অনলাইন ডেস্ক: রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় জনগণের জরুরি খাদ্য চাহিদা পূরণে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিকে (ডব্লিউএফপি) বাড়তি ২.৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১৬০ লক্ষ ড্যানিশ ক্রনর) অর্থ সহায়তা দিয়েছে ডেনমার্ক। ঢাকার ডব্লিউএফপি কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশে কর্মরত ডেনমার্কের অ্যাম্বাসেডর বলেন, “এই মানবিক সঙ্কটের সময় উদারতার জন্য ডেনমার্ক বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে। ডেনমার্ক এটাও উপলব্ধি করেছে যে, স্থানীয় জনগণ ভীষণ চাপের মুখে রয়েছে। আমরা এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, বাংলাদেশ সরকার, রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগণের প্রতি ডেনমার্ক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
তিনি আরও বলেন, “ডব্লিউএফপি এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে বিরুদ্ধ পরিবেশে যেসব উদ্যোগের মাধ্যমে অপরিহার্য খাদ্য সহায়তা প্রদান করছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়”।
বাংলাদেশে ডব্লিউএফপির প্রতিনিধি রিচার্ড রেগান বলেন, “কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া প্রায় ৯ লাখ শরণার্থীর মধ্যে আশি ভাগ সম্পূর্ণভাবে ডব্লিউএফপির খাদ্য সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল। ড্যানিশ সরকারের এই সময়োপযোগী অনুদান অরক্ষিত শিশু ও নারীদের খাদ্য যোগানে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এই অনুদান জীবিকাসংক্রান্ত প্রকল্পের দ্বারা স্থানীয় জনগণের জীবিকা অর্জনের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখবে; এই প্রকল্পের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করা হবে, অর্থাৎ নগদ অর্থ ও অর্থনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে যেন তারা নিজের ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে পারে সেজন্য তাদের প্রশিক্ষণও প্রদান করা হবে।
২০১৭ সালের আগস্টে যখন সহিংসতা এড়াতে সাত লাখ পয়তাল্লিশ হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসে, সেই থেকে কক্সবাজারকে কেন্দ্র করে ডব্লিউএফপি এশিয়ার ভিতরে অন্যতম বৃহৎ একটি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। নতুন শরণার্থীরা আগে থেকেই কক্সবাজারে বসবাসরত দুই লাখ শরণার্থীর সাথে মিলিত হয়ে একসাথে বসবাস করছে।
২০১৭ সালের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ড্যানিশ সরকারের মোট অনুদানের পরিমাণ ৩৩৮ মিলিয়ন ড্যানিশ ক্রনর (প্রায় ৫২ মিলিয়ন ইউএস ডলার) এবং রোহিঙ্গাদের এই মানবিক সঙ্কটের সময় যারা সর্বপ্রথম ডব্লিউএফপিকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেছে ড্যানিশ সরকার তাদের মধ্যে অন্যতম।
ডেনমার্কের এই গুরুত্বপূর্ণ অনুদানের মাধ্যমে ডব্লিউএফপি অপুষ্টিজনিত জরুরি চিকিৎসা ও প্রতিরোধমূলক নানাধরনের প্রকল্প, জীবনরক্ষাকারী খাদ্য সহযোগিতা এবং ক্যাম্পের স্কুলে শিশুদের স্থানীয়ভাবে প্রস্তুতকৃত বিশেষ পুষ্টিসম্পন্ন বিস্কুট প্রদান ইত্যাদি নানাধরনের জরুরি কর্মকান্ড পরিচালনায় সক্ষম হয়েছে।
জরুরি অবস্থায় জীবনরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে জীবনধারার পরিবর্তনে কাজ করে থাকে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। ডব্লিউএফপি বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশে কর্মরত রয়েছে। সেসব দেশে সংঘাত ও দুর্যোগ আক্রান্ত মানুষকে খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি তাদের উন্নত ভবিষ্যৎ নির্মাণে কাজ করে এই সংস্থা।