নিজস্ব প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন প্রধানমন্ত্রী পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে বনানীর সেতু ভবনে কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা প্রধানমন্ত্রীর নজরে আছে, এর সর্বশেষ খবর প্রধানমন্ত্রী জানেন। কোনো ব্যবস্থা নিতে হলে তিনি খোঁজ-খবর নিয়ে নেবেন। সরকার প্রধান এ ব্যাপারে খুব সজাগ। তিনি বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করছেন, অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবেন।
ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সঙ্গে আজ বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়।
জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে গতকাল সোমবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে তার বাসভবন অবরুদ্ধ করে রাখেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের ঘিরে চার স্তরবিশিষ্ট বহর তৈরি করে মুখোমুখি অবস্থান নেন উপাচার্যপন্থী শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা। তবে আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে তারা বাসভবনে ঢুকতে পারেননি। এর কিছুক্ষণ পর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একটি মিছিল থেকে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করা হয়। এ সময় উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের সেখান থেকে সরিয়ে দিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন।
পরে দুপুর দেড়টার দিকে বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো হামলা হয়নি। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সুশৃঙ্খলভাবে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এ অস্থিরতার মূলত শুরু হয়েছে গত আগস্ট মাস থেকে। প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ওই সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে উপাচার্য ফারজানার কাছে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগও ওঠে। পরে ওই ঘটনায় ছাত্রলীগের দুই শীর্ষনেতা পদ হারান।