রাজধানীর নারিন্দায় মাদকদ্রব্য ও যৌন উত্তেজক সিরাপ তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়ে ছয় ব্যক্তিকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টা থেকে নারিন্দার ফকিরচান সর্দার কমিউনিটি সেন্টারসংলগ্ন একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
পরে রাত পৌঁনে ১টায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান র্যাব সদর দফতরের আইন ও গণমাধ্যম শাখা পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, বাড়িটিতে বিপুল পরিমাণ মাদকদব্য আছে এমন খবরের ভিত্তিতে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বাড়িটিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় সেখান থেকে ছয়জনকে আটক করাসহ ৩ হাজার ৫০০ বোতল বিভিন্ন প্রকার মাদক মিশ্রিত পানীয় জব্দ করা হয়।
আটকরা হলেন- মো. ওয়াজেদ ইসলাম শান্ত (২০), মো. রাসেল (২৯), মো. হৃদয় (২৯), মো. মুরসালিন আহম্মেদ (১৮), সবুজ মিয়া (১৮), ও মো. নান্টু (৫২)।
তিনি বলেন, সম্প্রতি কিছু অভিভাবক র্যাব-২ এর অফিসে আসেন এবং আমাদের জানান, তাদের সন্তানরা কামরাঙ্গীরচরের একটি দোকান থেকে আয়ুর্বেদিক ওষুধের মতো কিছু একটা কিনে পান করছে যার পরবর্তীতে তারা মাদকসেবীদের মতো আচরণ করছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা কামরাঙ্গীরচরে কথিত ওই আয়ুর্বেদিকের দোকানে যাই এবং ক্রেতা সেজে কয়েক বোতল ওষুধ জোগাড় করি। পরে সেটি পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিতে পাঠাই। পরীক্ষার পর রিপোর্ট আসে যে, সেটি আসলে মাদক ও যৌন উত্তেজক মিশ্রিত পানীয় বা সিরাপ।
‘এই পানীয়ের মধ্যে গাঁজা, ইয়াবা, ডান্ডি তৈরিতে ব্যবহৃত টলুইন নামক নামক ‘ক’ শ্রেণির মাদকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এ ছাড়া তীব্র ঘুমের ওষুধ ও যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধির বিভিন্ন উপকরণ, অ্যাসিড জাতীয় দ্রব্যাদিসহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া যায়, যা পান করলে কিডনি রোগসহ নানা রকম জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। পরে আমরা কামরাঙ্গীরচরের সেই দোকানে অভিযান চালাই এবং কয়েকজনকে আটক করি। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের পর আমরা এই জায়গার খোঁজ জানতে পারি। পরে আমরা এই বাড়িটিতে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে আটক করি,’ যোগ করেন তিনি।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বাড়িটি থেকে আটকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে জানা যায় যে তারা ফার্মেসির নামে লাইসেন্স নিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আয়ুর্বেদিক ওষুধ বিক্রির আড়ালে মাদক ও যৌন উত্তেজক দ্রব্যাদি মিশ্রিত পানীয় প্রস্তুত ও বিক্রি করে আসছিলেন। যার প্রধান ক্রেতা যুবকরা।
তিনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, মাদক মিশ্রিত এই পানীয়ের প্রতিটি বোতল ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হতো। বড় বোতলগুলো বিক্রি হতো ২০০ টাকায়। গত দুই-তিন বছর ধরে তারা ঢাকার কয়েকটি আউটলেটের মাধ্যমে এসব বিক্রি করে আসছিল কম দামে নেশাজাতীয় দ্রব্যাদির উপস্থিতি থাকায় তরুণ সমাজের মধ্যে পানীয়টির চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তাই তারা এগুলো তৈরি ও বিক্রি করে আসছিলেন।
আটক ব্যক্তিদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।