বিনোদন প্রতিবেদক: গাঙ্গুয়ার ৪৩ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ার। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে তিনি আট শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন। অতি সম্প্রতি এই অভিনেতা এসেছিলেন এফডিসিতে। ফিল্ম ক্লাবের সদস্য তিনি। এসেছিলেন ভোট দিতে। ভোট দেওয়া শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মেতে ওঠেন গাঙ্গুয়া।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা গাঙ্গুয়া। আসল নাম পারভেজ চৌধুরী। এক সময় ফাইট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছেন। অভিনয়ে আসার পর প্রয়াত অ্যাকশন হিরো জসিম তার নাম দিয়েছিলেন গাঙ্গুয়া। সেই নামেই খ্যাতি পান। পর্দায় তার উপস্থিতি ভয়ংকর মানুষ হিসেবে। মন্দ কাজকর্ম করে বেড়ান। ভরাট গলায় খল চরিত্রে তিনি এক অনবদ্য অভিনেতা।
অভিনেতা জানান, বর্তমানে তিনি বেকার। বহুদিন ধরে হাতে কোনো কাজ নেই। কেউ তাকে ডাকে না এখন সিনেমার জন্য। সংসার চালাতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্টেজ শো করে বেড়ান।
তার কথায়, ‘৪৩ বছর ধরে সিনেমার সঙ্গে আছি। আট শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছি। কিন্তু এখন আর সিনেমার সেসব দিন নেই। এক যুগ ধরে শুধু প্রেম ও অ্যাকশন ছবি বানানো হচ্ছে। ফ্যামিলি ড্রামার ছবি হচ্ছে না। আগে প্রচুর ফ্যামিলি ড্রামার ছবি হতো। সেগুলোতে মানুষ নিজেদের খুঁজে পেত। কিন্তু একঘেয়েমি আসছে প্রেমের ছবিতে। তাই মানুষ ছবি দেখছে না।
গাঙ্গুয়ার মতে, ‘হাতের মুঠোয় ইন্টারনেট থাকার কারণে মানুষ সারা বিশ্বের সব কিছু দেখছে, যেটা আগে ছিল না। যার কারণে মানুষ আর এখন হলে গিয়ে ছবি দেখছে না। এর ফলে ছবি নির্মাণ কমিয়ে দিয়েছেন পরিচালক-প্রযোজকরা। যে কটা সিনেমা নির্মিত হচ্ছে সেখানেও ডাক পাই না। অভিজ্ঞতার মূল্যায়ন পেলাম না।’
হতাশার সুরে গাঙ্গুয়া বলেন, ‘প্রায়ই মনে হয় অভিনয় করতে আসার যোগফল শূন্য। আগে আমাদের লেখাপড়া কম ছিল। না বুঝেই যে কোনো কিছু করতাম। শুধু অভিনয় করে জীবনের শেষে এসে এজন্য কষ্ট সইতে হচ্ছে। অবশিষ্ট বলে কিছু নেই।’
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘অভিনয় সেক্টরে পেনশনের ব্যবস্থা নেই। একজন শিল্পী ৫০ বছর অভিনয়ের পর আরও ৩০ বছর বাঁচলে পরের সময়টা তার কষ্টে কাটে। কারণ তার সঞ্চয় থাকে না। তবে আমার কোনো কষ্ট নেই। চারপাশে ভাই বন্ধুরা অনেক কষ্টে আছে। এজন্য মাঝে মধ্যে খুব খারাপ লাগে। এত বছর একটা সেক্টরে কাজ করে সবাই হাহাকার নিয়ে বেঁচে আছে।’