হাফসা : রাজধানীর উত্তরার ১১, ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর সেক্টরের ফ্ল্যাট ও বাড়ির মালিকগণ ২০০৮ সাল হতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) কর্তৃক ধার্য করা হোল্ডিং ট্যাক্সককে সম্পূর্ণ ‘আইনবহির্ভূত ও অবৈধ’ বলে দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সেক্টর বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টর ওয়েলফেয়ার সোসাইটির কার্যালয়ে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, ডিএনসিসি ২০১৬ সালের ২৮ জুন এসব এলাকা সিটি কর্পোরেশনের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
ভুক্তভুগিরা বলেন সিটিতে অন্তর্ভুতির আট বছর আগ থেকেই অন্যায় ভাবে কর আদায় করা হচ্ছে—যা নাগরিক অধিকারের চরম লঙ্ঘন।
এ সময় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, কর আরোপের ক্ষেত্রে যথাযথ আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই পূর্ববর্তী ইউনিয়ন পরিষদভুক্ত এলাকা থেকে কর আদায় করে আসছে ডিএনসিসি।
প্রমাণসহ অনিয়মের চিত্র তুলে ধরেন বক্তারা
সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত তথ্যমতে জানা যায়, উত্তরা ১১-১৪ নম্বর সেক্টর ২০১৬ সালের ২৮ জুন ডিএনসিসির অন্তর্ভুক্ত হয়।এরপর ২০১৭ সালের ২৩ জুলাই এসব এলাকা ডিএনসিসির ৫১ নম্বর ওয়ার্ডে সংযুক্ত হয়।
ইতিপূর্বে এলাকা গুলো হরিরামপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের অধিভুক্ত ছিল। ২০০৪ ও ২০১১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এখানকার বাসিন্দারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।২০১৪ সালে ডিএনসিসির মেয়র পদে মনোনয়ন দাখিলের সময় উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের এক বাসিন্দার সমর্থনপত্রের কারণে মনোনয়ন বাতিল হয়। কারণ ঔ সময় এলাকাটি সিটি কর্পোরেশনভুক্ত ছিল না।জানা যায়,এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে হাইকোর্টে পৃথক দুটি রীট পিটিশন (নং ৯৭৭৯/২০১৮ এবং ৯৯৫১/২০১৯) দাখিল করা হয়। এর ফলে ২০১৯ সালের ২৮ মে ডিএনসিসির অঞ্চল-১-এর কর কর্মকর্তা এক পত্রের মাধ্যমে ২০১৬ সালের পূর্বের কর আদায়ের সব কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা দেন।
সর্বশেষ, ২০২৫ সালের ৮ জুলাই ডিএনসিসির প্রশাসক বরাবর বিষয়টি নিষ্পত্তির অনুরোধ জানিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়।সংবাদ সম্মলনে কল্যাণ সমিতির নেতৃবৃন্দরা বলেন ২০১৬ সাল থেকে কর নির্ধারণ করে দিলে তারা সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসির) কর পরিষদ করবে।
বাড়ির মালিকদের উপস্থিতি ও দাবিসমূহ জানাতে
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সেক্টর ১১-এর বাড়ির মালিক মোঃ আফাজ উদ্দীন, ফিরোজ জামান, ডাঃ মঈন উদ্দীন আহমদ, অধ্যক্ষ মোঃ সালাউদ্দিন ভূঁইয়া, লে. কর্নেল (অব.) আ. ক. ম. জাহিদ হোসেন, মোঃ আব্দুর রহিম, হাজী আরব আলী ও শাহাদাৎ হোসেন।
তারা বলেন, ‘‘আমরা কোনো অবস্থাতেই ২০১৬ সালের আগের হোল্ডিং ট্যাক্স বৈধ বলে মানি না।
এটি সম্পূর্ণ বেআইনি।’’
তারা দ্রুত এই কর নির্ধারণ সংক্রান্ত অনিয়মের বিচারিক নিষ্পত্তি দাবি করেন এবং প্রধান উপদেষ্টাসহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ ডিএনসিসি প্রশাসক ও উচ্চ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।