বিশেষ প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, ‘বিএনপির হত্যা, সন্ত্রাস, খুন শুধু এখানেই নয়, আমেরিকায়ও সজীব ওয়াজেদ জয়কে কিডন্যাপ (অপহরণ) করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল।’
আজ শনিবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে আমাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। এরপর আবার কেয়ারটেকার সরকার এসে শুরু করে তদন্ত। আমেরিকায় জয়কে কিডন্যাপ করার জন্য ষড়যন্ত্র করে বিএনপি। বিএনপি দুর্নীতি করে এত টাকা কামিয়ে ছিল যে আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থার একজন অফিসারকে তারা টাকা দিয়ে হায়ার (ভাড়া) করে ফেলে। তাকে টাকা দিয়ে কিনে ফেলে। সেখানে আমি ও আমার পরিবার, আমার ছেলে, আমার বোন, আমাদের পরিবারের কী কী আছে সেগুলো খোঁজা শুরু করে। সেই তদন্ত করতে গিয়ে বের হয়ে আসলো খালেদা জিয়া ও তার দুই পুত্রের দুর্নীতির তথ্যপ্রমাণ। প্রকাশ হয়ে গেল তাদের রিপোর্ট।’
‘বিএনপির দুই নেতাও যে জড়িত ছিল, আমেরিকার কোর্টে (আদালত) শুনানির সময় তা বেরিয়ে আসে। তারা জয়কে হত্যা করার জন্য কিডন্যাপ করতে চেয়েছিল। কাজেই আপনারা বুঝতে পারেন যে, এরা এখানেই নয়…। তারা শুধু ৭৫-এর ১৫ আগস্টে হত্যা করে থেমে থাকেনি, তাদের চক্রান্ত অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা আমেরিকায় খুঁজতে গেল আমাদের দুর্নীতি, আর ধরা পড়ল নিজেরাই। যখন তারা জয়কে কিডন্যাপ করার পরিকল্পনা নিল তখন তাদের ওই দুই নেতার নাম চলে এলো শুনানিতে। এগুলো যারা করে তারা অন্যায়কে প্রশ্রয় দিতে পারে, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, লুটপাট করতে পারে। রাজাকার-আলবদরদের পুরস্কৃত করতে পারে, করতে পারে যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী। যারা যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানায় আর জাতির পিতার খুনিদের চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করে, অবৈধ ভোট করে তাদের পার্লামেন্টে নিয়ে যায়, আজ তারা অনেক কথা বলে। তাদের সময় তো সন্ত্রাস-দুর্নীতি, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা- অনেক কিছুই ঘটেছে। তাদের মুখে বড় বড় কথা মানায় না। বিএনপির এ স্বভাব কোনোদিন যাবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার কারণে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড মানুষের চোখে পড়ছে। এ ১০ বছর দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় আছে, এ কারণে দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি নির্মল গুহের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
সম্মেলনে সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী মেজবাউল হক সাচ্ছু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সহ-সভাপতি মতিউর রহমান মতি, শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দফতর সম্পাদক সালেহ মো. টুটুল।
সম্মেলনের শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সম্মেলনস্থলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত হলে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা নির্মল রঞ্জন গুহ ও গাজী মেজবাউল হক সাচ্ছু। এরপর পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের শুভ উদ্বোধন করা হয়। উত্তরীয় পরিয়ে দেয়া হয় প্রধানমন্ত্রীকে। পরিবেশন করা হয় দলীয় সংগীত ও নৃত্যানুষ্ঠান। শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা এতে অংশ নেন। প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে সংগীত পরিবেশন করেন।