নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষাক্ষেত্রে অনন্য অবদানের জন্য ‘খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা স্বর্ণপদক-২০১৮’ পেয়েছেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। আজ শনিবার আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম এইচ খান মিলনায়তনে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন তার হাতে এ পদক তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের প্রেসিডেন্ট কাজী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, ড. এস এম খলিলুর রহমান ও অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন জানায়, সমাজের বিভিন্ন খাতে কমর্রত জাতীয় পর্যায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত একটি জুরি বোর্ড সর্বসম্মতিক্রমে ড. আনিসুজ্জামানকে এ পদক প্রদানে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের হাতে মনোগ্রামসংবলিত একটি ক্রেস্ট এবং একটি সনদসহ অন্যান্য উপহার তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘স্রষ্টার এবাদত ও সৃষ্টির সেবা’ এ লক্ষ্য নিয়ে খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ মিশন জনসেবামূলক কাজ তথা দরিদ্র ও সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সার্বিক কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জীবিকা, মানবাধিকার এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে এ মিশন।
তিনি বলেন, শিক্ষাবিদ ও জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান জীবন্ত কিংবদন্তি। এ প্রতিভাবান ব্যক্তিত্ব ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখেন। ড. আনিসুজ্জামানের জ্ঞানগর্ভ ও অভিজ্ঞতালব্ধ গবেষণা, মৌলিক প্রবন্ধ, স্মৃতিকথা, সম্পাদিত বহু গ্রন্থ ও বিভিন্ন সাহিত্যকর্ম দেশ ও দেশের বাইরে সর্বজনবিদিত। তার পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতা দেশ ও দেশের বাইরে পরিব্যাপ্ত। তিনি আইনজ্ঞ না হয়েও আইন পেশার সমৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
পদক প্রদানের প্রতিক্রিয়ায় ড. আনিসুজ্জামান আহ্ছানিয়া মিশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমি খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লার স্নেহের পরশ পেয়েছি। তিনি তাদের সময়ের ছাত্রজীবন ও শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে বর্তমান অবস্থা তুলনা করেন।
ড. আনিসুজ্জামান বলেন, আমাদের সময়ে ছাত্রদের ব্যক্তিগত সুবিধা-অসুবিধায় শিক্ষকরা নজর রাখতেন। আজ ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক যান্ত্রিক সম্পর্কে পরিণত হয়েছে। ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক অত্যন্ত মূল্যবান। এ সম্পর্ক ছাত্রের মেধা বিকাশে সহায়তা করে।
উল্লেখ্য, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন উপমহাদেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজসংস্কারক, তৎকালীন জনশিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক ও ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের প্রতিষ্ঠাতা খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লার নামে ১৯৮৬ সাল থেকে এ পুরস্কার প্রদান করে আসছে। জাতীয় পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীস্কৃতি হিসেবে এ পর্যন্ত ২৭ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে এ পদক দেয়া হয়েছে।