শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ০২:১৯ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

আমার ও আমার মায়ের কিছু হলে আমার চাচা জিএম কাদের দায়ী থাকবেন: এরিক

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই, ২০২১
  • ১৪৫ বার পঠিত

সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের আদরের পুত্র এরিক এরশাদকে বাবার অধিকার ও সম্পদ বঞ্চিত করতে একটি স্বার্থান্বেষী মহল গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে বলে জানান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশীদ। বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি।

সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদপুত্র এরিক এরশাদ সম্পর্কে মিথ্যা সংবাদ ও ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকান্ডের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে দুয়েকটি গণমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় মরহুম রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এর আদরের পুত্র এরিক এরশাদকে নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে। শুধু তাই নয় মরহুম রাষ্ট্রনায়কের উত্তরসূরী হিসেবে এরিককে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অভিপ্রায়ে আমরা এক গভীর ষড়যন্ত্রের সূত্রপাত লক্ষ্য করার কথা জানান ট্রাস্ট চেয়ারম্যান।

তিনি আরো বলেন, ‘ট্রাস্ট এবং এরিক একই সূত্রে গাঁথা। স্যারের জীবদ্দশায় তার প্রিয় পুত্র এরিক স্যারের কাছেই পরম আদরে ছিলেন। স্যার চলে যাওয়ার পর ট্রাস্টসহ আমাদের উপর এরিকের দায়ভারও বর্তায়। পিতৃহীন এরিককে তার প্রাপ্য অধিকার পাইয়ে দিতে ট্রাস্ট এবং আমরা বদ্ধ পরিকর।

সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পুত্র এরিক একজন স্পেশাল চাইল্ড। পুত্রকে মাননীয় প্রেসিডেন্ট খুব বেশি পছন্দ করতেন। এ কারনেই তিনি নিজে ট্রাস্ট গঠন করে ট্রাস্টের সম্পত্তি ভোগ দখলের অধিকার দিয়ে যান এরিককে। আর এখানেই স্বার্থান্বেষী মহলের যত আপত্তি। এখন তারা এরিকের মতো একজন স্পেশাল চাইল্ড এর পিতৃপরিচয় নিয়ে মিথ্যা সংবাদ ও কুৎসা রটনা করছেন।সম্মেলনে প্রশ্ন রাখা হয় মাননীয় প্রেসিডেন্ট এবং স্বয়ং এরিকের পিতা যেখানে তাকে সন্তানের মর্যাদা দিয়ে গেছেন, সেখানে অন্যদের এটা নিয়ে আপত্তি কেন থাকবে? তারা কী করে এ ধরনের একটি ঘৃণ্য প্রচারণা চালাচ্ছেন?

প্রেসিডেন্টের জীবদ্দশায় তিনি এরিককে পরম আদরে নিজের কাছে রেখেছেন। নিজের পুত্র না হলে প্রেসিডেন্ট কী এভাবে তাকে ট্রাস্টের সবকিছু ভোগ দখলের অধিকার দিয়ে যেতেন? পিতার অবর্তমানে পুত্রের পিতৃপরিচয় নিয়ে এমন নির্মম টানহ্যাচড়া ও ন্যাক্কারজনক প্রচারণার জোর প্রতিবাদ জানানো হয়।

পত্রিকার খবরে নানা বিভ্রান্তিমূলক তথ্য উপস্থাপন করে দাবি করা হয়েছে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এরিকের পিতা নন। যেখানে পিতা নিজে এরিককে পুত্রের স্বীকৃতি দিয়ে গেছেন, সেখানে পিতার মৃত্যুর পর পুত্রকে নিয়ে এমন মিথ্যা প্রচারণা বড় কোনো ষড়যন্ত্র ও অশুভ আকাক্সক্ষারই প্রমাণ মেলে বলে জানানো হয়। এরিককে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করার এই ষড়যন্ত্রকে কোনোমতেই সফল হতে দেয়া হবে না বলে জানানো হয়।

জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছোট ছেলে শাহাতা জারাব এরশাদ এরিক। এরশাদের প্রাক্তন স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিকের ছেলে তিনি। তাকে ঘিরে জাতীয় পার্টিতে শুরু হয়েছে কাদা ছোড়াছুডড়ি। প্রকাশিত হচ্ছে নানা সংবাদ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ‌্যমে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
সংবাদ সম্মেলনে এরিক বলেন, এরশাদের ছোট ছেলে শাহাতা জারাব এরিক বলেন, আমি সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সন্তান। আজ আমার বাবা নেই। এই সুযোগে আমার চাচা জিএম কাদের জন্ম পরিচয় তুলে আমার ও আমার মা বিদিশা এরশাদের বিরুদ্ধে গত দুদিন ধরে নিউজ করাচ্ছেন। আমার ও আমার মায়ের কিছু হলে আমার চাচা জিএম কাদের দায়ী থাকবেন।
এরিক এরশাদ ও তার মা বিদিশার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে এরিক বলেন, ‘বাবার মৃত্যুর পর থেকে সহায় সম্পত্তির লোভে চাচা জিএম কাদের ষড়যন্ত্র করে আসছেন। এখনও তিনি ষড়যন্ত্র করছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

পত্রিকায় প্রকাশিত নানা মিথ্যা তথ্য নিয়ে নিজের বক্তব্য প্রকাশ করা জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি ও হুইপ গোলাম রেজা সম্পর্কে বলা হয়েছে ‘প্রেসিডেন্ট জীবিত থাকা অবস্থায়ই তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে গেছেন। গোলাম রেজার শৃঙ্খলাভঙ্গ, বেঈমানী আর বিশ্বাসঘাতকতার ব্যাপারটি টের পেয়েই মাননীয় প্রেসিডেন্ট তাকে বহিষ্কৃত করেন। এখন প্রেসিডেন্টের অনুপস্থিতিতে বিশ্বাসঘাতকরা আবার স্বরূপে আবির্ভুত হয়েছে। তাদের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করছি। সেসঙ্গে বলে দিতে চাই এ ধরনের ষড়যন্ত্র কোনোমতেই বরদাশত করা হবে না।’

সংবাদ সম্মেলণে ওঠে এসেছে এরিকের মা বিদিশা প্রসঙ্গও। এ প্রসঙ্গে জানানো হয়, ‘মূলত এরিককে সম্পদ বঞ্চিত করতেই বারবার এরিক ও তার মাকে টার্গেট করা হচ্ছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বিদিশার বিদেশি একাউন্টে বিপুল টাকার পাহাড় রয়েছে বলে মিথ্যা ও মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। বলা হয়েছে ২০০১-২০০২ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদের একাউন্ট থেকে টাকা সরিয়েছেন বিদিশা। ২০ বছর আগের এমন মিথ্যা অভিযোগ বিদিশার বিরুদ্ধে আনা হলেও মূলত এটি সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদকেই ছোটো করা হয়েছে। তাহলে কী স্বার্থান্বেষী মহল বলতে চাইছেন মরহুম প্রেসিডেন্ট কালো টাকার মালিক ছিলেন?’

অভিযোগের তীর জাতীয় পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদেররের দিকে তাক করে বলা হয়, এ ধরনের মনগড়া তথ্যগুলো যখন জাতীয় পার্টির অফিশিয়াল ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে ছড়ানো হয় তখন এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্রেরই প্রমাণ মেলে।

জ্যেষ্ঠতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দলের চেয়ারম্যানের পদ অবৈধভাবে আকড়ে থাকা জনাব জিএম কাদেরের কাছে পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের ব্যক্তিজীবন এবং তার পুত্রকে নিয়ে এমন মিথ্যা মনগড়া সংবাদ ও তথ্য কী করে জাতীয় পার্টির অফিশিয়াল পেজে শেয়ার হচ্ছে সে প্রশ্ন রাখা হয়ভ এ ধরনের খবরে কেবল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সম্মাণহানি হচ্ছে এমন নয়, বরং পার্টির ইমেজও কী ক্ষুন্ন হচ্ছে না। ব্যক্তিগত স্বার্থ আর ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকান্ডে দলীয় পদের এমন ন্যাক্কাজনক ব্যবহার সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা জাতীয় পার্টির লক্ষ কোটি সমর্থক কোনো মতেই মেনে নেবে না। এ ধরনের কর্মকান্ড পার্টি চেয়ারম্যান হিসেবে জনাব জিএম কাদেরের অযোগ্যতা, অদূরদর্শিতার বড় প্রমাণ।

ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বলেন, জাতি জানে এরিককে তার বাবার অধিকার বঞ্চিত করতে পারলে সবচেয়ে বেশি সুবিধা কার হবে। সবশেষে সবার কাছে এরিকের এর মতো একজন স্পেশাল চাইল্ডকে ঘৃণ্য রাজনীতির বলি না বানানোর আহবান জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে এরিকের মা বিদিশা এরশাদ উপস্থিত না থাকলেও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ট্রাস্টের পক্ষে চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশিদসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com