সোমবার, ২৬ মে ২০২৫, ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান
সংবাদ শিরোনাম ::
স্বৈরাচারের মতো অন্তবর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টারা নির্বাচনের কথা শুনলে তারাও ভয় পায় – আমিনুল হক ৩ উইকেট নিয়ে আইপিএল শেষ মুস্তাফিজের যুদ্ধজাহাজ উদ্বোধনের সময় দুর্ঘটনা: তিন কর্মকর্তা আটক সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ৮ দল-সংগঠনের বৈঠক পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা থেকে সতর্ক থাকুন: সদর দফতর জনগণ দূর্নীতিবাজ উপদেষ্টাদের রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায় না – আমিনুল হক সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আসলো উত্তরা ১১ নং সেক্টর  এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলসহ চার দাবিতে চলছে কর্মবিরতি দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করলে জনগণের কাছে যাওয়ার হুঁশিয়ারি সরকারের ৭ দিনের সফরে জাপান গেলেন রাজউক চেয়ারম্যান

বাংলাদেশের ব্যাপারে আবারও নাক গলালেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৮ জুন, ২০২২
  • ১৫৫ বার পঠিত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনী বাধ্যবাধকতার বাকি এখনো এক বছরের বেশি। যদিও ক্ষমতাসীনসহ বিরোধীদলগুলো ব্যস্ত ঘর গোছাতে। আছে নির্বাচনী প্রক্রিয়া বা ভোটগ্রহণ পদ্ধতি নিয়ে মতবিরোধ। তবে এর মধ্যেই বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একের পর এক নসিহত দিয়ে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বললেন, বাংলাদেশে অবাধ, প্রতিযোগিতামূলক ও সহিংসতাহীন নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

শুক্রবার (১৭ জুন) সন্ধ্যায় মার্কিন দূতাবাস আয়োজিত ‘অ্যামটক’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, নির্বাচন, বাণিজ্য এবং দু’দেশের মানুষের মধ্যকার সম্পর্কসহ যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে কথা বলেন পিটার হাস। মার্কিন দূতাবাস ঢাকার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ এবং ইউটিউবে প্রচারিত সাক্ষাৎকারভিত্তিক এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে পিটার হাসকে প্রশ্ন করেন দূতাবাসের মুখপাত্র কার্লা টমাস।

বাংলাদেশ আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত জানান, এখানে যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব কোনো পছন্দ নেই এবং তারা বাংলাদেশের কোনো নির্দিষ্ট দল বা প্ল্যাটফর্মের পক্ষপাতী নয়। তবে মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশে একটি ‘উন্মুক্ত এবং প্রতিযোগিতামূলক’ নির্বাচন প্রক্রিয়া দেখতে চায় বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে পিটার হাস বলেন, ‘এটি স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রও নিখুঁত নয়। তবে বাংলাদেশে কিছু বিষয় আছে যেগুলো নিয়ে এখানকার জনগণ ও সরকার কাজ করতে পারে। বাংলাদেশের মানুষ যা দেখতে চায়, আমরাও (যুক্তরাষ্ট্র) তা দেখতে চাই। আর তা হলো আন্তর্জাতিক মানের একটি নির্বাচন। যে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ তাদের পরবর্তী নেতৃত্ব বেছে নিতে পারবে। সেই নির্বাচন হতে হবে অবাধ, প্রতিযোগিতামূলক, সহিংসতাবিহীন ও দমন-নিপীড়নমুক্ত প্রক্রিয়ায়।’

কথাগুলো শুনতে খুব সহজ হলেও এটা আসলে ততটা সহজ নয় বলে স্বীকার করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘নির্বাচন স্বচ্ছ হবে এমন কিছু ইঙ্গিত, কিছু সংকেত পাচ্ছি। এটিকে আমি স্বাগত জানাই। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাবে। আমার মনে হয়, এটা গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আসলে এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। ফলে আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সবাই নিরাপদ ও সুরক্ষিত বোধ করছেন কিনা, সেটি এখন থেকেই দেখা জরুরি।’

র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার নিরাপত্তা সহযোগিতার ভবিষ্যৎ এবং এ নিষেধাজ্ঞা দ্রুত তুলে নেয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে পিটার হাস বলেন, ‘বিষয়টির বেশ কয়েকটি দিক আছে। আমার মনে হয়, মানুষ এ বিষয়ে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে এবং চলমান অন্যান্য সহযোগিতার বিষয়গুলো ভুলে যাচ্ছে।’

গত বছরের ডিসেম্বরে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেকবার শুনেছি যে বাংলাদেশ বিষয়টিতে অবাক হয়েছে। তাদের বিস্ময় দেখে আমরাও বিস্মিত। কারণ মানবাধিকার ইস্যুতে উদ্বেগ থাকায় ২০১৮ সালেই আমরা র‌্যাবকে প্রশিক্ষণ দেয়া বন্ধ করেছিলাম। বেশ কয়েক বছর ধরে আমরা আমাদের মানবাধিকার প্রতিবেদনগুলোতে এসব উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। আমরা বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বৈঠকেও এটি তুলে ধরেছি। ফলে নিষেধাজ্ঞাটা বিস্ময় হিসেবে এলেও, আমাদের যে উদ্বেগ ছিল সেটি নিয়ে বিস্ময় থাকার কথা নয়।’

র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞায় যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা, অনেক সময় এমন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় বলে জানান রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। তিনি বলেন, ‘এমন হতে হবে তা আমি মনে করি না। আবারও বলছি, অনেক বিস্তৃত ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে আমরা একে অন্যকে সহযোগিতা করি। তার মধ্যে এটি (র‌্যাব) একটি। আমাদের এই সম্পর্কে অন্য দ্বন্দ্বও রয়েছে। গভীর ও বিস্তৃত সম্পর্কের মধ্যে এটি থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এরপরও আমরা সম্পর্ক এগিয়ে নেব।’

