রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৪১ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান
সংবাদ শিরোনাম ::
উত্তরায় “চব্বিশের উত্তরা”র সংবাদ সম্মেলন সরকার পতনের পরের তিনদিন অনেকেই সীমান্ত দিয়ে পালিয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী বৈঠকে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানালো বিএনপি মুক্তি পাচ্ছে ওয়েব ফিল্ম ‘ত্রিভুজ’ বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক প্রকাশ ইয়েমেনে হুতিদের লক্ষ্য করে নৌ ও বিমান হামলা চালালো যুক্তরাষ্ট্র রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন সেনাবাহিনী প্রধান  উত্তরা দিয়াবাড়ী আর্মি ক্যাম্পে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয় সভা দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বসবে বিএনপি

রাজনীতির নামে মানুষ হত্যা, দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় আনুন: দয়াল কুমার বড়ুয়া

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৫৯ বার পঠিত

নৈরাজ্যের রাজনীতি শুভবুদ্ধিসম্পন্ন কোনো মানুষের কাম্য হতে পারে না। রাজধানীতে ২৮ অক্টোবর দল-বিশেষের রাজনৈতিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সে অপচর্চাই দেখল দেশবাসী। সমাবেশের বদলে পুলিশের ওপর বেপরোয়া হামলাকেই কিছু অর্বাচীন যেভাবে করণীয় কর্তব্য হিসেবে বেছে নিয়েছে তা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না।
ব্ল্যাক স্যাটার ডে-তে হামলা ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়েছে পুলিশ বক্স। প্রাণ হারিয়েছেন একজন পুলিশ সদস্য ও গুরুতর আহত হয়েছেন ৪১ জন। প্রধান বিচারপতির বাসভবনকেও দুর্বৃত্তরা তান্ডবের লক্ষ্যস্থল হিসেবে বেছে নেয়। অথচ প্রধান বিচারপতি রাজনীতির কেউ নন। এমনকি সরকারের অংশও নন তিনি। রাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা রাষ্ট্রের ওপর হামলা তথা রাষ্ট্রদ্রোহিতারই শামিল। শনিবার রাজনৈতিক পরিচয়ধারী দুর্বৃত্তরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সাংবাদিকদের ওপর। সাংবাদিকদের অপরাধ- তারা পেশাগত দায়িত্বের অংশ হিসেবে দুর্বৃত্তপনার চিত্র ধারণ করছিলেন নির্মোহভাবে। হাসপাতালেও হামলা চালিয়েছে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা। সারা দুনিয়ায় যুদ্ধ-সংঘাতেও হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্স হামলা থেকে মুক্ত থাকে। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে সমাবেশের বদলে পরিকল্পিতভাবে সংঘাতে জড়িত হওয়াকে দেশ ও জাতির জন্য অশনিসংকেত বললেও কম বলা হবে। শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ অনুষ্ঠানের অনুমতি নিয়ে শনিবার রাজধানীর বিস্তীর্ণ এলাকায় যেভাবে বেপরোয়া হামলা, লুটপাট ও বিপুলসংখ্যক যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে তা কোনোভাবেই রাজনীতি নয়। এটি সন্ত্রাস ও বর্বরতার অশুভ চর্চা। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও অর্থনীতির জন্য প্রত্যক্ষ হুমকি। দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেওয়ার এ অপকৌশলে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন যে কোনো মানুষ উদ্বিগ্ন হতে বাধ্য। বাংলাদেশের ধারাবাহিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি থামিয়ে দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনার অবতারণা ঘটানো হয়েছে কি না তা তদন্তের দাবি রাখে। যেসব অর্বাচীন কান্ডজ্ঞানহীনতার গড্ডলিকা প্রবাহে নিজেদের ভাসিয়ে দিয়েছিল তাদের আইনের আওতায় আনা হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।
গত শনিবার রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সৃষ্ট তাণ্ডবে এক পুলিশ কনস্টেবলসহ দুজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন ৮০ পুলিশ ও সাংবাদিক। নিহত পুলিশ কনস্টেবল একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।

তাঁকে রাজনৈতিক সংঘর্ষের বলি হতে হয়েছে। কেন? তাহলে কি আমরা ধরেই নেব যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখনো পেশিশক্তি প্রবলভাবে প্রভাব বিস্তার করছে? বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তারা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করবে। কিন্তু গণমাধ্যমের খবর বলছে, সমাবেশ শুরুর আগেই অশান্ত হয়ে ওঠে নগরীরর বিভিন্ন এলাকা। তাহলে বিএনপি নেতৃত্ব কর্মীদের কাছে সঠিক নির্দেশনা দিতে পারেনি, নাকি মাঠের কর্মীরা নেতৃত্বের নির্দেশনা মেনে কাজ করেনি? রবিবার ঢাকাসহ সারা দেশে হরতাল আহ্বান করে বিএনপি। হরতাল এখন একটি অকার্যকর রাজনৈতিক কর্মসূচি। হরতালের মতো কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের কোনো অংশগ্রহণ থাকে না, বরং এ ধরনের কর্মসূচি জনমনে এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি করে। রবিবার বিএনপি-জামায়াতের হরতালে রাজধানীর ডেমরা, গুলিস্তান, মোহাম্মদপুর ও বংশালে চারটি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মানিকগঞ্জের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে তাতে আগুন দেওয়া হয়েছে। গাজীপুর মহাসড়কের যাত্রীবাহী বাস, মোটরসাইকেল, মিনিট্রাক, টঙ্গীতে বিআরটিসির একটি দোতলা বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুর করা হয় চারটি বাস।
অতীতে আমরা দেখেছি, বিএনপি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে নানা ধরনের সংকট দেখা দেয়। অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, যখনই একটু একটু করে স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়েছে বাংলাদেশ, প্রতিবারই হোঁচট খেয়েছে। রাজনীতি যেন উন্নয়নের প্রতিপক্ষ হয়েছে প্রতিবার। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে সন্ত্রাস-নাশকতায় হুমকির মুখে পড়েছে সব অর্জন। রাজনীতির কারণে কেন যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটবে? মানুষের প্রাণহানির কারণ কেন হবে রাজনীতি?
দেশের রাজনীতিতে সহনশীলতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ নেই বললেই চলে। আমরা যদি সত্যিকার অর্থেই দেশে সুষ্ঠু গণতন্ত্র দেখতে চাই, তাহলে সত্যিকার গণতন্ত্রচর্চাকে এগিয়ে নিতে হবে। আদর্শভিত্তিক রাজনীতি, সুশাসন ও দেশের উন্নয়ন হাত ধরাধরি করে চলে। আদর্শচ্যুত রাজনীতি সমাজ বা রাষ্ট্রকে কিছু দেয় না। সৃষ্টি হয় নৈরাজ্য।
রাজনৈতিক দলগুলো চিন্তা-চেতনায় নতুন করে পরিবর্তন আনবে বলে আমরা আশা করি। গণমানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বিঘ্ন ঘটায় এমন কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে এসে জনসম্পৃক্তি বাড়ানোর দিকে তারা সচেষ্ট হলে তাতেই জনগণের মঙ্গল। আমরা আশা করব, পারস্পরিক সহমর্মিতায় বাংলাদেশের রাজনীতি গঠনমূলক ও জনগণমুখী হবে।

লেখক: দয়াল কুমার বড়ুয়া, কলামিস্ট ও জাতীয় পার্টি নেতা, সভাপতি, চবি অ্যালামনাই বসুন্ধরা। সংসদ সদস্য প্রার্থী ঢাকা-১৮ আসন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com