বুধবার, ০৫ মার্চ ২০২৫, ০২:৫৮ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান
সংবাদ শিরোনাম ::

লাকসাম উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা আরফিনা ওয়াহিদের খুটির জোর কোথায়?

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৪ মার্চ, ২০২৫
  • ৪ বার পঠিত

সেলিম চৌধুরী হীরা লাকসাম :ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পদক্ষেপ হিসেবে সাবেক পতিত প্রধানমন্ত্রী দলীয় বিবেচনায় তাঁর বিশেষ ক্ষমতাবলে ২০১৫ সালে কম্পিউটার কাউন্সিলের ২টি প্রকল্প থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতরের উপজেলা পর্যায়ের সহকারী প্রোগ্রামার পদে ১৮৯ জন ও প্রোগ্রামার পদে ২জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

কাজী আরফিনা ওয়াহিদ ২০১৫ সালে নিয়োগ প্রাপ্ত ১৯৮ জন সহকারি প্রোগ্রামারদের মধ্যে একজন৷ ২০১৫ সালে নিয়গ পাওয়া পর লাকসাম উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার হিসেবে ২ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে যোগদান করে ১৮ জানুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত কাগজপত্রে কর্মরত থাকলেও বাস্তবে তিনি অফিস করতেন না বলে একাধিক সূত্রের দাবি।
সুত্র মতে যোগদানের পর থেকেই তিনি রাজনৈতিক ভাবে তৎকালীন সময়ের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে সখ্যতা তৈরি করে (মেনেজ সিস্টেম) অফিস না করেও, সারকারী বেতন ভাতা উত্তোলন করেছেন নিয়মিত৷
উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উক্ত দপ্তরে সহকারী প্রোগ্রামার হিসেবে ১৯ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে অতিরিক্ত দায়িত্বে যোগদান করেন ফারুক আজম। তিনি ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত কর্মরত থাকলেও অফিসে ছিলেন অনিয়মিত।
২৪ মার্চ ২০২১ তারিখে আরেকজন অতিরিক্ত দায়িত্বে যোগদান করেন মোঃ হাছান ইমাম। তিনিও ছিলেন অনিয়মিত। তবে কত তারিখ পর্যন্ত তিনি কর্মরত ছিলেন এটা কেউ বলতে পারছেনা।
দ্বিতীয় মেয়াদে ১০ জুলাই ২০২৪ সালে আবারও লাকসামে যোগদান করেন কাজী আরফিনা ওয়াহিদ। যোগদানের পর থেকেই তিনি পূর্বের ন্যায় নিয়মিত অফিস করছেন না! এর মধ্যে ২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতন হওয়ার পর থেকে তিনি দীর্ঘ সময় অফিসে আসেননি। ফলে দুর্ভোগ ছিলেন সেবা গ্রহীতাসহ উপজেলায় অবস্থিত বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর গুলো৷
দীর্ঘদিন তার অনুপস্থিতির খুঁজ নিতে ১৯ ফেব্রুয়ারি বুধবার তার অফিসে গেলে দেখা যায় ওই অফিসে তালা ঝুলছে।
এদিকে মাঠ পর্যায়ে আইসিটি কর্মকর্তা বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তি সেবা প্রদান করার জন্যই তাদের নিয়োগ। তারা বিভিন্ন সরকারি সেবা ডিজিটালাইজেশনে কাজ করবেন।
মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণে আইসিটি অফিসার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। বিভিন্ন জরিপ ও ডাটাবেজ তৈরি এবং তার ভিত্তিতে নীতিনির্ধারণে সহায়তা করবেন। কিন্তু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের লাকসাম উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার কাজী আরফিনা ওয়াহিদ দীর্ঘ দিন অনুপস্থিত ও অনিয়মিত থাকার ফলে এসব কাজে সহযোগিতা পাচ্ছেন না সরকারি-বেসরকারি দপ্তর গুলো।
এদিকে তার স্বামী মোঃ শহীদ শিকদার ঢাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রোগ্রামার হিসেবে কর্মরত আছেন। কেউ কেউ বলছেন স্বামী বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডে চাকুরী করেন, এ কারণে একটু ক্ষমতা খাটাতে চান কাজী আরফিনা ওয়াহিদ!
এবিষয় গুলো নিয়ে সহকারী প্রোগ্রামার কাজী আরফিনা ওয়াহিদের সাথে যোগাযোগ করে লাকসামে তার দ্বিতীয় যোগদানের গত ৮ মাসে কতদিন অফিস করেছেন জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি। অনেকটাই এড়িয়ে যান৷
লাকসামে তথ্যপ্রযুক্তিগত কি কি সেবা দিয়েছেন জানতে চাইলে তাও বলতে পারেননি। হাজিরা কোথায় দেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ফার্স্ট ক্লাস অফিসার আমার হাজিরা লাগে না। অফিস পরিদর্শন রেজিস্টার বিষয়ে জানতে চাইলে উক্ত রেজিস্টার নেই বলে জানান।
জেলা উপজেলা আইসিটি সংক্রান্ত বিভিন্ন কমিটিতে অংশগ্রহণ করার কথা বলা থাকলেও আপনি কি এই সংক্রান্ত কয়টি কমিটিতে অংশগ্রহণ করেছেন জানতে চাইলে ইউএনও স্যার আমাকে কোন কমিটিতে অংশনিতে বলেননি৷
পরবর্তীতে এই প্রতিবেদক আরো তথ্য সংগ্রহ করার লক্ষ্যে ২ মার্চ রোববার দুপুর ২টায় তার খোঁজ নেওয়ার জন্য গেলে, জানা যায় তিনি কিছুখন পূর্বে অফিস ত্যাগ করেছেন৷ ৩ মার্চ সোমবার বেলা ১১.৩০ মিঃ তার অফিসে গেলে, তাকে পাওয়া যায়নি! ৪ মার্চ ১১.৩০ মিঃ গিয়ে তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি৷ তবে বেলা ২.৩০ মিঃ তার দেখা পেলেও তিনি কথা বলতে না রাজ৷
উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় হলো আইসিটি কর্মকর্তার সাথে তার একজন সহকারীও আছেন, তাকেও কেউ গত ৪/৫ মাসে অফিসে দেখেনি বলে জানিয়েছে উপজেলা একাধিক কর্মচারী
উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামারের অনুপস্থিতি ও অনিয়মিত অফিস করার বিষয়ে জানতে চাইলে, লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাউছার হামিদের বললে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের লাকসাম উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার কাজী আরফিনা ওয়াহিদ বিভিন্ন কারণে নিয়মিত অফিসে আসেন না তা সত্য৷ গত ৮ মাসে তার সাথে আমার ৪ থেকে ৫ দিন দেখা হয়েছে৷
কি কারনে অনুপস্থিত জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোন কারণ জানাতে পারেননি। তিনি আরো বলেন, আইসিটি কর্মকর্তার সাথে একজন সহকারী আছে এই কথাও আমি আজকে আপনার মুখ থেকে জানতে পারলাম এর আগে আমি কখনো জানতামনা এবং দেখিও নাই৷

প্রতিবেদক ৩ মার্চ সোমবার আরফিনা ওয়াহিদকে অফিসে না পেয়ে দ্বিতীয় দফা কুমিল্লা জেলা প্রোগ্রামার মোহাম্মদ বশির উদ্দিনের সাথে ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, আরফিনা ওয়াহিদ এখন নিয়মিত অফিস করেন বলে জেনেছি৷ আমি তো আর, তার ব্যাপার কোন ব্যবস্থা নিতে পারবো না৷ যে কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারবে ডিজি স্যার৷ স্যার কে তার বিষয়ে জানানো হয়েছে৷

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com