ক্রীড়া ডেস্ক, সিটিজেন নিউজ: লিগ পর্বে খেলা একমাত্র ম্যাচে ৪ ওভার বোলিং করে ৩৪ রান খরচ করেছিলেন জাহানারা আলম। তাই ফাইনালে তাকে একাদশে সুযোগ দেয়া হবে কিনা তা নিয়েই ছিলো সংশয়। সেসব শঙ্কা কাটিয়ে জাহানারা শুধু খেলেনইনি, রীতিমত আগুনঝরা বোলিংয়ে তাক লাগিয়েছেন উইমেন্স টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জ তথা নারী আইপিএলের ফাইনালে।
তবু ফাইনাল জিতে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি জাহানারার ভেলোসিটি। প্রতিপক্ষ অধিনায়ক হারমানপ্রিত কৌরের অসাধারণ এক ফিফটিতে ম্যাচের একদম শেষ বলে গিয়ে জয় পেয়েছে সুপারনোভা। ম্যাচে বল হাতে ৪ ওভারে মাত্র ২১ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েছেন জাহানারা।
জয়পুরের মানসিংহ স্টেডিয়ামে হওয়া ফাইনাল ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১২১ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল ভেলোসিটি। যা তাড়া করতে নেমে জাহানারার আগুনে বোলিংয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল সুপারনোভা। কিন্তু হারমানপ্রিতের ৩৭ বলে ৫১ রানের ঝড়ো ইনিংসে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে গেছে সুপারনোভা।
১২২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল সুপারনোভা। ছয় ওভারের পাওয়ার প্লে’তে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ৩৩ রান করে তারা। এর মধ্যে ষষ্ঠ ওভার করে মাত্র ১ রান খরচ করেন জাহানারা। প্রথম দশ ওভারে সুপারনোভার সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৫৩ রান।
দশম ওভারের শেষ বল এবং একাদশ ওভারের প্রথম বলে দুই উইকেট তুলে নেন অ্যামেলিয়া কার এবং দেবিকা বৈদ্য। ইনিংসের ১২তম ওভারে দ্বিতীয় স্পেলে বোলিং করতে এসে উইকেট শিকারের উৎসবে যোগ দেন জাহানারাও। সে ওভারের শেষ বলে শার্প ইনসুইংয়ে সরাসরি বোল্ড করে দেন নাতাইল সিভারকে, খরচ করেন মাত্র ৪ রান।
১৪তম ওভারে আবারও আক্রমণে আসেন জাহানারা এবং উইকেটের দেখা পেয়ে যান তৎক্ষণাৎ। উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই মারকুটে ব্যাটসম্যান সোফি ডিভাইনের অফস্টাম্প উড়িয়ে দেন বাংলাদেশি তারকা জাহানারা। সে ওভারে আসে ৩ রান। জাহানারার বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৩-০-৮-২!
শেষ ছয় ওভারে সুপারনোভার জয়ের জন্য বাকি থাকে ৫৮ রান। ঠিক তখনই পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন হারমানপ্রিত। এক্তা বিশ্তের করা ১৫তম এবং জাহানারার করা ১৬তম ওভারে ১৩ করে মোট ২৬ রান নিয়ে নেন তিনি। পরে ১৭তম ওভারে ৭ রান খরচ করে খানিক নিয়ন্ত্রণে আনেন অ্যামেলিয়া কার।
তবে দেবিকা বৈদ্যর করা ১৮তম ওভারে ১৫ রান নিয়ে সমীকরণ সহজ করে নেন হারমানপ্রিত। শেষ দুই ওভারে বাকি থাকে মাত্র ১০ রান। তখন দেখা যায় আরেক উত্তেজনা। ১৯তম ওভারে মাত্র ৩ রান খরচ করেন শিখা পান্ডে। শেষ ওভারে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৬ বলে ৭ রান।
হারমানপ্রিত স্ট্রাইকে থাকায় তা খুব সহজই মনে হচ্ছিলো সুপারনোভার জন্য। কিন্তু শেষ ওভারের শুরুতে জাদু দেখান অ্যামেলিয়া। প্রথম বল ডট দেয়ার পর দ্বিতীয় বলেই সাজঘরে পাঠিয়ে ৪ চার ও ৩ ছক্কার মারে ৫১ রান করা হারমানপ্রিতকে। তবে পরের চার বলে যথাক্রমে ২, ২, ২ ও ৪ মেরে সুপারনোভাকে চ্যাম্পিয়ন করেন রাধা যাদভ।
এর আগে ফাইনাল ম্যাচে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে চূড়ান্ত ব্যর্থ হয় ভেলোসিটির টপঅর্ডার। ইনিংসের প্রথম ৮ ওভারে মাত্র ৩৭ রান তুলতেই সাজঘরে ফিরে প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যান হেলি ম্যাথুজ, শেফালি ভার্মা, ডেনিয়েল ওয়েট, মিথালি রাজ এবং ভেদা কৃষ্ণামুর্থি।
সেখান থেকে ষষ্ঠ উইকেটে ৭১ রানের জুটি গড়েন অ্যামেলিয়া কার এবং সুষমা ভার্মা। ১৯তম ওভারে আউট হওয়ার আগে ৩৮ বলে ৪ চারের মারে ৩৬ রান করেন অ্যামেলিয়া। শেষপর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩২ বলে ৪০ রান করেন সুষমা। ভেলোসিটি পায় ১২১ রানের লড়াকু পুঁজি, যা পরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য যথেষ্ট হয়নি।