এ বছর বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী পালিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সামনের দিনগুলোতে দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্কের অগ্রাধিকারগুলো কী হবে জানতে চাইলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের চেয়ে ভালো কোনো জায়গায় থাকার কথা ভাবতে পারছি না। আপনি যখন পেছনে তাকাবেন, দেখবেন যে এই সম্পর্ক গত ৫০ বছরে কতদূর এসেছে। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের অসাধারণ সব অর্জন করেছে। যুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয়া একটি দেশের কী অসাধারণ উন্নয়ন হয়েছে।’

বাংলাদেশকে লক্ষ্য অর্জনে সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আজকের এই বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি। দেশটির কোটি কোটি মানুষ দারিদ্রতা থেকে বেরিয়ে এসেছে। শিশুমৃত্যুর হার কমেছে। কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ অনেক বেড়েছে। এ নিয়ে আমি শুধু রোমাঞ্চ বোধ করতে পারি যে আগামী ৫০ বছর কেমন হবে। এই সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আমরা ততটাই দ্রুত যেতে প্রস্তুত, যতটা দ্রুতগতিতে বাংলাদেশ চায়। আরও অনেক জায়গা আছে যা নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই।’

এর আগেও বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নানা ইস্যুতে কথা বলে আলোচনায় এসেছেন পিটার হাস। গত ৩১ মে জাতীয় প্রেস ক্লাবে কূটনীতিক সংবাদকর্মীদের সংগঠন ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই এখানেও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নির্বাচন চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু করতে বাংলাদেশের জনগণকেই এগিয়ে আসতে হবে। এ দেশের জনগণ, সরকার ও সুশীল সমাজকে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে। এটি ভালোভাবে সম্পন্ন করতে সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে।’

এ প্রসঙ্গে পিটার হাস বলেন, ‘মূলত, নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশের জনগণ। আশা করছি, নির্বাচন কমিশন একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেবে। নির্বাচন কমিশন তাদের স্বাধীন সত্তা প্রয়োগ করবে। মানবাধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় ছাড় দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি অনুযায়ী দেশটি মানবাধিকার এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের আপস করবে না।’

এছাড়া, র‌্যাবের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ক্ষেত্রে সংস্থাটিকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনা এবং দেশে মানবাধিকার নিশ্চিতেরও আহ্বান জানান মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

এ দিকে বাংলাদেশের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের সমালোচনা করে আসছেন দেশের সুশীল প্রতিনিধি হিসেবে পরিচিত অনেকেই। গত ৩ জুন ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে ‘রিডিং ইনটু দ্য রিসেন্ট স্পিসেস অব দ্য ইউএস অ্যাম্বেসেডর’ শিরোনামে লেখা সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের সমালোচনা করেন পত্রিকাটির সম্পাদক মাহফুজ আনাম।

তিনি লেখেন, ‘মার্কিন সরকারের নিজস্ব স্বার্থে কোন নীতি অনুসরণ করা উচিত, সে সম্পর্কে মন্তব্য করা আমাদের কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। মার্কিনরা নিজেরাই নিজেদের নীতি নির্ধারক এবং তা বাস্তবায়ন করার জন্য যথাযথ সার্বভৌম কর্তৃপক্ষ এবং কর্তৃত্ব তাদের রয়েছে। তাহলে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো যখন নিজেদের ব্যাপারে একই পন্থা অবলম্বন করে, তখন কেন তারা সেটা মেনে নিতে পারে না এবং অন্য দেশের রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করে? যেকোনো নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে, আমরা অবশ্যই সেটি চাইব। যুক্তরাষ্ট্রও এ বিষয়ে একমত জেনে আমরা আনন্দিত। কিন্তু একটি নির্বাচন কতটা অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে এবং কোন ভিত্তিতে তা বিচার করবে?’

মাহফুজ আনাম আরও লেখেন, ‘মার্কিন মিডিয়া অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে সম্পূর্ণ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পরেও রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ বিশ্বাস করে যে তাদের জোচ্চুরি করে নির্বাচনে হারানো হয়েছে। এমনকি গত মার্কিন নির্বাচনের সত্যতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে আদালত বেশ কয়েকবার রায় ঘোষণার পরেও রিপাবলিকানদের একটি বড় অংশ এখনও বিশ্বাস করে যে, গত নির্বাচনে তাদের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পই নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তাকে ভোট কারচুপি করে হারানো হয়েছে। ধরা যাক, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরে যদি পরাজিত দল দাবি করে যে তাদের কাছ থেকে নির্বাচন চুরি হয়েছে; সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রদূত হাস কীভাবে এই প্রচারণা ব্যাখ্যা করবেন?’

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশে বাংলাদেশ সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে নানামুখী ষড়যন্ত্রের আভাস দেখছে সরকারপক্ষ ও কূটনৈতিক মহল। এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ওয়ালিউর রহমান সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘দেশের ভেতর থেকে ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ধরনের ষড়যন্ত্র অব্যাহত থাকবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হয়েছে। এখন এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হলে শক্তিশালী কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে।’

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। তবে এ ধরনের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করা জরুরি উল্লেখ করে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আমি মনে করি, যুক্তরাষ্ট্র বলছে বলে আমি করব, সেটা যেমন ঠিক নয়; আবার এটা নিয়ে তাদের বাংলাদেশের পেছনে লাগাটাও অস্বাভাবিক ব্যাপার।’

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com