হাফসা (উত্তরা) ঈদুল আযহা উপলক্ষে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকার ব্যবসায়ী সমাজ, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, ছাত্র সমাজ ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দের সহিত পশ্চিম থানা পুলিশের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল ২৯শে মে বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টায় উত্তরা ১০ নং সেক্টর সীসেল রেষ্টুরেন্টে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের আয়োজনে অনুষ্ঠিত উন্মুক্ত মতবিনিময় সভায়, ফুটপাত দখল, হকার নিয়ন্ত্রণ, অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটসহ বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমান বলেন,বৃষ্টিতে ভিজে কষ্ট করে এসেছেন, আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা রইল। ঈদকে সামনে রেখে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
আপনারা কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না। মব করা যাবে না। আমরা জনগণের স্বার্থ নিয়ে কাজ করছি। আপনারা যদি তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেন, তাহলে আমরা আরও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারবো।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উত্তরা জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মহিদুল ইসলাম। আরো উপস্থিত ছিলেন উত্তরা জোনের এডিসি মোঃ আরিফ হোসেন ও এসি সাদ্দাম হোসেন।
উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের আয়োজিত আইন শৃঙ্খলা নিয়ে মতবিনিময়
সভায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
বৃষ্টি ভেজা দিনেও উপস্থিত ছিলেন উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকার সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ,
শিক্ষক সমাজ, রাজনৈতিক নেতা ছাড়াও তুরাগ থানা ও পশ্চিম থানার ছাত্র সমন্বয়।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সেক্টর কল্যাণ সমিতির নেতারা অভিযোগ করে বলেন, “জমজম টাওয়ারের সামনে ছাত্রদের নামে রান্নার দোকান বসেছে। তারা গ্যাস ও গরম তেল নিয়ে ব্যবসা করছে যা ঝুঁকিপূর্ণ”। প্রতিবাদ করায় আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, এমনকি পরিবারকে ভয় দেখানো হয়েছে।
সেক্টর কল্যাণ সমিতির নেতৃবৃন্দরা বলেন,“ওসি হাফিজুর রহমান অনেক ভালো কাজ করছেন। ইতোমধ্যেই তিনি উত্তরা পশ্চিম থানা থেকে দুইবার সেরা ওসি হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন। এটা আমাদের এলাকার গর্ব।
ব্যবসায়ী নেতা হেলাল তালুকদার বলেন, “হকারদের সড়ক দখলের কারণে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা দিতে হবে। যে কোন কিছুর বিনিময়ে মার্কেটের সামনে থেকে হকার মুক্ত করতে হবে।
অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে বলা হয়, কিছু লোক হাসপাতালের সামনে নির্দিষ্ট কিছু অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। তারা বাইরের কোনো অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে দেয় না। ২০০০ টাকার ভাড়া ৮০০০ টাকা আদায় করছে।পুলিশ বলেন আমরা এ নিয়ে দুটি মামলা নিয়েছি।
এ সময়, ছাত্র প্রতিনিধিরা বলেন,আমরা পুলিশের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো। ট্রাফিক কন্ট্রোল, হকার উচ্ছেদসহ নানা সামাজিক ইস্যুতে আমরা পুলিশের সঙ্গে কাজ করছি।
স্থানীয় জামায়াত নেতা আশরাফুল ইসলাম বলেন, হকারদের কারণে ফুটপাতে সাধারণ মানুষ সড়কে হেঁটে যেতে পারে না। যে কারণে যানজট বাড়ছে। ঘরে ঘরে নৈতিকতা শিক্ষা চালু করতে হবে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহিদুল ইসলাম (পিপিএম) বলেন, “আজকের এই সভার উদ্দেশ্যই হলো আপনাদের কথা শোনা”। তিনি বলেন, আগেও আপনাদের কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, এখন জানতে চাই তা কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে। ফুটপাত, ওভারব্রিজ এমনকি রাস্তাও হকারদের দখলে,শরবত বিক্রেতা ওভারব্রিজের মাঝখানে বসে গেলে আমি নিজে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা হকারদের পুরোপুরি সরাতে না পারলেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারি।
তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন অপরাধে ২৫০ জনকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে। তবে জনসংখ্যার তুলনায় পুলিশের সংখ্যা অত্যন্ত কম। ১৫০০ জন সাধারণ মানুষের বিপরীতে মাত্র একজন পুলিশ সদস্য কাজ করেন। তাই পুলিশের পক্ষে সব জায়গায় নজরদারি সম্ভব নয়, যদি না জনগণ তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে।