জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে শহর থেকে গ্রামে। রাজধানীতে এর প্রার্দুভাব সবচেয়ে বেশি। এ কারণে রাজধানীর বেশকিছু এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। এসব এলাকায় বসানো হয়েছে পুলিশি পাহারা।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) মোহাম্মদপুর থানাধীন কিছু এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। ওই এলাকায় সাবেক এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী জিয়াউল হক জিয়ার বাসাও রয়েছে। করোনায় আটজন আক্রান্ত হওয়ার খবরে ওই এলাকায় কাউকে ঢুকতে ও বের হতে দিচ্ছে না পুলিশ।
মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ জানায়, রাজিয়া সুলতানা রোড ছাড়াও কৃষি মার্কেটের সামনে, তাজমহল রোডের ২০ সিরিয়াল রোড, বাবর রোডের কিছু অংশ, আদাবর ও বসিলার পশ্চিম অংশ লকডাউন করা হয়েছে। এসব এলাকায় চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ঘন ঘন মাইকিং করা হচ্ছে। এর আগে আইইডিসিআরের কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে করোনা আক্রান্তদের ভবনসহ পুরো রোড লকডাউনের নির্দেশ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল আলিম ।
একই দিনে পুরান ঢাকায় খাজে দেওয়ান লেনে এক মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি ও এক নারীর শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ায় ওই এলাকার ২০০ ভবন লকডাউন করা হয়েছে।
সোমবার সবুজবাগ থানার নন্দিপাড়া-দক্ষিণগাঁও এলাকার ৭৬টি পরিবারকে লকডাউন করা হয়। সেখানে একই পরিবারের ছয়জনের দেহে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন সবুজবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহুবুব আলম।
এর আগে মিরপুরে এক পরিবারের দুই সদস্যের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এ কারণে এলাকার দুটি বহুতল ভবন ও একটি টিনশেড বাড়ি লকডাউন করে দেয় পুলিশ।
৫ এপ্রিল দুজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় মিরপুর-১ নম্বর ওভারব্রিজের পাশে তানিম গলির দুটি বহুতল ভবন ও একটি টিনশেড বাড়িসহ পুরো এলাকা লকডাউন করা হয়।
৪ এপ্রিল পল্লবী থানার ১১ নম্বর সেকশনের বি ব্লকের একটি বাড়িতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের (৬৮) মৃত্যু হয়। এর পরপরই এলাকাটি লকডাউন করা হয়।
সর্বপ্রথম মিরপুরের টোলারবাগে এই ভাইরাসে একজনের মৃত্যু হওয়ায় পুরো এলাকাটি লকডাউন করে দেয় স্থানীয় প্রশাসন।
এছাড়া, বাসাবো, পুরান ঢাকার শোয়ারিঘাট, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, ধানমন্ডি, যাত্রাবাড়ী, পুরানা পল্টন, শাহ আলী বাগ, উত্তরা, বুয়েট এলাকা, সেন্ট্রাল রোড, ইস্কাটন, গুলশান, গ্রিন রোড, হাজারীবাগ, জিগাতলা, মিরপুর কাজীপাড়া, মিরপুর-১১, লালবাগ, মগবাজার, মহাখালী, নিকুঞ্জ, রামপুরা, শাহবাগ, উর্দু রোড ও ওয়ারীসহ ৫২টি এলাকার মানুষের শরীরে ভাইরাসটির অস্তিত্ব পাওযা যায়।
এদিকে, অনেক জায়গায় লকডাউন ঘোষণা করা হলেও অনেক মানুষ তা মানছেন না। তারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন। এতে এসব এলাকার অন্য লোকরাও ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, লকডাউন করা এলাকাগুলোতে অস্থায়ী ভিত্তিতে ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছে। কেউ যেন বের হতে বা ঢুকতে না পারে, সেজন্য কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশপাশি জনসচেতনতায় মাইকিং করছে পুলিশ। জনসাধারণকে সতর্ক করা হয়েছে। তবে বিশেষ প্রয়োজনে প্রতি পরিবার থেকে একজন বিশেষ পোশাক পরে বাইরে যেতে পারছেন। পাশপাশি পুলিশ তাদের নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র দিয়ে আসছে। এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে হলে ঘরে থাকার বিকল্প নেই।