নিউজ ডেস্ক: করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) সংক্রমণ ঠেকাতে আরোপিত নানা বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর বিশ্বের কয়েকটি দেশে সংক্রমণ মারাত্মক আকারে বাড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এমন ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ওই প্রতিবেদনে বিশ্বের ৪৫টি দেশকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা হয়েছে। এগুলো হলো- ‘বিধিনিষেধ শিথিলের পর সংক্রমণ বাড়ছে’, ‘বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে, তবে ইতিবাচক আভাস পাওয়া যাচ্ছে’, ‘সতর্ক থাকার পরও সংক্রমণ বাড়ছে’, ‘সতর্ক আছে এবং সংক্রমণ কমছে’, ‘লকডাউন রয়েছে ও সংক্রমণ কমছে’, এবং ‘লকডাউন সত্ত্বেও সংক্রমণ বাড়ছে’।
তালিকায় বাংলাদেশের স্থান হয়েছে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ – ‘বিধিনিষেধ শিথিলের পর সংক্রমণ বাড়ছে’ ক্যাটাগরিতে। এ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ ছাড়াও রয়েছে জার্মানি, ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, সুইডেন, ইরান, ইন্দোনেশিয়া ও সৌদি আরব।
ইউরোপ-আমেরিকার অনেক দেশের মতো বাংলাদেশে এখনো সংক্রমণ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
জার্মানির উদাহরণ টেনে প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটিতে বিধিনিষেধ শীথিল করার পর সংক্রমণ আবারও আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যায়। দুটি এলাকা তো লকডাউনই করতে হয়। দেশটিতে গত মে মাসের শুরুর দিকে সংক্রমণ মোকাবিলায় সার্বিক পদক্ষেপের মান ৭৩ থেকে কমে ৫০-এ নেমে আসে। এরপরই ওই ঘটনা ঘটে।
সৌদি আরব ও ইরানেও সংক্রমণ আবারও ব্যাপকহারে বাড়তে শুরু করেছে। এই দেশ দুটিও বিধিনিষেধ শিথিল করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রে চলতি জুনে কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করে কয়েকটি অঙ্গরাজ্য। এতে দেশটিতে আবারও সংক্রমণ বেড়ে যায়।
বাংলাদেশেও সরকারঘোষিত ছুটি শেষে বিধিনিষেধ অনেকটাই শিথিল হয়েছে। এরপর এখানেও সংক্রমণ আগের তুলনায় বাড়তে শুরু করেছে। বাংলাদেশও সরকারঘোষিত সাধারণ ছুটি শেষে বিধিনিষেধ শিথিল করেছে।
এ তালিকায় ভারত রয়েছে ‘সতর্ক থাকার পরও সংক্রমণ বাড়ছে’ ক্যাটাগরিতে। যে ৪৫টি দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে, তার মধ্যে সাতটি দেশ এই ক্যাটাগরিতে পড়েছে। ভারত এখন শনাক্ত হওয়া সংক্রমিত রোগীর সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের চতুর্থ শীর্ষ দেশ। ভারতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে। ভারতে করোনা মোকাবিলায় গত মার্চের শেষ দিকে লকডাউনের পথে হাঁটে সরকার। এরপর দফায় দফায় লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হলেও বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই। আর বিধিনিষেধ শিথিল করার পর ভারতে রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা যেন লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে।
পাকিস্তান রয়েছে ‘বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে, তবে ইতিবাচক আভাস পাওয়া যাচ্ছে’ ক্যাটাগরিতে। এ তালিকায় রয়েছে ১১টি দেশ। এগুলো হলো তুরস্ক, বেলজিয়াম, কানাডা, পোল্যান্ড, পাকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বেলারুশ, ইতালি, স্পেন, সিঙ্গাপুর ও নেদারল্যান্ডস। পাকিস্তানে ১ লাখ ৯৫ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৩ হাজার ৯৬২ জন। ২০ জুন থেকে দৈনিক রোগী শনাক্তের হার কমছে পাকিস্তানে। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।