কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজার বেড়াতে এসে অতিরিক্ত ইয়াবা সেবন করে ঢাকার এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
ওই ছাত্রীর নাম স্বর্ণা রশিদ (২২)। ব্রিটিশ কাউন্সিলে প্রাইভেটে পড়ুয়া ওই তরুণী চকবাজারের ৭ নম্বর বেগমবাজার এলাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হারুন-উর-রশিদ পাপ্পুর মেয়ে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় স্বর্ণা রশিদের বন্ধু ওয়ালী আহমদ খান নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, ওই দিন সকালে ১০-১২ জন বন্ধু-বান্ধব নিয়ে কক্সবাজারে বেড়াতে আসেন স্বর্ণা রশিদ। সকালে কক্সবাজার পৌঁছে তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইসের সামনে হোটেল জামান নামের একটি হোটেলে তারা কক্ষ ভাড়া নেন।
হোটেলটি বর্তমানে কারাগারে থাকা ইয়াবা সম্রাট শাহজাহান আনসারীর। হোটেলে উঠে বিকালে সৈকত ভ্রমণে যান স্বর্ণাসহ বন্ধুরা। সন্ধ্যার দিকে হোটেল কক্ষে ফিরে বন্ধু-বান্ধব মিলে মাদক সেবনে মত্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে মাদকের ঘোরে বেহুশ হয়ে পড়েন স্বর্ণা রশিদ। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহীন আবদুর রহমান চৌধুরী বলেন, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে মেয়েটিকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। তাকে দেখে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু তার বন্ধুরা তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ভর্তি করেননি। তারা ভর্তি না করে ফিরে যান।
ডা. শাহিন বলেন, ফিরে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আবারও মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তারা। তখন রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টা। মেয়েটিকে পরীক্ষা করে দেখা গেল তিনি মারা গেছে।
ডা. শাহীন আবদুর রহমান চৌধুরী বলেন, অতিরিক্ত ইয়াবা সেবন করায় তার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পরপরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেয়। এরই মধ্যে বন্ধুদের অনেকেই হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। তবে পুলিশ ওয়ালী আহমদ খান নামের স্বর্ণার এক বন্ধুকে আটক করে জেলে পাঠিয়েছে।
আটক ওয়ালী ঢাকার ২২, সিদ্ধেশ্বরী রোডের মনিমান টাওয়ারের বাসিন্দা আলী রেজা খানের ছেলে। শনিবার পুলিশ তাকে সন্দেহজনক ধারায় আদালতে সোপর্দ করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠান।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার এসআই মো. শরীফ উল্লাহ জানান, স্বর্ণা তার মামার বাড়ি যাওয়ার কথা বলে বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজার আসেন। শুক্রবার রাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মৃত্যুর খবর পেয়ে শনিবার সকালে ব্যবসায়ী বাবাসহ পরিবারের সদস্যরা ছুটে আসেন কক্সবাজার। পরে তাদের কাছে স্বর্ণার লাশ হস্তান্তর করা হয়।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি ছৈয়দ আবু মো. শাহাজান কবির যুগান্তরকে বলেন, মেয়েটি বাড়িতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে চলে আসেন কক্সবাজারে। তার শোকাহত বাবা মেয়ের কথা বলতে বলতে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন। ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার রাতেই মেয়েটির লাশ ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার বাবার নির্দেশনার পর মামলার বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।