নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতির বৃহত্তর স্বার্থে চীন থেকে আর কাউকে বাংলাদেশে আনা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে সরকার। চীনে মহামারি আকার ধারণ করা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় এমনটাই জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) শেখ মুজিবুর রহমান। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সভাপতিত্বে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত বছরের শেষ দিন চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিষয়টি ধরা পড়ে। ছয় সপ্তাহ আগে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটি ইতোমধ্যে নয় শতাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজারের মতো। মৃত ও আক্রান্তদের সংখ্যাগরিষ্ঠই উহান ও এর আশপাশের এলাকার, বেইজিং থেকে যা প্রায় হাজার কিলোমিটার দূরে।
করোনাভাইরাস চীনের যে নগরী থেকে ছড়িয়েছিল সেই উহান থেকে গত ১ ফেব্রুয়ারি ৩১২ বাংলাদেশিকে নিয়ে দেশে আসে বিমানের একটি উড়োজাহাজ। দেশে এ পর্যন্ত যাদের আনা হয়েছে তাদের কারও শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। তবে গতকাল চীনে থাকা এক বাংলাদেশির শরীরে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বলে গণমাধ্যমে খবর আসে।
চীনের বিভিন্ন শহরে অবরুদ্ধ অবস্থায় দিন কাটানো বাংলাদেশিদের অনেকে ফেরার দিন গুণলেও তাদের দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মুজিবুর রহমান বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে ইনফরমালি যতটুকু কথা হয়েছে তাতে আপাতত চীনে আমাদের যারা আছেন, তাদের আনার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে একটা দাবি উঠেছে। পরবর্তীতে বিভিন্নভাবে যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে যে, তারা যে যুক্তিগুলো দিয়েছে যেমন- খাবারের অভাব, সাপোর্ট পাচ্ছেন না, আসলে তাদের খাবার-দাবারের কোনো অভাব নেই। বরং তাদের সব সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। তাই এ মুহূর্তে তাদের আনার কোনো জাস্টিফিকেশন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
গত ১ ফেব্রুয়ারি যে বিমানে করে চীন থেকে ৩১২ বাংলাদেশিকে দেশে আনা হয়েছে সেই পাইলটদের অন্য দেশ ঢুকতে দিতে না চাওয়ায় বিপাকে পড়েছে বিমান।
গতকাল সোমবার প্রেস ব্রিফিংয়ে এই বিষয়টি নিয়েও কথা বলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে যে চ্যালেঞ্জ- যে বিশেষ বিমানে নিয়ে আসলাম, সেই বিমান এবং বিমানের ক্রু-পাইলট অন্যদেশ এক্সেপ্ট করছে না। তাই আমাদের এ মুহূর্তে পরবর্তী যে লট সেটা আনার জন্য কোনো তরফ থেকে জাস্টিফিকেশন আসেনি। তার কারণে আপাতত সেটা হচ্ছে না, ফর দ্যা গ্রেটার ইন্টারেস্ট অব দ্য নেশন।’
এর আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় বাংলাদেশ দলকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এই জয় মুজিববর্ষে বাংলাদেশের জন্য সেরা উপহার।
সকালে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে বৈঠকের শুরুতেই বাংলাদেশ দলের পক্ষে শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব উনিশ ক্রিকেট দলের সাফল্যে তাদের অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি বলেন, মুজিববর্ষের প্রাককালে এই বিজয় সমগ্র জাতির জন্য এক বিরাট উপহার।