রাজধানীতে দেখা গেছে চাঁদাবাজির নতুন ধরন। এতদিন সড়ক-মহাসড়কের মোড় কিংবা স্ট্যান্ডে বাসে যাত্রী তুলে দিয়ে চাঁদা নেয়ার দৃশ্য দেখা গেলেও এখন অ্যাপ ছাড়া ক্ষ্যাপে যাত্রী পরিবহনকারী বাইক রাইডারদের কাছ থেকেও চাঁদা নিতে দেখা যাচ্ছে।
সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুর এবং যাত্রাবাড়ীসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা মোহাম্মদপুরের তিন রাস্তার মোড়। রাস্তার পাশের বাইকস্ট্যান্ড। তারা সবাই রাইড শেয়ারিং কিংবা চুক্তিতে যাত্রী পরিবহন করেন। যখনই কোনো রাইডার যাত্রী নিচ্ছেন, ঠিক তখনই সেই বাইকের সামনে হাজির সাদা শার্ট পরা এক কিশোর। কখনো যাত্রী আবার কখনো রাইডার নিজেই কিছু টাকা দিচ্ছেন তার হাতে। কিন্তু কিসের টাকা?
কিশোরটি জানায়, সার্জেন্ট বলেছে এখান থেকে ৫-১০ টাকা করে নিয়ে রোড ক্লিয়ার রাখতে। তবে কোন সার্জেন্ট তাকে এই দায়িত্ব দিয়েছে জানতে চাইলে সে দেখাতে পারেনি ঐ পুলিশ কর্মকর্তাকে।
ঐ কিশোর বলে, বেশি সময়ের জন্য আসি না। আরেক ভাই বিকেলে বা সন্ধ্যায় আসে, সেও টাকা তোলে।
রাজধানীর আরেক ব্যস্ততম এলাকা যাত্রাবাড়ীতেও দেখা গেল একই দৃশ্য। বাইকে যাত্রী তুলতেই এক কিশোরকে দিতে হচ্ছে ১০ টাকা করে। কিন্তু কেন টাকা নেয়া হচ্ছে? কে তাকে টাকা তুলতে বলেছে? জানতে চাইলে ঐ কিশোর বলে, বড় ভাই কইছে- এইখানে সিএনজিতে যাত্রী উঠলে ২০ টাকা আর মোটরসাইকেল থেকে ১০ টাকা করে নিতে।
শুধু মোহাম্মদপুর বা যাত্রাবাড়ীই নয়, রাজধানী জুড়েই দেখা গেছে এমন দৃশ্য। বেশকিছু জায়গা থেকে যাত্রী নিলেই দিতে হচ্ছে চাঁদা।
সূত্র বলছে, রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে চাঁদাবাজির মাধ্যমে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা চলে যাচ্ছে অসাধু ব্যক্তিদের কাছে। বাইকে যাত্রী তুললেই দিতে হবে টাকা- এমন অনিয়মকেই নিয়ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে রাজধানীর বেশ কিছু স্পটে। বাইকারদের দাবি, তাদের রক্ত পানি করা টাকা কাদের পকেটে যাচ্ছে খুঁজে বের করে নিয়ে আসা হোক আইনের আওতায়।
বাইক রাইডাররা বলছেন, অনেকটা বাধ্য হয়েই তাদের এই চাঁদা দিতে হচ্ছে। এক রাইডার বলেন, এখানে সিস্টেমই এরকম! ১০ টাকা দিলে যাত্রী নিতে দিবে, নয়তো দিবে না। আরেকজন বলেন, আমরা এটা দিই মূলত একটু নিরাপদে থাকার জন্য, সার্জেন্টের ঝামেলা যেন না হয়। বাধ্য হয়েই দেই।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান চলছে। যারা বাইকারদের কাছ থেকে চাঁদা নেয় তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।