ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও গেন্ডারিয়ায় সাংবাদিকদের মারধর, কুপিয়ে রক্তাক্ত, নির্যাতন ও মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনার রেশ না কাটতেই ফের নির্যাতন-হেনস্তার শিকার হয়েছেন তিন সাংবাদিক। গতকাল বুধবার রাতে ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রথমে বাধার সম্মুখীন হন ও পরে মারধরের শিকার হন তিন সাংবাদিক।
পপুলার ডায়াগনস্টিকের স্টাফের হামলায় আহত হয়েছেন যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার রিয়াজ রায়হান। এছাড়া হেনস্তার শিকার হয়েছেন অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের ফটো সাংবাদিক সাজ্জাদ হোসেন ও দৈনিক ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক আব্দুল গনি।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। লাঞ্ছনাকারী ব্যক্তিরা পপুলারের কর্মচারী বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী এবং ঘটনাস্থলে থাকা সাংবাদিকরা। তবে পপুলার কর্তৃপক্ষের দাবি তাদের কোনো কর্মী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়।
এ ব্যাপারে নির্যাতনের শিকার যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার রিয়াজ রায়হান বলেন, আমরা পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অগ্নিকাণ্ডের খবর সংগ্রহ করছিলাম। ফোনে কথা বলার সময় একজন এসে বলেন, আপনারা ভুল নিউজ দিচ্ছেন কেন? কী ভুল দিচ্ছি জানতে চাইলে ওই ব্যক্তি বলেন, টিভিতে দেখেছি, সত্য খবর দেন। আপনারা খুঁজে বের করেন।
জানতে চাইলে ওই ব্যক্তি নিজেকে পপুলারের স্টাফ বলে পরিচয় দেন। কোনটা মিথ্যে আর কোনটা সত্য জানতে চাইলে তিনি বাগবিতণ্ডা শুরু করেন ও একপর্যায়ে ঘুষি মারেন। অন্য সাংবাদিকরা তাকে আটকালে পপুলারের অন্য স্টাফরা তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। ছাড়িয়ে নেয়ার কিছুক্ষণ পরই পপুলার কর্তৃপক্ষ ওই ব্যক্তিকে চেনে না বলে জানায়।
এছাড়া পপুলার ডায়াগনস্টিকের সামনেই আগুন নিভে যাওয়ার পর ছবি তুলতে সাংবাদিকদের বাধা দেন এক ব্যক্তি। তিনিও নিজেকে পপুলারের স্টাফ পরিচয় দিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের ফটোসাংবাদিক সাজ্জাদ হোসেনকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেন। এরপর চড়াও হন ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক আব্দুল গনির ওপর।
লাঞ্ছনার শিকার সাংবাদিক রিয়াজ রায়হান বলেন, পপুলার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে দোষী ব্যক্তিরা যদি তাদের স্টাফ হয় তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ধানমন্ডি থানার ওসি হুমায়ুন কবির বলেন, আমরা জড়িতদের খুঁজে বের করবো। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
এদিকে এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) কার্যনির্বাহী কমিটি। ক্র্যাব সভাপতি আবুল খায়ের ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু এক বিবৃতিতে ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, একজন সাংবাদিক পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে তার ওপর হামলা চালানো অত্যন্ত নিন্দনীয়। বিষয়টি উদ্বেগের, যা আমাদের কাম্য নয়। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।