পর যোগসাজসীতে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরী করে। বিবাদীগণ জাল-জালিয়াতর মাধ্যমে সৃজিত পেন্টাগ্রাফ, সিএস,আরএস ও এসএ ৯৫৪ নং দাগের স্থলে সি এস ও এস এ ৯৪৭ দাগ জুড়ে দিয়েছেন। দীর্ঘদিন যাবত
জাল জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজিত কাগজপত্র দ্বারা তারা জামির আলী মার্কেট জোর জবর দখল ও আত্মসাতের চেষ্টা করে আসছে।
জামির আলীকে তার মার্কেট হইতে অন্যায় ভাবে বেদখল করিবার অপচেষ্টা ও মোঃ গোলাম ফারুক তার সন্রাসীবাহিনী দিয়ে তার নিকট ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকি দেওয়ায় বিজ্ঞা মূখ্য মহানগর হাকিম আদালত ঢাকায় সে একটি সিআরমামলা করেন যাহার নং ১৭৬/২০২২।
আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে বাড্ডা থানাকে এটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করার আদেশ দেন।
ঐ দিনই ১২/০৪/২০২২ইং তারিখ ১৬.৩০ মিনিটের সময় বাদীর পিটিশন মামলা নং ১৭৬/২২ (বাড্ডা) বিজ্ঞ আদালত হইতে প্রাপ্ত হইয়া বাড্ডা থানার মামলা নং ২৪ তাং ১২/০৪/২০২২ইং ধারা – ৩০৭/৩২৩/৩৮৫/৪২০/৪৪৮/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৫০৬/৩৪ দঃবিঃ রজু করেন।
এ মামলার আসামি প্রতারক গোলাম ফারুক পিতা মৃত নুরুল আমিনকে উত্তরা হইতে এবং ফিরোজ আল মামুন @ ফিরোজকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেফতার করেন র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক বিক্রির চেষ্টা ও হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি গোলাম ফারুকের বিরুদ্ধে রয়েছে জমি জমা সংক্রান্ত, প্রতারণা, হত্যা চেষ্টা, এনআই এ্যাক্ট,জালিয়াতি ইত্যাদি অপরাধে রাজউক এর ০১টি,একটি বেসরকারি ব্যাংক এর ০৪টি ও পাবলিক বাদী হয়ে ৪ টিসহ মোট ১০টি মামলা রয়েছে।
এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে থানায় বিভিন্ন অভিযোগ সাধারণ ডায়েরি রয়েছে।
গোলাম ফারুকের সকল অপকর্মের সহযোগী ফিরোজ আল মামুন @ফিরোজের বিরুদ্ধে রয়েছে উত্তরা এলাকায় বিভিন্ন অপরাধ বিস্তারকারী কিশোর গ্যাং এর পৃষ্ঠপোষকতার।
জানা যায়, প্রতারক ভূমিদস্যু গোলাম ফারুকের নির্যাতনের শিকার জামির আলী মার্কেটের ভাড়াটিয়া বকুল ফারুকের বিরুদ্ধ আদালতেন১টি সিআর মামলা করেন, যাহার নং ১৮৬/২৪। মামলাটির চার্জ গঠন হয়েছে।
জামির আলী ও তার কন্যা রাবেয়া সনি ও জামাতা আল আমিনের নামে প্রতারক ভুমি দস্যু গোলাম ফারুক ও তার সহযোগীদের করা মিথ্যা মামলার হাত থেকে বাঁচতে আইনি প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেন তারা। রাজনৈতিক
মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জমির আলী মার্কেট দখলের বিষয়ে জামির আলী বলেন,তিনি ২০০০ সালে আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ে আবেদন করে গার্ড এনে আনসার সদস্যকে দিয়ে উক্ত জমিটি পাহারায় রাখেন।
জামির আলী সুপার মার্কেটে আনসার গার্ডে নিয়োজিত আনসার সদস্যদের ভাতা ও পরিশোধ করেন তিনি।
এ সময় তিনি আরো বলেন, গোলাম ফারুকের নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে ২০১১ সালে তিনি বিজ্ঞ যুগ্ম-জেলা জজ ৩য় আদালতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গং দের বিবাদী করে নালিশি জমিনের আরএস সিএস সীমানা নির্ধারণের আবেদন করেন। পরবর্তীতে কমিশন নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মকর্তা উভয় পক্ষকে নোটিশ দিয়ে স্থানীয় উপস্থিত ব্যাক্তিগণের স্বাক্ষর গ্রহণ করে শান্তি পূর্ণ পরিবেশে কমিশন থানা পুলিশের উপস্থিতিতে জমি মেপে ও উভয়ের সহি স্বাক্ষর নিয়া আদালতে একটি নকশা ও প্রতিবেদন দাখিল করে। কমিশন প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন জামির আলী মার্কেটে ২৫.৫৮ এ গোলাম ফারুকের কোন জায়গা নাই। এছাড়াও গোলাম ফারুকের দাগ খতিয়ান এর জমি ফায়দাবাদ মৌজায় নাই।
তিনি আরো বলেন, প্রতারক গোলাম ফারুক তার মার্কেট দখলের চেষ্টা করছে এবং তার মেয়ে ও মেয়ের জামাইকে দেশের বিভিন্ন থানায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। তিনি এ সব মিথ্যা ও হরানি মূলক মামলার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিকট তদন্ত পূর্বক প্রতিকার চান।
জামির আলীর জামাতা আল আমিন বলেন,আমরা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বহু বার নির্যাতিত হয়েছি, এখন আবার গোলাম ফারুক আমাদেরকে মিথ্যা রাজনৈতিক মামলায় ফাঁসিয়ে আমার শশুরের মার্কেট দখল করতে চায়। আমরা এসব হীন জঘন্যতম কাজের তীব্র নিন্দা জানাই।
জামির আলীর মেয়ে রাবেয়া সনি বলেন, গোলাম ফারুক ও তার কয়েক জন সহযোগী মিলে আমার বাবার মার্কেট ও দোকানপাট দখল করে গিলে খেতে চায়। তারা আমার গায়ে হাত তুলেছে, আমার ও আমার পরিবারের নামে মিথ্যা রাজনৈতিক মামলা দিয়েছে। সে মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় বাদী মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
আমরা পরস্পর লোক মারফত জানতে পেরেছি গোলাম ফারুক আমাদের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় মিথ্যা রাজনৈতিক মামলা দিয়ে হয়রানি করবে। আমি ও আমার পরিবার বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, আমরা প্রশাসনের নিকট জীবনের নিরাপত্তা চাই। উত্তরার জামির আলি মার্কেট দখলের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির বিষয়ে গোলাম ফারুক বলেন এটি সঠিক নয়। আমি কারো বিরুদ্ধে ২ পয়সা ও খরচ করবো কেন। এসব মিথ্যা ও বানোয়াট কথা।