বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান
সংবাদ শিরোনাম ::
মে দিবসে সিলেটে জাতীয় শ্রমিক পার্টির র‌্যালি ও সমাবেশ। মহান মে দিবসে শ্রমিকদের শুভেচ্ছা জানালেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড আজ মহান মে দিবস, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন কুমিল্লায় স্কুল থেকে ফেরার পথে ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা ৩য় দিন সিলেটে জাতীয় পার্টির ছাতা, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ সিলেটে জাতীয় পার্টির বিশুদ্ধ খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ শিক্ষাবিদ হাসানুজ্জামানের ‘বিদেশে উচ্চশিক্ষা’ বই প্রকাশিত হলো কুমিল্লা সিটি করপোরেশনর কাজ পরিদর্শন করেন মেয়র ডা: তাহসিন বাহার সূচনা ভারতের মসলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্বেগ

দুদকে চলমান এমপি শাওনের মামলার ধীরগতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আবারও আবেদন

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৩০ মে, ২০২২
  • ৮৭ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতি দমন কমিশনে চলমান ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের মামলার ধীরগতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ প্রকাশ করেছেন দুদক চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। দুদক কমিশনার অনুসন্ধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রবিবার (২৯ মে) জমা দেওয়া ওই আবেদনে বলা হয়েছে, নবম জাতীয় সংসদের উপ নির্বাচনে ভোলা-৩ আসন থেকে নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন প্রথমবার এমপি হয়ে নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। ঘুষ, দুর্নীতি-অনিয়ম, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও সম্পদ লুটপাটের অভিযোগও রয়েছে এই শাওনের বিরুদ্ধে। ক্যাসিনো কারবারের সঙ্গে জড়িত শাওনের বিরুদ্ধে রয়েছে যুবলীগকর্মী ইব্রাহিমকে হত্যার অভিযোগ। ২০১০ সালে জাতীয় সংসদ এলাকায় শাওনের গাড়িতে তাঁর লাইসেন্স করা অস্ত্রের গুলিতে নিহত হন যুবলীগকর্মী ইব্রাহিম।
ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও ইব্রাহিমের পরিবার শাওনকে অভিযুক্ত করে আদালতে মামলা করেছিলেন।

অভিযোগে বলা হয়; তিন বারের এমপি শাওন এখন প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক। সংসদ সদস্য হওয়ার আগে বার্ষিক ১০ লাখ টাকা আয় করা শাওনের এখন বার্ষিক আয় ১৫ কোটি টাকার ওপরে। নুরুন্নবী চৌধুরী ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় লেখেন, তাঁর বার্ষিক আয় ২ কোটি ২১ লাখ টাকা। আর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ১৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা। ২০০৯ সালে নবম জাতীয় সংসদের ভোলা-৩ আসনের উপনির্বাচনে জিতে প্রথম সংসদ সদস্য হন শাওন। ওই সময় নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত হলফনামা অনুসারে শাওনের আয় ছিল ১০ লাখ ২৩ হাজার ৭৬০ টাকা।
পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের সূত্র ধরে অভিযোগে বলা হয়; এমপি শাওন রাজধানী ঢাকায় কিনেছেন একাধিক ফ্ল্যাট, অন্তত ১০ খণ্ড জমি। নিজের নির্বাচনী এলাকায় কিনেছেন পুকুর, বাগান, ভিটাসহ অন্তত ৭২৯ শতাংশ জমি। মালিক হয়েছেন তিনটি গাড়ি ও একাধিক আগ্নেয়াস্ত্রের। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, নিজ ও স্ত্রীর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ৪৪টি হিসাবে জমা আছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা। নিজের নির্বাচনী এলাকা ভোলার লালমোহন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সংসদ সদস্য শাওন ১৯টি দলিলে জমি, ভিটা, বাগান, পুকুরসহ অন্তত ৭২৯ শতাংশ জমি কিনেছেন। উপজেলার মেহেরগঞ্জ মৌজায় ৬ শতাংশ জমি ও পুকুর কিনেছেন তিনি, দলিল করাসহ তাঁর খরচ হয়েছে ২৮ হাজার ৭৩০ টাকা। মুন্সি হাওলায় ১০ শতাংশ জমি ও ভিটাবাড়ি কিনতে ১১ লাখ পাঁচ হাজার, মেহেরগঞ্জে ৪২ শতাংশ ভিটাবাড়িসহ জমি কিনতে ২২ লাখ ১০ হাজার, ফরাজগঞ্জে ৪৮ শতাংশ কিনতে তিন লাখ ৩১ হাজার ৫০০ টাকা, একই মৌজায় ৩৭ শতাংশের একটি জমি, পুকুর ও বাগান কিনতে দুই লাখ ৪৮ হাজার ৬২৫ টাকা, ৪৫ শতাংশের আরেকটি জমি কিনতে দুই লাখ ২১ হাজার টাকা খরচ দেখিয়েছেন শাওন।
এ ছাড়া সংসদ সদস্য শাওন লালমোহনের ফরাসগঞ্জ মৌজায় দশমিক ০৭ একর জমি কিনতে মোট খরচ দেখিয়েছেন ১৩ লাখ ২৬ হাজার টাকা। মেহেরগঞ্জে ২৯ লাখ ৭০ হাজার টাকায় ৪২ শতাংশ, তিন লাখ ৪৪ হাজার ৩০০ টাকায় ৫ শতাংশ, মুন্সি হাওলায় ১৫ লাখ ১৮ হাজার টাকায় ২৯ শতাংশ, বালুর চরে দুই লাখ ৫৭ হাজার ৬০০ টাকায় ৪১ শতাংশ ও দুই লাখ ৬৮ হাজার ৮০০ টাকায় ৪৩ শতাংশ জমি কিনেছেন তিনি।
শাওন মুন্সি হাওলায় ৬ শতাংশ জমির মালিক হতে মোট খরচ করেছেন তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা। মেহেরগঞ্জে ১৬ শতাংশ জমির মালিক হয়েছেন তিনি ১১ লাখ টাকায়। পাশকার হাওলা মৌজায় ৫৬ শতাংশ জমি কিনতে তাঁর মোট খরচ হয়েছে ১০ লাখ আট হাজার টাকা।
লালমোহন ছাড়াও তাঁর নির্বাচনী এলাকা তজিমুদ্দিন উপজেলায়ও জমি কিনেছেন শাওন। এর মধ্যে শশীগঞ্জ মৌজায় ৮ শতাংশ জমি কিনতে তিনি মোট খরচ করেছেন এক লাখ ৩৪ হাজার ৪০০ টাকা। একই মৌজায় তিনি আরো ২০ শতাংশ জমি কিনেছেন এক লাখ ১২ হাজার টাকায়।
বর্তমানে এমপি শাওনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা বিচারাধীন রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ৭ জুন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধান চলাকালে যেন বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারেন সে জন্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। এটি কার্যকর করতে আদালত ২০২১ সালের ১৩ জুন পুলিশের বিশেষ শাখায় আদেশের কপি পাঠায়। পরে বিশেষ শাখা থেকে আদেশটি দেশের সব বিমান ও স্থলবন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এরপর হঠাৎ ধীরগতিতে এসে থমকে গেছে দুদকের মামলায় এমপি শাওনের বিচার কার্যক্রম। শোনা যাচ্ছে দুদককে ম্যানেজ করে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছে এমপি শাওন। এতে করে দুদকের প্রতি আস্থা হারিয়ে যাচ্ছে ভোলা-৩ আসনবাসীর।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com