শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:০২ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

বন্ধ পাটকল পাহারায় সাড়ে ৩ বছরে ব্যয় ১৮৮ কোটি টাকা

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১৪ বার পঠিত

খুলনা অঞ্চলের বন্ধ থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলপাহারায় দায়িত্ব পালন করছেন ৯৬১ কর্মকর্তা-কর্মচারী। কোনো কাজই নেই তাদের অনেকের। গত সাড়ে ৩ বছর ধরে মিলগুলো পাহারা দেওয়ার জন্য তাদের পেছনে ব্যয় হয়েছে ১৮৮ কোটি ৪২ লাখ ৪৬ টাকা।

কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানিয়েছেন, পাটকলগুলো অলস পড়ে আছে। এতে যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। ভবনগুলোর আশপাশে ময়লার স্তূপ, গাছ-লতাপাতায় ছেয়ে আছে। এতে রাষ্ট্রের অর্থ অপচয় হচ্ছে।

পাটকলগুলো ঘুরে দেখা গেছে, একসময় শ্রমিকদের পদচারণায় সরগরম থাকা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো নীরবে পড়ে আছে। এসব কারখানায় সর্বশেষ শব্দ বেজেছিল ২০২০ সালের ৩০ জুনে। এরপর থেকে উৎপাদন হয়নি। তবে যন্ত্রপাতি দেখভালের নামে কর্মরত রয়েছেন ৯৬১ কর্মকর্তা-কর্মচারী। এর মধ্যে ৩৬০ কর্মকর্তা ও ৬০১ জন কর্মচারী। কাজ না থাকলেও তাদের পেছনে বছরের পর সরকারের অর্থ ব্যয় হচ্ছে।

পাটকলগুলো হলো- খুলনার আলীম জুট মিলস, ক্রিসেন্ট জুট মিলস, দৌলতপুর জুট মিলস, ইস্টার্ন জুট মিলস, খালিশপুর জুট মিলস, প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলস, স্টার জুট মিলস, যশোরের কার্পেটিং জুট মিলস এবং জেজেআই জুট মিলস লিমিটেড।

বন্ধ পাটকলগুলো কবে চালু হবে জানতে চাইলে প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলস শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান বলেন, ১৯৭২ সালে ৭৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের সমন্বয়ে বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন (বিজেএমসি) গঠন করা হয়। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮১ সালের মধ্যে বিজেএমসি আরও চারটি পাটকল করলে সংখ্যা দাঁড়ায় ৮২। পরের বছর ১৯৮২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর বেসরকারীকরণ নীতিমালার আওতায় ৩৫টি পাটকল সাবেক বাংলাদেশি মালিকদের কাছে শর্তসাপেক্ষে হস্তান্তর, আটটির পুঁজি প্রত্যাহার এবং সাতটি বিক্রি করে দেওয়া হয়। তখনো বিজেএমসির নিয়ন্ত্রণে ছিল ৩২টি পাটকল।

২০০২ সালে সরকার বিজেএমসির আদমজী জুট মিলস লিমিটেড ও এবিসি লিমিটেড বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) কাছে হস্তান্তর করে। পরে শর্তভঙ্গের কারণে ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে মালিকানায় দেওয়া পাটকলগুলোর মধ্যে ছয়টি পুনরায় গ্রহণ করে বিজেএমসিকে দেয় মন্ত্রণালয়। দুই বছর পর ২৫টি পাটকল বন্ধ করে দেয় সরকার। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, সম্পত্তি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ, জ্বালানি-বিদ্যৎ ইত্যাদি খাতে মাসের পর মাস লোকসান দিচ্ছে সরকার। এগুলো কবে চালু হবে, তা আমার জানা নেই।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের (বিজেএমসি) খুলনার সমন্বয়কারী গোলাম রব্বানী বলেন, বন্ধ পাটকলগুলোর হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ রক্ষায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করছেন। তাই তাদের বেতন নিয়মিত দিচ্ছে সরকার। এখানে অযৌক্তিক কোনো খরচ হচ্ছে না।

এদিকে পাটকলগুলো বন্ধ থাকায় মূল্যবান যন্ত্রপাতি চুরি হয়ে যাচ্ছে বলে জানান সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) খুলনার সভাপতি কুদরত-ই-খুদা। তিনি বলেন, পাটকলগুলো পাহারার নামে রাষ্ট্রের বিপুল অর্থ অপচয় হচ্ছে। তবু সুরক্ষা মেলেনি। চোর-পাহারাদার যোগসাজশে মিলের যন্ত্রপাতি চুরি হয়ে যাচ্ছে।

মূল্যবান যন্ত্রপাতি চুরির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দৌলতপুর জুট মিলসের নিরাপত্তাকর্মী আক্তার হোসেন বলেন, আমাদের মিলের কোনো যন্ত্রপাতি চুরি হয়নি। আমরা এখানে নিয়মিত পাহারা দিই।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com